দিনমজুররা কীভাবে চলবে: মোদিকে প্রশ্ন কংগ্রেসের
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করে দেশজুড়ে তিন সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইতোমধ্যে তা কার্যকর শুরু হয়েছে। কিন্তু এর ফলে দেশটির যে অসংখ্য শ্রমজীবী ও দিনমজুর মানুষের রুটি-রুজি নিয়ে সংকট দেখা দেবে তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার, এমন প্রশ্ন তুলেছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন বিরোধী দল কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা। তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন হল, এই যে ২১ দিন মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারবেন না, সেক্ষেত্রে তাদের খাবারের যোগান আসবে কোথা থেকে? কীভাবেই বা দিন চলবে দেশের হতদরিদ্র মানুষ বা দিনমজুরদের? যারা দিন আনে দিন খায়?’
গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৮টায় দেশে ২১ দিন পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করেন মোদি। তিনি এসময় বলেন, ‘করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে আগামী ২১ দিন কঠিন এক পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে আমাদের যেতে হবে। এসময় কোনোভাবেই ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। আজ মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই পুরো দেশ লকডাউন।’
জাতির উদ্দেশে ভাষণে মোদি আরও বলেন, ‘ভারতকে বাঁচাতে, তার প্রতিটি নাগরিককে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন আপনি, আপনার পরিবার। আগামী ২১ দিন বাড়ির চৌকাঠ পেরোনোর কথা ভুলে যান। আপনাদের বাড়ির দরজার বাইরে লক্ষণরেখা টানা হল। মনে রাখবেন, এর বাইরে পা রাখা মানে করোনার মতো একটি মহামারিকে বাড়িতে ডেকে আনা।’
প্রধানমন্ত্রীর লকডাউনের ঘোষণার পর অনেকে প্রশ্ন তোলেন, ঘরবন্দি থাকলে তো কাজ পাবেন না অনেকে। আর কাজ করতে না গেলে রোজগারও নেই। দেশের অসংখ্য এমন দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষের মুখে খাবারের জোগান দিতে কী ভাবছে নরেন্দ্র মোদি সরকার? কংগ্রেসও ঠিক একই প্রশ্নই তুলেছে।
দলটির মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, ‘শ্রদ্ধেয় মোদিজি, দেশ তো লকডাউন মেনে চলার জন্যে প্রস্তুত। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রুটিরুজির সংকটের সমাধান কীভাবে হবে? গরিব, মজুর, কৃষক, দোকানদারের ২১ দিন কীভাবে কাটবে? ভাইরাসটির এমন বিস্তারের সময় স্বাস্থ্যকর্মীরাই বা কীভাবে সুরক্ষিত থাকবেন? আপনি তো কিছুই বললেন না।’
তিনি বলেন, ‘কোটি কোটি কারখানা শ্রমিক, দিনমজুর, হকার, শ্রমিক এমন অসংখ্য পেশার মানুষের জীবিকা কীভাবে চলবে তা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি আপনি। তারা কীভাবে আগামী ২১ দিন তাদের পরিবারকে কি খাওয়াবেন এ কথা কি একবারও ভেবেছেন আপনি?’
তার প্রশ্ন, ‘করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষিত রাখা দরকার। তবে কেন তাদের জন্য এন-৯৫ মাস্ক, থ্রি প্লাই মাস্ক, হ্যাজম্যাট স্যুট নেই? দেশে মার্চ মাসেই অন্ততপক্ষে সোয়া ৭ লাখ বডি স্যুট, ৬০ লাখ এন-৯৫ মাস্ক, এক কোটি থ্রি প্লাই মাস্কের প্রয়োজন। আমরা এসব কখন পাবো?’
এসএ