বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের পরিপত্র প্রত্যাহার চেয়ে নোটিশ
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সর্বত্র মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্র প্রত্যাহার চেয়ে আইনি নোটিশ (লিগ্যাল) পাঠানো হয়েছে। বুধবার (২২ জুলাই) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে এই নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশ পাওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে পরিপত্রটি প্রত্যাহার করা না হলে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজধানীর আল মুতমাইন্নাহ মা ও শিশু হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার ডা. মুহম্মদ আব্দুল আলী মারুফের পক্ষে আইনজীবী শেখ ওমর শরীফ এই নোটিশ পাঠান। বিষয়টি তিনি জাগো নিউজকে নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
নোটিশে বলা হয়, গত ২১ জুলাই স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে মাস্ক ব্যবহার সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। পরিপত্রে প্রতিটি কর্মস্থলে কর্মরত ব্যক্তি এবং জনসমাবেশ চলাকালীন আবশ্যিকভাবে মাস্ক পরিধানের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
পরিপত্রের বিষয়ে নোটিশে দাবি করা হয়, ‘এমন ঢালাওভাবে মাস্ক পরিধানের নির্দেশনা কোনোক্রমেই বিজ্ঞানসম্মত ও স্বাস্থ্যসম্মত পদক্ষেপ নয়। ঢালাওভাবে মাস্ক ব্যবহার করা বিপজ্জনক হতে পারে বলে জানিয়েছে খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটি জানিয়েছে, মুখে মাস্ক পরে শরীরচর্চা, প্রাতঃভ্রমণ বা জগিং করলে শরীর পর্যাপ্ত অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে না। এ অবস্থায় অক্সিজেন কমে গিয়ে উল্টো তা স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।’
‘সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে, বেশি সময় ধরে মাস্ক ব্যবহারের ফলে অনেকের নাক-মুখে ছোট লালচে ও গোলাপি ব্রন, র্যাশ উঁকি দিচ্ছে। খসখসে ত্বক, চুলকানি, ঠোঁটের চারপাশে লাল গুটির মতো দাগ হচ্ছে। যারা বয়ঃসন্ধিতেও ব্রনের সমস্যায় ভোগেননি, তারাও মাস্ক ব্যবহারের ফলে সমস্যায় পড়েছেন। ডারমাটোলজিস্টরা এই মাস্কঘটিত ব্রনের নাম দিয়েছেন ‘মাস্কনে’, অর্থাৎ মাস্কের কারণে যে ব্রন বা অ্যাকনে।’
নোটিশে আরও বলা হয়, ‘এ কারণে গত ২১ জুলাই স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে মাস্ক ব্যবহার সংক্রান্ত পরিপত্রটি সুস্পষ্টভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনার বিপরীত। পরিপত্রের নির্দেশনাসমূহ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশেষত গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিসহ সকল শিল্পকারখানায় কর্মরত শ্রমিক, হকার, রিকশা ও ভ্যানচালকদের জন্য মাস্ক পরিধান গুরুতর স্বাস্থ্যগত সংকট সৃষ্টি করতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অত্যাধিক দৈহিক পরিশ্রমযুক্ত ভারী কাজের সময় মাস্ক না পরতে। অথচ বাংলাদেশের পরিশ্রমী শ্রমিক, রিকশা ও ভ্যানচালকদের মাস্ক পরিধানে বাধ্য করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
এফএইচ/এমএফ/বিএ