হাইকোর্ট

বেক্সিমকো চলবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়, থাকছে না রিসিভার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩০ পিএম, ১২ মার্চ ২০২৫

বেক্সিমকো গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠান (গ্রুপ অব কোম্পানিজ) নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে মর্মে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ আদেশের ফলে বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোনো রিসিভার থাকছে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বুধবার (১৪ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আইনজীবী ব্যারিস্টার মুনীরুজ্জামান। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও আইনজীবী আনিসুল হাসান। রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার মাসুদ আর সোবহান।

আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস সাংবাদিকদের বলেন, ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর জনস্বার্থে করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর বেক্সিমকো গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠানে রিসিভার নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন

পরে রিসিভার নিয়োগে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড আপিল করে। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশটি মডিফাই করে শুধু বেক্সিমকো ফার্মাকে নিজস্ব ব্যবস্থায় পরিচালনার অনুমতি দিয়েছিলেন।

এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক বেক্সিমকোর বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোতে রিসিভার নিয়োগ করেছিল। আজ হাইকোর্ট শুনানি শেষে ৯টি পর্যবেক্ষণসহ রুলটি নিষ্পত্তি করেছেন। রুল নিষ্পত্তির কারণে সেই রিসিভারগুলো আর থাকছে না। অর্থাৎ, বেক্সিমকোর সব প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে।

তবে আদালত বলেছেন, এসব প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রেগুলেটরি বডির সুপারভিশন ও মনিটরিং আইন অনুযায়ী থাকবে।

আইনজীবী ব্যারিস্টার মুনীরুজ্জামান বলেন, আদালত বলেছেন, এ পর্যন্ত রিসিভার যা করেছে, সব কাজ আইনগতভাবে বৈধ।

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান এ বিষয়ে একটি রিট করেন। ওই রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশ দেন।

আদেশে বেক্সিমকো গ্রুপের সব সম্পত্তি দেখভালের জন্য রিসিভার নিয়োগের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ছয় মাসের জন্য গ্রুপটির সব সম্পত্তি সংযুক্ত (অ্যাটাচ) করতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি দেওয়া ওই আদেশে বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের অর্থ উদ্ধার এবং বিদেশ থেকে টাকা ফেরাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল।

আরও পড়ুন

এছাড়া বেক্সিমকো গ্রুপের সব কোম্পানির তথ্য সরবরাহে, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কী পরিমাণ অপরিশোধিত ঋণ আছে, ঋণের বর্তমান অবস্থা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের সব সম্পত্তি দেখভাল করার জন্য রিসিভার নিয়োগে ও সম্পত্তি সংযুক্ত করতে রুল জারি করেন আদালত।

চার সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থসচিব, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা সালমান এফ রহমানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের পক্ষে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করা হয়। আপিল বিভাগ গত ১২ নভেম্বর শুধু বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ক্ষেত্রে ‘রিসিভার’ নিয়োগের আদেশ স্থগিত করেন।

পাশাপাশি বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। এরপর রুলের ওপর হাইকোর্টে ২৭ নভেম্বর শুনানি শুরু হয়। সম্প্রতি এ রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়।

এফএইচ/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।