নাসার নতুন রকেটে অর্থের বড় অপচয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৪৬ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২২

অবশেষে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার শাটল প্রোগ্রামের কাজ শেষ হতে যাচ্ছে। সোমবার (২৯ আগস্ট) প্রথমবারের মতো নাসার নতুন-আধুনিক মহাকাশযান স্পেস লঞ্চ সিস্টেমের (এসএলএস) যাত্রা শুরুর হচ্ছে। স্পেস লঞ্চ সিস্টেম হলো সংস্থাটির আর্টেমিস প্রোগ্রামের প্রথম ধাপ। এর মূল লক্ষ্য হলো মানুষকে চাঁদে ও মঙ্গলে নিয়ে যাওয়া। এসএলএস হলো স্পেস শাটলের উত্তরসূরি ও কিংবদন্তি স্যাটার্ন ভার্সেস রকেটের উত্তরাধিকারী, যা অ্যাপোলো মহাকাশচারীদের চাঁদে নিয়ে গিয়েছিল।

দ্যা ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, তবে নাসার এ প্রোগ্রামটি একটি বড় অপচয় ও অপ্রয়োজনীয়। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে এ প্রকল্পের ধারণা ও বাস্তবায়ন। যদিও এ জন্য নাসার বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের দোষ দেওয়া উচিত নয়। মার্কিন কংগ্রেসই মূলত দায়ী।

স্পেস শাটল প্রোগ্রামটি ২০০৪ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বাতিল করেন। তবে এর পরের বছরই নক্ষত্র প্রোগ্রাম হাতে নেওয়ার ঘোষণা দেয় নাসা। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন সম্পূর্ণ করা ও ২০২০ সালের মধ্যে চাঁদে ও তার পরে কিছু সময়ে মঙ্গল গ্রহে মানুষকে ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়। কিন্তু ২০১০ সালের মধ্যে নক্ষত্রপুঞ্জ প্রোগ্রামের খরচ এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

তবে প্রোগ্রামের উন্নয়নের জন্য চুক্তিগুলো বিভিন্ন মহাকাশ সংস্থার পাশাপাশি কিছু নাসা ইনস্টিটিউটের কাছেও দেওয়া হয়। নাসার সাবেক কর্মকর্তা লরি গার্ভার যাকে স্থিতাবস্থার নিরলস গতি বলে অভিহিত করেন। কিন্তু ২০১০ সালে এসে এসএলএস প্রোগ্রামটি তৈরি করা হয়।

নাসার এ রকেট প্রোগ্রামটির জন্য গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রের করদাতাদের প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। একই সময়ে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপক উত্থান হয়েছে। যেমন ইলন মাস্কের স্পেস এক্স।

প্রতিষ্ঠানটি দেখিয়েছে প্রতি উৎক্ষেপণে পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেট প্রায় ৫০ মিলিয় ডলারে তৈরি করা সম্ভব, যা মহাকাশচারী ও কার্গোকে মহাকাশে পাঠাতে সক্ষম।

অন্যদিকে এসএলএস প্রোগ্রামের এ ক্ষেত্রে খরচ হতে পারে দুই বিলিয়ন ডলার। তাছাড়া আগামী ছয় মাসের মধ্যে স্পেসএক্স স্টারশিপকে কক্ষপথে পাঠাবে। ভারি-উত্তোলনকারী যানটি মহাকাশে এসএলএসের মতো একই ধরনের পেলোড বহন করতে সক্ষম হবে। মাস্ক মনে করেন এ ক্ষেত্রে প্রতি উৎক্ষেপণে মাত্র কয়েক মিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে। মহাকাশ দৌড়ে জেফ বেজোসের ব্লু অরিজিন ও ইলন মাস্কের স্পেস এক্সের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, যা নাসার প্রোগ্রামে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

পোর্ক ব্যারেল ভালো রাজনীতি হতে পারে, কিন্তু তারা প্রযুক্তির অগ্রগতির জন্য খারাপ উপায়। কংগ্রেস যদি মহাকাশ বিজ্ঞানের বিষয়ে চিন্তা করতো, তাহলে রকেট প্রোগ্রামটি বাতিল করতো। নাসা আর্টেমিস প্রোগ্রামের জন্য মিশন আর্কিটেকচার ও প্রয়োজনে পরিবহনে মনোযোগ দিতে পারতো। ২০১৯ সালে নাসা প্রশাসক জিম ব্রাইডেনস্টাইন এ ধারণাটি দেন। তিনি আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে বেসরকারি রকেটগুলো এসএলএসের চেয়ে তাড়াতাড়ি আর্টেমিসকে চাঁদে নিয়ে যেতে পারতো।

এমএসএম/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।