মেয়েকে মেরেছে শুনে ক্লাসে ঢুকে শিশুকে পেটালো অভিভাবক
বিদ্যালয়ে শিশুদের মধ্যে মারামারির জের ধরে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক স্কুলে এসে ক্লাসে ঢুকে অপর এক শিক্ষার্থীকে লাথি মেরে আহত করেছেন।
নড়াইলে সদর উপজেলার দাড়িয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটেছে গত ১০ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হয়েছে অনেক দেরিতে। এদিকে এই ঘটনার পর থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির ছাত্রী মারিয়া সুলতানা একই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র ইসমাইল মোল্যার বিরুদ্ধে তাকে মারার অভিযোগ করে তার বাবাকে। মারিয়া বাড়িতে গিয়ে তাকে মারার কথা বললে পরের দিন মারিয়ার বাবা সুজন বিশ্বাস বিদ্যালয়ে এসে ৫ম শ্রেণির ছাত্র ইসমাইল মোল্যাকে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষিকার সামনে লাথি মারে ও পিটিয়ে আহত করে। পরে তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ইসমাইল মোল্যা দাড়িয়াপুর গ্রামের বিদেশ প্রবাসী আসলাম মোল্যার ছেলে।
এদিকে শিশুদের মধ্যে মারামারির জের ধরে অভিভাবকের এমন আচরণের জন্য পরিবার শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সুষ্ঠু বিচার দাবি করা হয়েছে।
শ্রেণী শিক্ষিকা শ্যামলী নন্দী জানান, মারিয়ার বাবা সুজন বিশ্বাস শ্রেণিকক্ষের মধ্যে ঢুকে সকল শিক্ষার্থীর সামনে ইসমাইলকে লাথি মারে এবং হাত পা ধরে আছাড় মারতে উদ্যত হয়। এই সময় গ্রামের একজন তাকে ধরে ফেলে।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত সুজন বিশ্বাস জানান, তিনি ভুল করেছেন। মেয়েকে মারার কথা শুনে তিনি রাগের মাথায় শিশু ইসমাইলকে মেরেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার সিংহ জানান, তিনি বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে ১৭ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (সার্বিক) নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সিদ্দিকুর রহমান জানান, আমরা উভয়পক্ষকে বিদ্যালয়ে ডেকে তাদের মতামত শুনেছি। পুরো বিষয়টি পর্যালোচনা করে অভিযুক্ত সুজন বিশ্বাস দোষী প্রমাণিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের পক্ষ থেকে বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
হাফিজুল নিলু/এমএএস/আরআইপি