ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সহিংসতা

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দরকার বলিষ্ঠ কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ: জাতিসংঘ দূত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৩৬ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
জেরুজালেমে জাতিসংঘের দূত টর ওয়েনেসল্যান্ড /ছবি: সংগৃহীত

জেরুজালেমে জাতিসংঘের দূত টর ওয়েনেসল্যান্ড বলেন, ইসরায়েল ও অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোর মধ্যে সহিংসতা বাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছেছে। রক্তক্ষয়ী এ সংঘাত বন্ধে দরকার বলিষ্ঠ কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ।

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন টর ওয়েনেসল্যান্ড । ওয়েনেসল্যান্ড জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া বিষয়ক বিশেষ সমন্বয়ক। সাম্প্রতিক সময়ে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতা ও সংকট সামাল দিতে তিনি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন উভয় পক্ষের মধ্যে ছুটে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা ক্রমেই কমে আসছে।

jagonews24

আরও পড়ুন> ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলায় ফের যুদ্ধের শঙ্কা

বিবিসির ওই সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন কমে আসায় পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। জাতিসংঘ শান্তি প্রতিষ্ঠার পুরো দায়িত্ব নিতে পারে না, আর ফিলিস্তিন শাসনও করতে পারে না।

ইসরায়েলের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ফিলিস্তিনের নেতৃত্ব নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় ওই অঞ্চলে কূটনৈতিক পরিবেশও সংকটের মধ্যে পড়েছে বলে স্বীকার করেন ওয়েনেসল্যান্ড। তবে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা যে একেবারে বিলীন হয়ে গেছে, এমনটি মনে করছেন না তিনি।

আরও পড়ুন> পূর্ব জেরুজালেমে বন্দুক হামলা, নিহত ৭

ওয়েনেসল্যান্ড বলেন, ইসরায়েলে যে সরকারই থাকুক কিংবা রামাল্লায় যে কর্তৃপক্ষই থাকুক না কেন, খুব শিগগির শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনায় বসা দরকার।

এর আগে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা প্রায় এক দশক ধরে থমকে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোলান্ড ট্রাম্প একটি পরিকল্পনা পেশ করেছিলেন, যা এখন বাতিল হয়ে গেছে।

তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ইসরায়েলকে প্রাধান্য দেওয়ায় অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে ও ফিলিস্তিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তবে সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন এ অঞ্চল সফরে যান ও দ্রুত সহিংসতা হ্রাস করার আহ্বান জানান।

jagonews24

আরও পড়ুন> পশ্চিম তীরে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী

ওয়েনেসল্যান্ড বলেন, এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জড়িত সক্রিয় কূটনীতিকরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ওই কুটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে পশ্চিম তীরের কিছু অংশে ইসরায়েলি সামরিক অভিযান হ্রাস কিংবা ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ইসরায়েলিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিশদ আলোচনা হয়েছে।

‘এমন কিছু পরিকল্পনা রয়েছে, যেগুলো এখন কাজে লাগানো যেতে পারে। আমি প্রস্তাব রেখেছিলাম, ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকেও নিজেদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার দরকার। কিন্তু মূল সমস্যা হলো, কোনো পক্ষই শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকরী আন্তরিকতা দেখাচ্ছে না। যদিও আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাচ্ছি।’

আরও পড়ুন> ইসরায়েলে সিনাগগে হামলার ঘটনায় গ্রেফতার ৪২

jagonews24

ওয়েনেসল্যান্ড পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ ও বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতার বিষয়ে ইসরায়েলকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, জেনিন ও নাবলুস শহরে নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করতে পারাটা ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য খুব জরুরি।

গত মাসে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সহিংসতায় ৩৫ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি ও সাতজন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি নেতা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নতুন করে ক্ষমতায় আসার পর সহিংসতা আরও বেড়েছে। নেতানিয়াহু ক্ষমতায় এসেই অধিকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইহুদি বসতি স্থাপনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।

আরও পড়ুন> জেরুজালেমে ১৩ বছরের বালকের গুলিতে দুই ইসরায়েলি আহত

সূত্র: বিবিসি

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।