খুলনা হাসপাতালে নার্সকে মারধর : সেবাদান বন্ধ


প্রকাশিত: ০৯:০৭ এএম, ১৭ মার্চ ২০১৬

অভিনব কায়দায় খুলনা জেনারেল হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ড থেকে তিন দিনের নবজাতক (জমজের একটা) ছেলে চুরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার তদন্তের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এদিকে সন্তান চুরির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে হাসপাতালের সেবিকাকে মারধরের ঘটনায় সেবিকারা তাৎক্ষণিকভাবে সেবাদান কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার নন্দনপুর এলাকার দিন মজুর ইদ্রিস আলী গত ১৪ মার্চ খুলনা জেনারেল হাসপাতালে তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রী সানজিদাকে (২৫) ভর্তি করেন। পরদিন ১৫ মার্চ সকাল ১০ টার পর অপারেশনের মাধ্যমে সানজিদা জমজ সন্তান (একটা ছেলে একটা মেয়ে) জন্ম দেন। সানজিদাকে দুই সন্তানসহ লেবার ওয়ার্ডে রাখা হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার সকালে ছেলে সন্তানটি চুরি হয়ে যায়।

সানজিদা বলেন, তার অপারেশনের পর থেকেই একটি বয়স্ক মহিলা (৬৫) তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। তিনি বিভিন্ন সময় নিজেকে যশোরের বাঘারপাড়া এলাকার বাসিন্দা পরিচয় দেন এবং খাবার দেয়ার চেষ্টা করেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ওই মহিলা সানজিদার মা মোছা. রেবেকা এবং শ্বাশুড়ি আকলিমা বেগমকে কোমল পানীয় "আরসি" খাওয়ার জন্য চাপ দেন। আরসি দেখে সানজিদার সন্দেহ হলেও শেষ অবধি তিনজনেই আরসি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।

পরে সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে দেখেন তার ছেলে সন্তানটি নেই। এসময় তিনি চিৎকার শুরু করেন। সেখানে উপস্থিত থাকা তার স্বামী ইদ্রিস আলী উত্তেজিত হয়ে সেবিকা জুথিকা দেবনাথকে মারপিট করেন। খবর পেয়ে খুলনা সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সানজিদার স্বামী ইদ্রিস আলী বলেন, সেবিকা জুথিকার সহায়তা ছাড়া কোনোভাবেই তার সন্তান চুরি হয়নি। কারণ হাসপাতালের গেট খোলার সময় তিনি (সেবিকা জুথিকা) ছাড়া আর কেউ থাকেন না। তিনি তার সন্তানকে ফিরিয়ে দেবার দাবি জানান।

এদিকে সেবিকা জুথিকা জানান, যে মহিলাকে চোর সন্দেহ করা হচ্ছে তিনি সব সময় ওনাদের (সানজিদাদের) সঙ্গেই ছিলেন। আমরা মনে করেছিলাম যে উনি তাদের আত্মীয়। ওই মহিলা নবজাতকদের নিয়ে রোদ পোহাতেও গেছেন। কিন্তু সন্তানের বাবা আমাকে অন্যায়ভাবে মারপিট করেছেন।

এব্যাপারে খুলনার সিভিল সার্জন ও খুলনা জেনারেল হাসপাতালের সুপার ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন, ডা. গোলক বিহারী স্বর্ণকার, ডা. রফিকুল ইসলাম ও ডা. মোস্তাফিজুর রহমান। তিন কার্যদিবসের মধ্য কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সঞ্জয় জানান, খবর পেয়ে বিভিন্ন স্থানে তল্লাশী শুরু করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর তদন্ত শরু হবে।

আলমগীর হান্নান/এফএ/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।