বিসিবি সভাপতির চিঠির কার্যকারিতা স্থগিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নির্বাচনে জেলা ও বিভাগের অ্যাডহক কমিটি থেকে কাউন্সিলর করা নিয়ে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের ১৮ সেপ্টেম্বর দেওয়া চিঠির কার্যকারিতা ১৫ দিনের জন্য স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করে দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। হাইকোর্ট আদেশ দেওয়ার এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট পর এ আদেশ দেওয়া হয়। আগামী ৬ অক্টোবর বিসিবি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আদালত ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। ওই দিন পর্যন্ত শুনানি মুলতবি রেখেছেন। ফলে বিসিবি সভাপতির দেওয়া চিঠির কার্যকারিতা বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিবির পক্ষে আবেদনকারী অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড মো. হেলাল আমিন ও আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাহিন এম রহমান।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতে বিসিবির তথা রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্যাহ আল মাহমুদ। অন্যদিকে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল।
সাধারণ পরিষদে কাউন্সিলর মনোনয়নের ফরম বাতিল করে নতুন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে জমা দিতে বিসিবির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ১৮ সেপ্টেম্বর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিভাগীয়/জেলা ক্রীড়া সংস্থা বরাবর চিঠি দেন। ওই চিঠি চ্যালেঞ্চ করে রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল ও স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্ট।
তবে তফসিল অনুযায়ী, মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের বিসিবি কার্যালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে আজ সন্ধ্যা ৭টায় খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার কথা বিসিবির।
তফসিল অনুযায়ী, বিসিবির নির্বাচনের তারিখ ৬ অক্টোবর। পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন শেষে ফলাফল ঘোষণার পর নির্বাচিত ২৫ জন পরিচালকের মধ্য থেকে বোর্ড সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচন হয়ে থাকে। বিসিবির সাধারণ পরিষদের সদস্যরাই (কাউন্সিলর) পরিচালক পদের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। সর্বশেষ বিসিবি নির্বাচনে কাউন্সিলদের সংখ্যা ছিল ১৭০ জনের মতো।
আইনজীবী মো. হেলাল আমিন জাগো নিউজকে বলেন, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত হওয়ায় বিসিবির আজ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে কোনো বাধা নেই। বিসিবির সভাপতির ১৮ সেপ্টেম্বর দেওয়া চিঠি বহাল থাকছে। এ অনুসারে অ্যাডহক কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে নাম পাঠাতে হবে। যদি না পাঠানো হয় তাহলে যা আছে, তার ভিত্তিতে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে।
প্রথমে কাউন্সিলরদের নাম জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ১৭ সেপ্টেম্বর। দুই দফা সময় বাড়িয়ে তা শেষ হচ্ছে ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায়। এর মধ্যে ১৮ সেপ্টেম্বর ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের গঠনতন্ত্র (২০২৪ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী সাধারণ পরিষদের কাউন্সিলরের চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন প্রসঙ্গে’ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিভাগীয়/জেলা ক্রীড়া সংস্থা বরাবরে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলামের সই করা চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, বিসিবির কাউন্সিলর হিসেবে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে নাম প্রেরণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা যথাযথভাবে মানা হয়নি। আগের ফরম বাতিল করে বিসিবি থেকে পাঠানো নতুন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে আজ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কাউন্সিলরের নাম পাঠাতে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
ওই চিঠির বৈধতা নিয়ে এ বি এম মনজুরুল আলমসহ চারজন কাউন্সিলর (১৮ সেপ্টেম্বরের আগে মনোনীত) আজ রিটটি করেন। বিসিবি সভাপতির চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে চার ব্যক্তি বাদী হয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন। রিটকারী চারজন হলেন রাজবাড়ীর মঞ্জুরুল আলম, গোপালগঞ্জের জসিম উদ্দিন খসরু, লক্ষ্মীপুরের মঈনুদ্দিন চৌধুরী এবং টাঙ্গাইলের আলী ইমাম।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ বিসিবি সভাপতির চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করেন।
এফএইচ/এএমএ/জিকেএস
