পশ্চিমবঙ্গে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল

রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ঘোষণা মমতার

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২:৪০ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী

কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে যে শিক্ষকরা চাকরি হারিয়েছেন, তাদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রায়গঞ্জের চাকুলিয়ায় জনসভায় তিনি বলেন, আদালত সোমবার যে রায় দিয়েছেন, সেটাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম আদালতে যাবেন তিনি। এই রায়কে ‘বেআইনি’ বলেও দাবি করেন মমতা।

এ রায়ের প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও পরোক্ষভাবে কটাক্ষ করেন তৃণমূল প্রধান। প্রশ্ন তোলেন, সোমবার আদালত যে রায় দিয়েছে, তা তিনি শনিবার (২০ এপ্রিল) কীভাবে জেনেছিলেন? তবে কি তারাই রায় লিখে দিয়েছেন? এটা কি বিজেপির বিচারালয়?

সোমবার চাকুলিয়ায় তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীর হয়ে প্রচার করেন মমতা। সেই মঞ্চ থেকেই এসএসসি মামলা নিয়ে হাই কোর্টের রায় প্রসঙ্গে মুখ খোলেন তিনি। তুলে আনেন শুভেন্দুর বোমা ফাটানোর হুঁশিয়ারির প্রসঙ্গ।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বোমা ফাটাবেন, বোমা? ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে যাবে, এমন বোমা? আমিও বলে রাখি, আমরাও লড়ে যাবো। লড়াই করবো। রায়কে চ্যালেঞ্জ করছি। উচ্চ আদালতে যাবো। এখানেই থামেননি মমতা। শুভেন্দুকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ধিক্কার জানাই। কোর্ট কী রায় দেবে, তুই আগে জানলি কীভাবে? সোমবার রায় দেবে, শনিবার জানলি কীভাবে? যদি রায় নিজেরা লিখে না দিস? রায় নিজেরা তৈরি করে না দিস?

প্রসঙ্গত, শুভেন্দু শনিবার দাবি করেছিলেন, চলতি সপ্তাহে ‘বোমা’ পড়তে চলেছে! কোনও তারিখ না জানালেও বিরোধী দলনেতা দাবি করেন, আগামী সপ্তাহের ‘বোমা’য় ‘বেসামাল’ হয়ে যাবে তৃণমূল। সেই বোমার প্রসঙ্গ তুলেই মমতার এই পাল্টা খোঁচা।

মমতা বলেন, রায় যা-ই হোক, চাকরিহারাদের পাশে আছি আমি। তার কথা, যাদের চাকরি বাতিল করা হলো, তারা চিন্তা করবেন না, হতাশ হবেন না। কেউ জীবনের ঝুঁকি নেবেন না। আমরা পাশে আছি। যত দূর দরকার, লড়াই করবো।

সাবেক বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একজনকে দেখলেন না, বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে গেলেন। চাকরি বাতিলের রায় তার। দেখলেন না, সুপ্রিম কোর্ট তাকে সরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, নতুন ডিভিশন বেঞ্চ করে আলোচনা হোক। কাকে নিয়ে করবেন ডিভিশন বেঞ্চ? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে’!

মমতা জানিয়ে দেন, তিনি কোনো বিচারপতিকে নিয়ে বলছেন না। রায় নিয়ে বলছেন। সেই ‘অধিকার’ তার রয়েছে। তবে বিচারালয়কে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি তিনি। বলেন, এই এক হয়েছে বিজেপির বিচারালয়। না মন্দির, না মসজিদ। রাজনৈতিক বিচার। এই তো অবস্থা। দীর্ঘ দিন ধরে চলছে। এটা বিচারপতিদের দোষ নয়, কেন্দ্রের দোষ। বিজেপি বিচারপতিদের বসিয়েছে, যাতে কেন্দ্র যা বলে, তারা তা-ই করেন।

কলকাতা হাইকোর্ট সোমবার জানিয়েছে, এসএসসির প্যানেলের মেয়াদ শেষের পরে যারা চাকরি পেয়েছেন, তাদের জনগণের টাকা থেকে বেতন দেওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে সুদসহ সেই বেতন ফেরত দিতে হবে সবাইকে। বছরে ১২ শতাংশ সুদে টাকা ফেরত দিতে হবে। এই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মমতা।

তিনি বলেন, ২৬ হাজার শিক্ষক মানে দেড় লাখ পরিবার। আট বছর তারা চাকরি করেছেন। চার সপ্তাহে টাকা ফেরত কি সম্ভব? আপনারা পারবেন? তারপরই তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রীরা চিন্তা করবেন না। আর কেউ না থাকলেও আমরা পাশে রয়েছি। আরও ১০ লাখ চাকরি তৈরি।

ডিডি/এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।