ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় বেঁচে ফিরলেন তিন বাংলাদেশি

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৮:৫৬ পিএম, ০৫ জুন ২০২৩

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি

ভারতের উড়িষ্যায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় বেঁচে ফিরলেন তিন বাংলাদেশি যাত্রী। করমণ্ডল এক্সপ্রেসে করে চিকিৎসার জন্য চেন্নাই যাচ্ছিলেন তারা। ট্রেনটিতে ছিলেন আরও কয়েকজন বাংলাদেশি যাত্রী। তাদের সবার খোঁজ চলছে।

জীবিত তিন বাংলাদেশি হলেন, একই পরিবারের মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন, মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির ও আজমিন আক্তার। তাদের বাড়ি বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায়। মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও আজমিন আক্তার হলেন স্বামী-স্ত্রী। আর মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন হলেন হুমায়ূন কবিরের ভাই।

শুক্রবারের (২ জুন) ওই ট্রেন দুর্ঘটনার বীভৎসতা এখনো ভুলতে পারেননি তারা। চিকিৎসা করাতে এসে এরকম ভয়ংকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন, তা কল্পনাও করতে পারেননি এই তিন বাংলাদেশি।

আরও পড়ুন: কেমন আছেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুই চালক?

জানা গেছে, দুর্ঘটনার পর অনেক কষ্টে কামরার জানালার কাচ ভেঙে বের হন মিনহাজ উদ্দিন। এরপর এক এক করে তার দুই সঙ্গীকে সেই জানালা দিয়ে টেনে বের করে আনেন। বাইরে এসে তারা ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ আর লাশের সারি দেখতে পান।

এরপরে অন্য সহযাত্রীদের বাঁচাতে উদ্ধারকাজ শুরু করে করেন তারা। জীবিতদের বাঁচাতে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যান। মরদেহের নিচে চাপা পড়ে থাকা জীবিতদের উদ্ধার করে পাঠিয়ে দেন হাসপাতালে। তাদের এ কাজ দেখে উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া স্থানীয় মানুষজন ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা অবাক হন।

শনিবার (৩ জুন) সকাল পর্যন্ত কাজ করার পর উদ্ধারকারী দলের প্রতিনিধিরা চিকিৎসার জন্য তাদের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। যেহেতু বিদেশি নাগরিক, তাই কোনো ধরনের ঝুঁকি নেয়নি সরকারি উদ্ধারকারী দল। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

আরও পড়ুন: উড়িষ্যায় এবার পণ্যবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত

মোহাম্মদ মিনহাজ বলেন, দুর্ঘটনার পর অনেক কষ্টে ট্রেনের কামরার কাচ ভেঙে বের হই। আমি যতদূর জানি, ওই ট্রেনে ১৫ জনের মতো বাংলাদেশি ছিলেন। চিকিৎসার জন্য আমি অনেকবারই কলকাতায় এসেছি। ভেলোর, ব্যাঙ্গালুর ও দিল্লি গিয়েছি। এটি আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা।

আজমিন আক্তারের চোখে-মুখে এখনো আতঙ্কের ছাপ। কিছুতেই যেন ভুলতে পারছেন না সেই রাতের কথা। ভয়ংকর সে অভিজ্ঞতার বিবরণ দিতে গিয়ে বারবার কেঁপে উঠছিলেন তিনি। বলেন, আমরা ট্রেনে বসেই ছিলাম। হঠাৎ ট্রেনটি কেঁপে উঠলো। এরপরে সবকিছু উলটা-পালটা হয়ে গেলো। একপর্যায়ে জানালার কাচ ভেঙে আমাদের বের করা হলো। তারপরে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

হুমায়ুন কবির বলেন, ওই সময়টার কথা মনে পড়লে মনে হয়, আর বেঁচে নেই। মরেই তো গিয়েছিলাম। চারিদিক পুরো অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। বাইরে বেরিয়ে এসে যা দেখলাম, তার বিবরণ আমি দিতে পারবো না।

আরও পড়ুন:  হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়লো নির্মাণাধীন সেতু, ভিডিও ভাইরাল

কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, করমণ্ডল এক্সপ্রেসে আর কতজন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন, তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। সঠিক তথ্য নেওয়ার জন্য উড়িষ্যায় তিন সদস্যের একটি দলও পাঠিয়েছিলেন তিনি।

ডিডি/এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।