হল-মার্ক তুষারের রিট খারিজ
মুদ্রা পাচারের অভিযোগ পুরনো আইনে দায়ের করা মামলা নতুন আইনে চলবে কিনা এমন এক ধারা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালত হলমার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমেদের করা রিট আবেদনের ওপর জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিথ বেঞ্চ এই রায় দেন।
এর ফলে মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনের ৩১ এর ৩ ধারা নিয়ে তুষারের আবেদন বাতিল হয়ে গেল। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে মামলা চালতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। অন্যদিকে তুষারের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম বলেন, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
২০১০ থেকে ২০১২ সালের মার্চ পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে হল-মার্ক গ্রুপের আড়াই হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর তা নিয়ে ব্যাপক ঝড় ওঠে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১২ সালের অাগস্টে আর্থিক খাতে বড় এই কেলেঙ্কারির ঘটনার অনুসন্ধান ও তদন্ত করে দুদক। প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে ওই বছর ৪ অক্টোবরে ১১টি মামলা করা হয়।
এরপর ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর হল-মার্ক গ্রুপের পরিচালক তানভীর মাহমুদ, চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম ও মহাব্যবস্থাপক তুষারসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দদুক।
অভিযোগে বলা হয়, সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে রূপসী বাংলা (সাবেক শেরাটন) হোটেল শাখা থেকে হলমার্ক মোট ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা আত্মসাত করে তারা। এরপর ৩১ এর ৩ ধারা চ্যালেঞ্জ করে তুষার রিট আবেদন করলে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
রুলে মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনের ৩১ এর ৩ ধারা সংবিধানের ৩৫ (২) অনুচ্ছেদের সঙ্গে কেন সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়। দুদক, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও অর্থ সচিবসহ বিবাদীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, হলমার্কের ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে দায়ের করা ১১টি মামলার মধ্যে নয়টিতে তুষারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এসব অভিযোগের সময়কাল ২০০৯ সাল, ঘটনাস্থলও এক। মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনের ৩১ এর ৩ ধারার ‘সুযোগ নিয়ে’ এসব মামলায় ২০১২ সালের আইন অনুযায়ী অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
২০১২ সালের মুদ্রাপাচার প্রতিরোধ আইনের ৩১ ধারায় বলা হয়, ওই আইন হওয়ার সঙ্গে পুরনো আইন ও অধ্যাদেশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তবে আগের আইনে দায়ের হওয়া কোনো মামলা অনিষ্পন্ন থাকলে তার বিচার নতুন আইনেই হবে।
তুষারের আইনজীবী আদালতে বলেন, একই বিষয়ে একই সঙ্গে নয়টি মামলা চলতে পারে না। এটা সংবিধানের ৩৫ (২) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘এক অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারিতে সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাবে না।’ এ বিষয়ে বিবাদীদের দেয়া জবাব পাওয়ার পর রুলের ওপর শুনানি করে আদালত তা নিষ্পত্তি করে দেন।
এফএইচ/জেএইচ/এমএস