‘বাবাকে গুলি করে হত্যা করে সাখাওয়াত’
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় পার্টির নেতা ও যশোর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের দ্বিতীয় সাক্ষী ফজলুর রহমান গাজী (৬৩) তার জবানবন্দি পেশ করেছেন।
জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, ‘একাত্তরে বাবাকে নির্যাতন করার পরে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় আমি রাজাকার সাখাওয়াতসহ সব আসামিকেই চিনে ফেলি।’
সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। পরে মামলায় পরবর্তী সাক্ষীর জবানবন্দি পেশ করার জন্য আগামীকাল বুধবার দিন নির্ধারণ করা হয়। মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
সাক্ষীকে জবানবন্দিতে সহযোগিতা করেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী আব্দুস শুক্কুর খান এবং আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
যশোরের চিংড়া গ্রামের ফজলুর রহমান তার জবানবন্দিতে বলেন, ‘একাত্তরে আমার বাবা চাঁদতুল্লা গাজীকে রাজাকাররা ধরে নিয়ে যায়। এরপর নির্যাতন করে সাখাওয়াত বাবাকে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় আমি রাজাকর সাখাওয়াতসহ সকল আসামিকে চিনে ফেলি। একই কক্ষে বাবার সাথে আটক নুর উদ্দিন মোড়লকেও আমি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি।’
সাক্ষী আরো বলেন, বাবাকে যেখানে নির্যাতন করা হয় এই আশুরাকে সেখানেই আটকে রাখা হয়। পরে লোকমুখে জানতে পারি তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল।
মামলায় সাখাওয়াত হোসেন ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মো. বিল্লাল হোসেন, মো. ইব্রাহিম হোসেন, শেখ মোহাম্মদ মুজিবর রহমান, মো. আব্দুল আজিজ সরদার, মো. আজিজ সরদার, কাজী ওয়াহেদুল ইসলাম, মো. লুৎফর মোড়ল এবং মো. আব্দুল খালেক মোড়ল। গত ৮ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
১৯৯১ সালে জামায়াতের হয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে যশোর-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাখাওয়াত। কিন্তু মেয়াদপূর্তির আগেই জামায়াত ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন তিনি। পরে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি।
আসামিদের মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন সাখাওয়াত হোসেন, মো. বিল্লাল হোসেন ও মো. লুৎফর মোড়ল।
এফএইচ/এনএফ/আরআইপি