ডব্লিউএইচও’র সতর্কতা সত্ত্বেও মিশ্র টিকা ব্যবহার করছে যেসব দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৫২ পিএম, ০৩ আগস্ট ২০২১
ফাইল ছবি

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় কার্যকর টিকা ব্যবহারই প্রধান অস্ত্র বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধি ও পর্যাপ্ত টিকা সরবরাহে বিলম্বের কারণে করোনার তাণ্ডব থামাতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সরকারগুলোকে। এ অবস্থায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত ভিন্ন ভিন্ন করোনা টিকার মিশ্র ব্যবহারের পথে হাঁটছে বেশ কয়েকটি দেশ।

যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য (ডব্লিউএইচও) সংস্থা গত ১২ জুলাই সতর্ক করে বলেছে, মিশ্র টিকা ব্যবহারে শরীরে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে সে সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। একারণে এধরনের উদ্যোগে নতুন ঝুঁকি তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। তবে ডব্লিউএইচও’র হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও একাধিক দেশ এখনো নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড়।

দেখে নেয়া যাক কোন কোন দেশ করোনার মিশ্র টিকা ব্যবহারের পক্ষে-

কম্বোডিয়া
কম্বোডিয়ান প্রধানমন্ত্রী হুন সেন গত ১ আগস্ট ঘোষণা দিয়েছেন, দেশটিতে আগে সিনোফার্ম অথবা সিনোভ্যাকের তৈরি করোনা টিকার দুই ডোজ গ্রহণকারীদের ‘বুস্টার শট’ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হবে। আর আগে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহণকারীদের বুস্টার শট হিসেবে নিতে বলা হবে সিনোভ্যাকের টিকা।

ডেনমার্ক
ডেনমার্কের স্টেট সেরাম ইনস্টিউট (এসএসআই) গত ২ আগস্ট জানিয়েছে, প্রথম ডোজে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা নেয়ার পর ফাইজার অথবা মডার্নার তৈরি টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিলে ‘ভালো সুরক্ষা’ পাওয়া যায়। তাদের গবেষণা বলছে, মিশ্র টিকা গ্রহণের ১৪ দিন পর টিকা না নেয়া ব্যক্তিদের তুলনায় টিকাগ্রহীতাদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৮৮ শতাংশ কমে যায়।

জার্মানি
আগামী সেপ্টেম্বর থেকে বয়স্ক ও দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের বুস্টার শট হিসেবে ফাইজার-বায়োএনটেক অথবা মডার্নার টিকা দেবে জার্মানি। সেক্ষেত্রে ওইসব ব্যক্তি আগে কোন প্রতিষ্ঠানের টিকা নিয়েছিলেন, সেটি গ্রাহ্য করছে না জার্মান কর্তৃপক্ষ।

ইন্দোনেশিয়া
করোনা প্রতিরোধে এযাবৎ চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোভ্যাকের টিকাই বেশি ব্যবহার করেছে ইন্দোনেশিয়া। তবে সময়ের সঙ্গে এর সুরক্ষা ক্ষমতা কমে আসার খবরের পর সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মীদের নতুন করে বুস্টার শট দেয়ার পরিকল্পনা করছে দেশটি। এর জন্য ঠিক কোন প্রতিষ্ঠানের টিকা ব্যবহার করা হবে সেটি পরিষ্কার নয়। তবে, অনুমোদিত যেকোনো টিকা বুস্টার শট হিসেবে দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইন্দোনেশীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

রাশিয়া
রাশিয়ার প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ তহবিল (আরডিআইএফ) গত ৩০ জুলাই জানিয়েছে, স্পুটনিক ভির প্রথম ডোজের পর অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার ট্রায়ালে গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এমনকি মিশ্র টিকা নেয়ার পর স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে কেউ করোনায় আক্রান্তও হননি। এই ট্রায়ালের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

দক্ষিণ কোরিয়া
গত জুলাইয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার এক গবেষণায় দেখা যায়, প্রথম ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ও দ্বিতীয় ডোজ ফাইজারের টিকা দিলে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই ডোজ গ্রহণকারীদের তুলনায় শরীরে ছয়গুণ বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।

গত জুনে একটি ব্রিটিশ গবেষণাতেও দেখা গিয়েছিল , অ্যাস্ট্রাজেনেকার পর ফাইজারের টিকা নিলে শরীরে সবচেয়ে বেশি টি-সেল তৈরি হয়। আর ফাইজারের পর অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিলে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়।

থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ড গত ১২ জুলাই ঘোষণা দেয় , উচ্চতর সুরক্ষার জন্য তারা সিনোভ্যাক টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারীদের দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা দেবে। বিশ্বের মধ্যে এটিই ছিল চীনা টিকার সঙ্গে পশ্চিমা টিকা মিশ্র ব্যবহারের প্রথম ঘোষণা।

ভিয়েতনাম
ভিয়েতনাম গত ১৩ জুলাই বলেছে, তারা প্রথম ডোজে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা গ্রহণকারীদের দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি করোনা টিকা নেয়ার প্রস্তাব দেবে।

সূত্র: রয়টার্স

কেএএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।