গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, ‘এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের সম্ভাব্য দিন ঘোষণার মধ্যে এক/এগারোর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে।’
Advertisement
বুধবার (১১ জুন) বেলা ১১টায় ঝিনাইদহের ফ্যামিলি জোন অডিটোরিয়ামে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদ খান বলেন, ‘নির্বাচন সংস্কার কমিশনের নতুন প্রস্তাবে রয়েছে ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে ওইসব আসন ও কেন্দ্রে পুনরায় ভোট হবে। এপ্রিল মাস গরমের মাস। ওই সময় দেশের মানুষ ফসল নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এপ্রিলে নির্বাচন হলে স্বাভাবিকভাবে ভোটার উপস্থিতি কম হবে। এভাবে ৪০ শতাংশের কম ভোট দেখাতে পারলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় রয়ে যাবে। আমরা বলতে চাই দেশে এক/এগারো নতুন করে অ্যাকটিভ করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।’
রাশেদ খান বলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন। ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশে নির্বাচন হতে হবে। কয়েকজন উপদেষ্টার কথা মতো দেশ চালালে জনগণ মেনে নেবে না। রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মতামতের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করতে হবে।’
Advertisement
এপ্রিল মাসে নির্বাচনের সম্ভাব্যতা নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তিনটি দল সংলাপে বলেছিল, তারা রমজানের আগে অথবা এপ্রিলে নির্বাচন চায়। কিন্তু বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদসহ অধিকাংশ দলই ডিসেম্বরে নির্বাচন চেয়েছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধিকাংশ দলের মতামত প্রাধান্য না দিয়ে মাত্র তিনটি দলের আকাঙ্ক্ষা পূরণে এপ্রিলে নির্বাচনের সম্ভাব্য দিন ঘোষণা করেছে।’
রাশেদ খান বলেন, ‘করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের কনসার্ন ম্যাটার। মানবিক করিডোরের নামে দেশের সার্বভৌমত্ব বিলীন হয়, এমন কিছু জনগণ মেনে নেবে না। বুকের রক্ত দিয়ে ছাত্র-জনতা ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিদায় ঘটিয়েছে। প্রয়োজনে করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দরের ইজারাও জনগণ ঠেকাবে। ইজারার নামে বিদেশি কোনো এজেন্সির হাতে আমাদের চট্টগ্রাম বন্দর তুলে দেওয়া যাবে না। এ হঠকারী সিদ্ধান্তগুলো দেশের মানুষ মানবে না।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে সরকার এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত উপদেষ্টারা আমলে না নিয়ে এপ্রিলে নির্বাচনের সম্ভাব্য দিন ঘোষণা করেছেন। কিন্তু এই অন্তর্বর্তী সরকারকে মনে রাখতে হবে, তারা গণঅভ্যুত্থানের সরকার। এ সরকার ব্যর্থ হলে, জাতি তাদের ক্ষমা করবে না। আমরা এ সরকারের সমালোচনা করেছি, উপদেষ্টাদের কাজের সমালোচনা করেছি। আমরা একটি বারের জন্যও প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি। কিন্তু দেশবাসী প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের নাটক দেখেছে।’
তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টাদের পিএস, এপিএসরা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। দুদক উপদেষ্টাদের পিএসের নামে ফাইল খুলেছে। গণমাধ্যমে সবকিছুই এসেছে। আমরা মনে করি, যে উপদেষ্টার পিএস, এপিএস দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন, সেই উপদেষ্টা দিয়ে দেশের কি সংস্কার হবে? তারা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা কীভাবে পূরণ করবে?’
Advertisement
রাশেদ খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পলাতক সন্ত্রাসীরা প্রধান উপদেষ্টাসহ গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের নিয়ে অপপ্রচার ও হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। আমার প্রশ্ন হলো- আওয়ামী লীগের এসব অপরাধী, শেখ পরিবারের সদস্য ও বিতর্কিত নির্বাচনে কথিত এমপিরা কীভাবে দেশ ছেড়ে পালালো? কারা তাদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করল? এ সরকারকে সে হিসাব দিতে হবে। সরকারের উপদেষ্টারা আওয়ামী লীগের পলাতক এমপি-মন্ত্রীদের সম্পদ পাহারা দিচ্ছে।’
মতবিনিময় সভায় গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইকবাল রাজন, পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি রাসেল আহমেদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি রিহান হোসেন রায়হান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শাহজাহান নবীন/আরএইচ/জিকেএস