দ্বিতীয় বছরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ইতি টানছে না কেউই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৫১ এএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, দ্বিতীয় বছরে গড়ালো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হয়। প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলে ইউক্রেনও। দেশটিকে সহায়তার ডালি নিয়ে বসে পশ্চিমা বিশ্বও। একবছরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের অস্ত্রের ঝনঝনানিতে প্রাণ গেছে বহু মানুষের। মুখ থুবড়ে পড়ে গোটাবিশ্বের অর্থনীতি। কার্যত অচল হয়ে পড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য। এখনো যুদ্ধ থামার লক্ষণ নেই। বরং যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার সব উপকরণ হাজির হয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে দেশটির বহু মানুষের প্রাণ গেছে। দেশ ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন কয়েক লাখ মানুষ। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ভবনের পর ভবন। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ডামাডোলে ব্যাপক গোলযোগ দেখা দিয়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে।

আরও পড়ুন> আরও কতদিন চলবে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ?

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত বছরের এই দিনে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালানোর নির্দেশ দেন। সে সময় মস্কোর লক্ষ্য ছিল রাজধানী কিয়েভকে ‘একীভূত’ করা। কিন্তু ইউক্রেনের প্রতিরোধ যুদ্ধ, একই সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর রসদ সরবরাহ যুদ্ধের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। যুদ্ধে উভয়পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তারপরও যুদ্ধের অবসান ঘটেনি। বরং অনেকটা স্থির অবস্থান বিরাজ করছে। এই এক বছরে ইউক্রেনের এক পঞ্চমাংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রাশিয়া।

রুশ প্রেসিডেন্ট ও তার দেশের বিরুদ্ধে কঠোর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এই যুদ্ধের কারণে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রুশ প্রেসিডেন্টকে পরাজিত করার লক্ষ্যে দফায় দফায় পশ্চিমাদের সহায়তা চেয়ে আসছেন। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। ফলে শান্তির সম্ভাবনা ক্ষীণ।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যুদ্ধের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে এবং মস্কোকে তার সৈন্য প্রত্যাহার ও যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে। এর পক্ষে ১৪১ ভোট পড়েছে। ৩২ জন অনুপস্থিত ছিলেন। বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া, মালি, নিকারাগুয়া এবং সিরিয়া না ভোটের পক্ষে। বেইজিংয়ের শীর্ষ কূটনীতিক মস্কো সফর করার ও রাশিয়ার সঙ্গে গভীর সম্পর্কের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ঠিক একদিন পরে চীন ভোটদানে বিরত থাকে।

আরও পড়ুন> এ বছরই পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করবে রাশিয়া: পুতিন

জাতিসংঘে রাশিয়ার উপ-রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি পলিয়ানস্কি সংস্থাটির এই পদক্ষেপকে ‘অকেজো’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি টুইটারে পোস্ট করে বলেছেন, এটি ইউক্রেনের জন্য বিশ্বব্যাপী সমর্থনকে অপ্রতিরোধ্য করার একটি শক্তিশালী সংকেত।

এদিকে, প্যারিসে ইউক্রেনীয় পতাকার নীল ও হলুদ রঙে আইফেল টাওয়ার আলোকিত করা হয় এবং লন্ডনে এক স্থানে জড়োও হন অনেকে। ব্রাসেলসে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবনগুলো একইভাবে আলোকিত করা হয়।

অপরদিকে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতে কী পরিণত হয়েছে সে সম্পর্কে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) তিনি প্রতিকূল পশ্চিমের বিরুদ্ধে অস্তিত্বের লড়াই হিসাবে উল্লেখ করেছেন এই যুদ্ধকে।

তিনি আরও বলেন, ‘ইউক্রেনকে ব্যবহার করে,পশ্চিমারা রাশিয়াকে টুকরো টুকরো করে, তার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করতে চাইছে।’

আরও পড়ুন> রাশিয়ার দূতাবাসের বাইরে ইউক্রেনের পতাকা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নেতৃত্বে ইউক্রেন ও তার মিত্ররা এ ধরনের অভিযোগ খারিজ করে দেয়। তারা বলছে, অন্যায়ভাবে ইউক্রেনের ভূমি দখল করতে মরিয়া পুতিন প্রশাসন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের একবছর উপলক্ষ্য শুক্রবার জি-৭ নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করবেন। হোয়াইট হাউজ বলছে, আসতে পারে বাইডেনের নতুন নিষেধাজ্ঞাও।

সূত্র: রয়টার্স, আল-জাজিরা

এসএনআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।