কোভিড পলিসির কারণে দেশ ছাড়তে চায় চীনা মধ্যবিত্তরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩৭ পিএম, ১৫ জুন ২০২২

 

অ্যালান লি, চীনে তার পরিবারের জন্য আর কোনো ভবিষ্যত দেখতে পাচ্ছেন না। সরকারের কঠোর কোভিড পলিসির কারণে চরম বিপদে পড়েছেন তিনি। ব্যবসায় ধস, সন্তানের পড়ালেখা আর করোনা বিধিনিষেধের নামে হয়রানি থেকে বাঁচতে দেশ ছেড়ে বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশে চলে যেতে চান অ্যালান লি। তার মতো আরও অনেকেই, বিশেষ করে যারা মধ্যবিত্তের সারিতে বসবাস করেন তারা দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক।

দেশটির সাংহাই প্রদেশে করোনার প্রকোপ আবারও বেড়ে যাওয়ায় কয়েক মাস ধরে জারি রয়েছে লকডাউন। অ্যালান লি লকডাউনের পরে স্বাভাবিক অবস্থায় সবকিছু ফিরে আসার আশা ছেড়ে দিয়েছেন এবং এখন তার ফার্ম বন্ধ করে হাঙ্গেরিতে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। যেখানে তিনি আরও ভালো থাকার আশা করছেন এবং একই সঙ্গে তার ১৩ বছর বয়সী ছেলে একটি আন্তর্জাতিক স্কুলে পড়াশোনা করতে পারবে।

নিজের নাম গোপন রাখার শর্তে তিনি এএফপিকে বলেন, ‘এ বছর আমাদের ক্ষতির অর্থ হলো যে আমাদের অবস্থাও শেষ।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সঞ্চয় ব্যবহার করে চারশ জন কর্মীকে (লকডাউনের সময়) বেতন দিচ্ছি। এই শীতে আবার যদি এটি হয়?’

সাংহাইয়ের দীর্ঘ লকডাউন সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। খাদ্য সংকটের কারণে প্রতিবাদও করছেন এখানকার মানুষ। জীবিকা ও জীবনযাপনের পরিস্থিতি মুখ থুবড়ে পড়ায় এখন নিজ দেশ ছেড়ে অন্যত্র যেতেও তাদের আর দ্বিধা থাকছে না।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পরীক্ষা সবই বন্ধ। আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ভর্তির আবেদন করা বন্ধ। অ্যালান লি হতাশ যে তার ছেলের ব্যয়বহুল দ্বিভাষিক শিক্ষার বেশিরভাগই দুই বছর ধরে অনলাইনে হয়েছে। এ ছাড়া বেইজিং পাঠ্যক্রমের ওপর নজরদারি যেভাবে কঠোর হচ্ছে সে সম্পর্কেও তিনি উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, এটা অবশ্যই আমাদের শিশুদের জন্য বড় অপচয়।

china2

অ্যালান লি একটি ইউরোপীয় বিনিয়োগ প্রকল্পের সুবিধা নিতে সক্ষম হয়েছেন যা তাকে এবং তার পরিবারকে বুদাপেস্টে বসবাসের অনুমতি দেয়। তার মতো অনেকেই জানেন, তাদের সব সম্পদ বিক্রি করলে কোনো রকমে ইউরোপের কোনো দেশে মাথা গোজার ঠাঁই হবে।

বেইজিংভিত্তিক অভিবাসন পরামর্শদাতা গুও শিজে এএফপিকে বলেছেন যে তার কোম্পানিতে গত মার্চ থেকে বহু মানুষ খোঁজ নিচ্ছেন। যার মধ্যে সাংহাই ক্লায়েন্টদের সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, এমনকি লকডাউন কিছুটা শিথিল হলেও আবেদনের অনুরোধ দ্বিগুণেরও বেশি।

করোনা ঝুঁকির কারণে দেশটি অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়ানো কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। ২০২১ সালের প্রথমার্ধে, অভিবাসন কর্তৃপক্ষ ২০১৯ সালের মতো পাসপোর্টের মাত্র দুই শতাংশ ইস্যু করেছে।

জার্মানিতে অভিবাসী একজন চীনা নারী বলেন, তিনি চীনা নাগরিকদের কাছ থেকে কয়েকডজন বার্তা পেয়েছেন, যারা পালানোর টিপস খুঁজছেন।

সূত্র: এএফপি, এনডিটিভি

এসএনআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।