মানবতাবিরোধী অপরাধ
শেখ হাসিনার এক মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ, যুক্তি-তর্ক ১২ অক্টোবর
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সর্বশেষ ও ৫৪তম সাক্ষী এবং মূল তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরকে জেরা শেষ হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় এ সাক্ষীকে জেরা করা হলো। এখন মামলায় যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ১২ অক্টোবর দিন ঠিক করেছেন আদালত।
বুধবার (৮ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে এই দিন ঠিক করে আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন-বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতে আজ শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমীর হোসেন মামলার সর্বশেষ সাক্ষী এবং আইওর জেরা শেষ করেন। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজি মনোয়ার হুসাইন তামিম ও প্রসিকিউটর আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
এর আগে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সর্বশষ ও ৫৪তম সাক্ষী এবং মূল তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরকে চার দিন জেরা করেন আসামীপক্ষের আইনজীবী।
আরও পড়ুন
৮ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা
গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে টানা তিনদিন সাক্ষীর জবানবন্দি দেন তদন্ত কর্মকর্তা। তিনি এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ৫৪তম ও সর্বশেষ সাক্ষী। জবানবন্দিতে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন মো. আলমগীর। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালীন ৪১ জেলার ৪৩৮ স্থানে হত্যাকাণ্ড ও ৫০টিরও বেশি জেলায় মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে জেরা শুরু করে ৩০ সেপ্টেম্বর। এরপর বাদবাকি জেরার জন্য ৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। এরই ধারাবাহিকতায় ৬,৭ ও ৮ অক্টোবর জেরা অনুষ্ঠিত হয়।
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য দুই আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন (পরে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি পেশ করেছেন)।
এ মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন তদন্ত সংস্থার উপ-পরিচালক মো. জানে আলম খান। পরে তদন্ত করেন উপ-পরিচালক মো. আলমগীর। সার্বিক সহযোগিতা করেন বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা।
এ ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর চলতি বছরের ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে গত ৩১ মে সম্পূরক অভিযোগ দেওয়া হয়। গত ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়।
গত ১০ জুলাই এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠনের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে সাবেক আইজিপি মামুন নিজেকে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে যে আবেদন করেন, তা মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর ৩ আগস্ট থেকে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে আজ বুধবার শেষ হলো।
এফএইচ/কেএসআর/জিকেএস