শিল্পচর্চার পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ মানুষের মঙ্গলেও কাজ করেছেন


প্রকাশিত: ০৩:০৪ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

অসাধারণ সাহিত্য ও শিল্পচর্চার পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাধারণ মানুষের মঙ্গলের জন্য তার সারা জীবন উৎসর্গ করেছেন। একদিকে তাকে নিজ ভাষার সাহিত্যের শ্রীবৃদ্ধি সাধন করতে হয়েছে, অন্যদিকে নিজ ভূখণ্ডের প্রান্তিক মানুষের জীবনমান উন্নয়নের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হয়েছে।

রোববার বিকেলে বইমেলার মূলমঞ্চে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তাদের মুখে উঠে আসে এসব কথা।  

‘বাংলাদেশে রবীন্দ্রচর্চা : অতীত থেকে বর্তমান’ শীর্ষক আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বাংলা একাডেমি। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ। আলোচনায় অংশ নেন- বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, অধ্যাপক করুণাময় গোস্বামী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক গোলাম মুরশিদ।

বক্তারা বলেন, পাকিস্তানি শাসকদের বিদ্বিষ্ট ভূমিকার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রনাথকে ১৯৬১ সালে তার জন্মশতবর্ষের সময়ে বাংলার মানুষ যেভাবে স্মরণ করেছে ঠিক তেমনি এখানকার কবি-লেখক-বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতিকর্মীরা জাতীয় জাগরণ ও মুক্তির সংগ্রামী সূত্র হিসেবে রবীন্দ্রনাথকে একান্ত আপন
করে নিয়েছেন।

প্রাবন্ধিক বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী কালে যে প্রজন্ম রবীন্দ্রচর্চায় অগ্রগামী হলেন, তাদের কর্মকাণ্ড অনেক ইতিবাচক বৈশিষ্ট্যও পরিলক্ষিত হলো। অকারণ মুগ্ধতা ক্রমে দূরীভূত হলো, দেখা দিল রবীন্দ্র-অধ্যয়নের সুস্থ পরিমণ্ডল। বিগত পঁয়তাল্লিশ বছরের প্রজন্ম রবীন্দ্রনাথকে যেভাবে দেখেছে, যেভাবে মূল্যায়ন করেছে, তার মৌল প্রবণতাগুলোর মধ্যে রয়েছে- সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিতে রবীন্দ্রবর্জনের প্রয়াস দূরীভূত হলো। এতকাল যারা রবীন্দ্রবর্জনের প্রবক্তা ছিলেন, অকস্মাৎ তারাই পরিণত হলেন প্রবল রবীন্দ্র-অনুরাগীতে।
অকারণ তর্ক-বিতর্ক, আবেগ-উচ্ছ্বাস পরিত্যাগ করে একালের প্রজন্ম রবীন্দ্রসৃষ্টি-সমুদ্রে অবগাহন করতে চাইলেন, তারা উদ্যোগী হলেন রবীন্দ্র-সৃষ্টিকর্মের নান্দনিক ব্যাখ্যা নির্মাণে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক গোলাম মুরশিদ বলেন, পাকিস্তানি আমল থেকে রবীন্দ্রনাথকে বর্জন ও বিকৃতির নানা অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। তবে এদেশের সাধারণ মানুষ তাদের ভালোবাসায় রবীন্দ্রনাথকে যেভাবে নিজের করে নিয়েছে তাতে তিনি এ ভূখণ্ডে বারবার আবিষ্কৃত হয়েছেন নতুন করে, সম্মুখযাত্রার আলোকবর্তিকা হয়ে।

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী সৈয়দ হাসান ইমাম, সায়েরা হাবীব এবং এ. এস. এম. সামিউল ইসলাম। নৃত্য পরিবেশন করেন ওয়ার্দা রিহাব ও তাঁর দল। এছাড়াও সংগীত পরিবেশন করেন- কণ্ঠশিল্পী খুরশিদ আলম, মাসুদা নার্গিস আনাম, নাসিমা শাহীন ফ্যান্সি, শরণ বড়ুয়া, স্বর্ণময়ী মন্ডল, দেবাশীষ বসাক, নাহিদ নাজিয়া এবং সাহিনা। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন জোসেফ ম্যান্ডেস (তবলা), হাসান আলী (বাঁশি), দীপঙ্কর রায় (প্যাড), দৌলতুর রহমান (কী-বোর্ড), এনামুল হক টিঙ্কু (গীটার) এবং আলাউদ্দিন মিঞা (বেহালা)।

মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ৯৩টি।

এমএম/এমএইচ/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।