প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত

ইসরায়েলি নেতাদের ‍দ্রুত সমঝোতায় পৌঁছানোর তাগিদ যুক্তরাষ্ট্রের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:২৬ পিএম, ২৭ মার্চ ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি নেতাদের খুব দ্রুত সমঝোতায় আসার জোরালো আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাছাড়া রোববার (২৬ মার্চ) প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত করার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলে শুরু হওয়া ব্যাপক প্রতিবাদ ও সম্প্রতি ঘটতে থাকা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র এড্রিয়েন ওয়াটসন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে বিচার বিভাগীয় সংস্কারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন সদ্য সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওয়াভ গালান্ত। এর জেরে সরকারি পরিকল্পনার বিরোধিতা করায় গালান্তকে বরখাস্ত করেন নেতানিয়াহু। এর প্রতিবাদে ইসরায়েলজুড়ে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।

আরও পড়ুন>> উত্তপ্ত ইসরায়েল/ প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে সরিয়ে দিলেন নেতানিয়াহু

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র এড্রিয়েন ওয়াটসন এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা ইসরায়েলি নেতাদের যত দ্রুত সম্ভব আপস মীমাংসা করে সমঝোতায় পৌঁছানোর জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস, ইসরায়েল ও তার জনগণের জন্য এটিই হবে সর্বত্তোম সমাধান।

ওয়াটসন আরও বলেন, সম্প্রতি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছে, তাতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সবসময় সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কারণ গণতান্ত্রিক সমাজগুলো ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ সিস্টেমের মাধ্যমে শক্তিশালী হয়। আর একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতির যেকোনো পরিবর্তন জনসমর্থনের ভিত্ততে হওয়া উচিত।

আরও পড়ুন>> তীব্র প্রতিবাদের মুখে সুর নরম করলেন নেতানিয়াহু

এদিকে, সরকারের অংশ হয়েও সংস্কার পরিকল্পনা স্থগিতের আহ্বান জানানোর বিষয়টিকে গালান্তের ‘সাহসী পদক্ষেপ’ বলে প্রশংসা করেছেন ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ। অন্যদিকে, নেতানিয়াহু সরকারের উগ্র ডানপন্থি পুলিশমন্ত্রী বেন-গভির নেতানিয়াহুর এ সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন।

প্রায় তিন মাস আগে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে নেতানিয়াহুর জাতীয়তাবাদী-ধর্মীয় জোট সরকার তাদের বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনা নিয়ে দেশজুড়ে ক্ষোভ ও গভীর বিভক্তি দেখা দেয়। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিবাদের মুখে সংকটে পড়েছে নেতানিয়াহু সরকার।

দেশটির বিচার ব্যবস্থা সংশোধন ও সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ‘দুর্বল’ করার পরিকল্পনাটি উন্মোচন করার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে বিরোধীরা। বিরোধীদের দাবি, এসব সংস্কার বাস্তবায়িত হলে সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলো খুব সহজেই বাতিল করার ক্ষমতা পাবে নেসেট। অর্থাৎ, বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা পাবেন পার্লামেন্ট সদস্যরা।

আরও পড়ুন>> দখলদার ইসরায়েল আজ বিশ্বের ৪র্থ সুখী দেশ, কেমন আছে ফিলিস্তিন?

নেতানিয়াহু সরকারের এ পরিকল্পনা বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলবে ও দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে বলে দাবি সমালোচকদের। এ সংস্কারের ফলে সংখ্যালঘুদের অধিকার নষ্ট হবে ও আদালত ব্যবস্থা তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। এমনকি, নতুন এ সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স ব্যবস্থাকেও নষ্ট করে ফেলবে বলে দাবি তাদের।

সমালোচকরা বলছেন, এ পরিকল্পনা শুধু যে বিচারব্যবস্থাকে দুর্বল করবে তা নয়। নাগরিক স্বাধীনতাকেও বিপন্ন করবে ও পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ককে হুমকির মুখে ফেলার পাশাপাশি দেশীয় অর্থনীতিরও ক্ষতি করবে।

অন্যদিকে, বিতর্কিত এ আইনের সমর্থকদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টকে রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত রাখাটা আসলেই জরুরি। তারা চান, যত দ্রুত সম্ভব এ সংস্কার কার্যকর করা হোক।

আরও পড়ুন>> রোজার প্রথম দিনেই ইসরায়েলের হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত

রয়টার্স বলছে, নেতানিয়াহু সরকার নতুন সংস্কারের জন্য প্রথমেই সুপ্রিম কোর্টকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। মূলত তারপর থেকেই চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রতি সপ্তাহের শনিবার হাজার হাজার ইসরায়েলি নাগরিক সরকারের এ পরিকল্পনা বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে আসছেন।

সূত্র: রয়টার্স

এসএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।