দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন

দুই চাকায় বৈদ্যুতিক বিপ্লব ভারতে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৫৩ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

ভারতে গাড়ির লাইসেন্স প্লেটে দেখা যায় নানা রঙের ছোঁয়া। ব্যক্তিগত গাড়িতে সাদা রঙের প্লেটে অক্ষর থাকে কালো রঙের; বাণিজ্যিক গাড়িতে হলুদের ওপর কালো লেখা; ভাড়ায় চালিত যানবাহনে কালোর ওপর হলুদ এবং কূটনৈতিক গাড়িতে প্লেট সাদা ও অক্ষর নীল। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেখানে আরেক ধরনের প্লেট বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে: সবুজের ওপর সাদা। এটি হলো বৈদ্যুতিক যানবাহনের (ইভি) জন্য বরাদ্দ লাইসেন্স প্লেট। এগুলো হঠাৎই ভারতের সর্বত্র দেখা যাচ্ছে, বিশেষ করে দুই ও তিন চাকার গাড়িতে।

‘বৈদ্যুতিক গাড়ি’ শুনলে পশ্চিমাদের মনে প্রথমেই আসবে টেসলা ও তার বস ইলন মাস্কের কথা। কিন্তু বাইরের ধনী দেশগুলোতে, বিশেষ করে ভারতে, মধ্যবিত্তদের ভরসা দুই চাকার গাড়ি। ভারতীয় রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহনের ৭০ শতাংশেরও বেশি হলো টু-হুইলার, প্রধানত স্কুটার ও মোটরসাইকেল। তিন চাকার অটোরিকশা (যাকে বিদেশিরা ‘টুক-টুক’ বলে থাকেন) চলাচল করে আরও ১০ শতাংশ। গত বছর ভারতে নিবন্ধিত বৈদ্যুতির গাড়ির ৯২ শতাংশই হলো এই ‍দুই ক্যাটাগরির।

আরও পড়ুন>> ১৫৮ কোটি টাকায় বিক্রি হলো বিশ্বের সবচেয়ে দামি লাইসেন্স প্লেট

এদের প্রবৃদ্ধি খুবই আকর্ষণীয়। ২০২০ সালে দেশটিতে বিক্রি হওয়া ১ কোটি ৬০ লাখ টু-হুইলারের মধ্যে চার শতাংশ ছিল বিদ্যুৎচালিত, যা আগের বছরের এক শতাংশের ‍তুলনায় যথেষ্ট বেশি। কিন্তু অনুপাতের দিক থেকে বহুগুণ এগিয়ে ই-রিকশা। ২০২২ সালে বিক্রি হওয়া ৬ লাখ ৩২ হাজার থ্রি-হুইলারের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশই ছিল বৈদ্যুতিক। বাজার গবেষণা সংস্থা কাউন্টারপয়েন্টের জরিপে উঠে এসেছে এ পরিসংখ্যান।

ভারতে ই-রিকশার এই প্রবৃদ্ধি চলতি দশকের শেষ নাগাদ ৯৫ শতাংশে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে চার চাকার গাড়ি। গত বছর দেশটিতে নতুন নিবন্ধিত ৩৮ লাখ গাড়ির মধ্যে মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ ছিল বৈদ্যুতিক, যা ২০২১ সালের ০.৫ শতাংশের চেয়ে কিছুটা বেশি।

আরও পড়ুন>> ই-স্কুটার কেনার আগে মাথায় রাখুন ৫ বিষয়

jagonews24

ভারতে দুই ও তিন চাকার বৈদ্যুতিক গাড়ির এই উত্থানের বেশিরভাগই ঘটছে ছোট শহরগুলোতে, যেখানে গণপরিবহন ব্যবস্থা দুর্বল এবং চলাচলে অন্য যানবাহনের দাপট বিদ্যমান।

ভারতে মূলত সরকারি প্রণোদনার হাত ধরেই গতি পেয়েছে বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রবৃদ্ধি। ২০১৩ সালে তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বাড়াতে ‘ন্যাশনাল ইলেকট্রিক মোবিলিটি মিশন প্ল্যান’ নামে প্রথমবার একটি জাতীয় প্রকল্প চালু করে। এর দুই বছর পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন চাহিদা-প্রণোদনা প্রকল্প হাতে নেন। এর বর্ধিত দ্বিতীয় ধাপ চালু হয় ২০১৯ সালে।

আরও পড়ুন>> বন্ধ হয়ে গেলো মাহিন্দ্রা বাংলাদেশ

ভারতের বেশিরভাগ রাজ্য সরকার ইভি কেনার ক্ষেত্রে ভর্তুকিও দেয়। এসব প্রণোদনা ওলা ইলেকট্রিক মোবিলিটি এবং ওকিনাওয়ার মতো ইভি স্কুটার স্টার্টআপগুলোর প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।

ভারত সরকারের লক্ষ্য, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটিতে যাত্রীবাহী গাড়ি বিক্রয়ের ৩০ শতাংশ, বাণিজ্যিক গাড়ির ৭০ শতাংশ এবং দুই ও তিন চাকার গাড়ির ৮০ শতাংশই হবে বিদ্যুৎচালিত।

কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।