সিনোভ্যাক-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার মিশ্র ব্যবহার করবে থাইল্যান্ড
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী ক্ষমতা বাড়াতে সিনোভ্যাক এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার মিশ্র ডোজ ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে থাইল্যান্ড। সেক্ষেত্রে এটিই হতে চলেছে বিশ্বে প্রথম কোনো চীনা টিকা ও পশ্চিমা টিকার সংমিশ্রণ ব্যবহারের ঘটনা।
সোমবার থাই স্বাস্থ্যমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে সুরক্ষা বৃদ্ধি এবং উচ্চমাত্রার ইমিউনিটি তৈরির লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, মিশ্র টিকা ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথমে সিনোভ্যাকের ডোজ এবং এর তিন বা চার সপ্তাহ পরে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ডোজ দেয়া হবে।
সিনোভ্যাক ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার সংমিশ্রণ ব্যবহারের ফলাফল কেমন হতে পারে সে বিষয়ে কোনো গবেষণার তথ্য এখনো জানা নেই। তবে করোনারোধী ক্ষমতা বাড়াতে বেশ কিছু দেশ ইতোমধ্যে ভিন্ন ভিন্ন টিকার মিশ্র ডোজ ব্যবহার বা বুস্টার শট হিসেবে তৃতীয় ডোজ ব্যবহার শুরু করেছে।
থাইল্যান্ডের এই ঘোষণার মাত্র একদিন আগেই দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, তাদের প্রায় পৌনে সাত লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ৬১৮ জন মেডিক্যাল কর্মী দুই ডোজ সিনোভ্যাক টিকা নেয়ার পরেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে এক নার্স মারাও গেছেন। প্রতিবেশী দেশ ইন্দোনেশিয়াতেও সিনোভ্যাক টিকা গ্রহণকারী মেডিক্যাল কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ অবস্থায় সিনোভ্যাকের টিকা গ্রহণকারী সম্মুখসারির কর্মীদের এমআরএনএ টিকার বুস্টার ডোজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে থাই কর্তৃপক্ষ। একই চিন্তা ইন্দোনেশিয়ারও।
এদিকে, থাইল্যান্ডে ৭০০ মেডিক্যাল কর্মীর ওপর পরিচালিত একটি প্রাথমিক গবেষণা ইঙ্গিত দিয়েছে, সিনোভ্যাক টিকার দুই ডোজ নেয়ার পর প্রথম ৬০ দিন শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ দেখা যায়। তবে এরপর থেকেই ধীরে ধীরে তা কমতে থাকে এবং প্রতি ৪০ দিনে অ্যান্টিবডির পরিমাণ প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়।
থাম্মাসাত ইউনিভার্সিটির গবেষক সিরা নানথাপিসাল বলেন, আমাদের গবেষণা অনুসারে, যেসব মেক্যিাল কর্মী সিনোভ্যাকের দুই ডোজ নিয়েছেন, তাদের অবশ্যই বুস্টার শট নেয়া উচিত। সেটি অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা ফাইজার যে কারো টিকা হতে পারে।
তবে এ গবেষণার বিস্তারিত ফলাফল এখনো প্রকাশ করা হয়নি। থাইল্যান্ডের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য সাড়া দেয়নি সিনোভ্যাক কর্তৃপক্ষ। তবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা প্রতিনিধি বলেছেন, টিকাদান নীতি কেমন হবে সেটি দেশগুলোর নিজস্ব সিদ্ধান্ত।
সূত্র: রয়টার্স
কেএএ/এমএস