বিএনপি নেতার যৌন নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী
ঝালকাঠির নলছিটিতে মেসার্স শুকতাঁরা ব্রিকসের মালিক বিএনপি নেতা কবির হোসেন জোমাদ্দারের বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার ঝালকাঠির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১ এ মামলাটি দায়ের করেন নির্যাতিত ওই গৃহকর্মী।
আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. শফিকুল করিম নলছিটি থানার ওসিকে অভিযোগটি রেকর্ড করার নির্দেশ দেন।
বাদীর আইনজীবী মোজাম্মেল হোসেন জানান, মেসার্স শুকতাঁরা ব্রিকসের মালিক ঝালকাঠি জেলা বিএনপির জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক কবির হোসেন জমাদ্দারের নলছিটির তালতলা গ্রামের প্রতিবেশী এক কৃষকের মেয়েকে ৪ বছর পূর্বে পড়াশুনার সুযোগ করে দেয়ার কথা বলে বাড়িতে নিয়ে যায়। ওই মেয়েকে সে তার বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ দেয়।
বর্তমানে মেয়েটি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে। গত বছরের ২৭ জুলাই রাতে সে ওই বাড়িতে বসে লেখাপড়া করছিল। এসময় কবির জমাদ্দার তাকে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে নিজের কক্ষে নিয়ে যায়। এসময় তাকে ধর্ষণ করে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে কবির জোমাদ্দার।
এ ঘটনায় তার পরিবারের অন্য কারো কাছে না বলার জন্য চাপ দেয় সে। এমনকি কাউকে জানালে তার বাবা মাকে হত্যা কারার হুমকি দেয় কবির জোমাদ্দার।
মামলার বাদী গৃহকর্মী জানায়, এক পর্যায়ে সে অন্তঃসত্ত্বা হলে কবির জোমাদ্দার জোর করে তাঁর গর্ভপাত ঘটায়। বিষয়টি জানাজানি হলে কবির জমাদ্দার তাকে রেজিস্ট্রি না ছাড়াই বিয়ে করার প্রস্তাব তার বাবা মাকে দেয়। কিন্তু তাকে বিয়ে না করেই ফের ধর্ষণ করে। ওই গৃহকর্মী তার মায়ের অসুখ দেখতে বাড়িতে আসে। সেখান থেকে আর কবির জোমাদ্দারের বাড়িতে ফিরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে। এতে কবির জমাদ্দার ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে চুরির মিথ্যা মামলা করেছে বলে গৃহকর্মী দাবি করে। ওই মামলায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি সে আদালতে হাজির হলে বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠায়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি সে জামিনে মুক্ত হয়।
ওই গৃহকর্মীর বাবা অভিযোগ করেন, তার মেয়েকে রেজিস্ট্রি ছাড়াই বিয়ে করে কবির জোমাদ্দার। কিন্তু এখন সে বিয়ের কথা অস্বীকার করছে। উল্টো আমাদের পরিবারের নামে একটি চুরি মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এলাকার কারো কাছে নালিশ করে কোন সুরহা পাচ্ছি না। কারণ তিনি (কবির জোমাদ্দার) পুলিশ ও স্থানীয় গন্যমান্যদের ম্যানেজ করেছেন। তাই বাধ্য হয়ে আমার মেয়ে আদালতে মামলা করেছে।
এ ব্যাপারে কবির হোসেন জোমাদ্দার বলেন, ওই গৃহকর্মী একজন চোর। চুরির ঘটনা ধরা পড়ায় সে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। এলাকার সবাই বিষয়টি জানে। পুলিশও বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছে।
নলছিটি থানার ওসি এস এম মাকসুদুর রহমান বলেন, আদালতের নির্দেশ এখনো আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। নির্দেশনা আসা মাত্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আতিকুর রহমান/এসএইচএস/পিআর