দিল্লিতে থাকার সামর্থ্য নেই, বাড়ি ফিরতে চান তারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:০৬ এএম, ২৯ মার্চ ২০২০

করোনার কারণে দেশজুড়ে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। তার জেরে গোটা দেশ অবরুদ্ধ, রাস্তাঘাট খাঁ খাঁ করছে। এমন সময়ে দেশটির রাজধানী দিল্লির বাসস্ট্যান্ডে সমবেত শ্রমিকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। তল্পিতল্পা কাঁধে তিন কিলোমিটার লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে প্রহর গুনতে দেখা গেছে হাজার হাজার মানুষকে।

কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার ও ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভি জানিয়েছে, দেশজুড়ে লকাডাউন। কাজ নেই। খাবারসহ নিত্যনতুন সংকটে পড়েছে বিভিন্ন প্রদেশ থেকে রাজধানীতে কাজের খোঁজে আসা মানুষজন। এবার তারা বাড়ি ফিরতে চান। সবার চোখেমুখে উদ্বেগ-শঙ্কা, বাড়ি পৌঁছাতে পারবে কিনা। কিন্তু শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাদের বাড়ি ফেরার কোনো ব্যবস্থা হয়নি। অনেককে হাঁটা পথে যাত্রা বাড়ির পথে যাত্রা করতে দেখা গেছে

শনিবার সকাল থেকেই রাত পর্যন্ত দিল্লির আনন্দ বিহার বাস টার্মিনালের সর্বত্র এমন দৃশ্য দেখা যায়। লকডাউনের কারণে চার দিনে কার্যত স্তব্ধ নয়াদিল্লি। এমন পরিস্থিতিতে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে রাজধানীকে কাজ করতে আসা এসব মানুষের। কাজ তো বন্ধ, দুবেলা খাবার জোগাড় করাও কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের জন্য। তাইতো বাড়ি ফেরা ছাড়া তাদের অন্য কোনো পথ বাকি নেই আর।

তবে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে টার্মিনালে ভিড় করলেও বাড়ি ফেরার পথ বন্ধ। ট্রেন বন্ধ হয়েছে অনেক আগেই। চলছে হাতে গোনা ‌‘প্রয়োজনীয়’ কিছু বাস। তার ভরসাতেই সকাল থেকে টার্মিনাসে জমায়েত হতে থাকেন হাজারে হাজারে মানুষ। সন্তান কোলে তীর্থের কাকের মতো বসে আছেন অসংখ্য নারী। তাদের কেউ যাবেন উত্তরপ্রদেশ, কেউ মধ্যপ্রদেশ আবার কেউবা বিহারের বাসিন্দা।

শনিবার টার্মিনালে ছিল মাত্র ১৫টি বাস। প্রতিটিতে জুলুম করে ৭০ থেকে ৭৫ জন বসতে পারেন। সরকারের পক্ষ থেকে এক আসনে একজন যাত্রী বসানোর নির্দেশ থাকলেও ঠেলাঠেলি করে ১২৫ থেকে দেড়শ যাত্রী উঠে যাচ্ছেন বাসগুলোতে। কিন্তু হাজার হাজার মানুষের জন্য তা ছিল অপ্রতুল। এমন পরিস্থিতিতে অনেকে টার্মিনালেই বসে আছেন বাসের অপেক্ষায়।

দিল্লিতে হেল্পারের কাজ করা ২১ বছর বয়সী অজয় বলেন, ‘আমি একটি পরিবহন সংস্থায় হেল্পারের কাজ করি। জমানো টাকা বলতে কিছুই নেই। দিল্লিতে এমন অবস্থায় থাকা সম্ভব না। ঘরভাড়াও দিতে পারব না। তাই গ্রামে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা কামতা প্রসাদ বলেন, ‘দিনমজুরের কাজ করি। সরকার লকডাউনের ঘোষণার পরই কাজ চলে গেল। টাকাপয়সা ছাড়া আগামী ১৮ দিন দিল্লিতে কীভাবে থাকবো। এখানে থাকা সম্ভব নয়। অনেক কষ্টে ১০০ টাকা জমিয়েছিলাম। ওই টাকা নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।’

এসএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।