কোর্টের ভেতর সামাজিক দূরত্ব মানলেও সেকশনে হুড়োহুড়ি
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সরকারি, সাপ্তাহিক ও অন্যান্য ছুটি শেষে দীর্ঘ সাড়ে চার মাস পর বিচারপতি, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের শারীরিক উপস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে বিচারকার্য শুরু হয়েছে আজ। প্রথম দিন কোর্টের ভেতরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলেও কোর্টের শাখায় স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না।
হই চই ও হুড়োহুড়ির কারণে হাইকোর্টের সড়ক ভবনের শাখার কাজ কিছুক্ষণ বন্ধ রাখেন কর্মচারীরা। এরপর নিরাপত্তাকর্মীদের সহযোগিতায় শাখার ভেতর থেকে লোকজন সরানো হয়। পরে আবার স্বাভাবিক কাজ পরিচালনা করতে দেখা যায়। এদিকে আইনজীবী সমিতিতে সিল লাগানোর জন্য লাইনে দাঁড়ানো আইনজীবী সহকারীরা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।
শারীরিক উপস্থিতিতে বুধবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে হাইকোর্টের ১৮টি বেঞ্চে বিচারকার্য শুরু হয়েছে। আবার সেই সঙ্গে চলছে ভার্চুয়ালে হাইকোর্টের ৩৫টি বেঞ্চ এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্যক্রম। তবে হাইকোর্ট বিভাগের সেকশন এবং আইনজীবী সমিতির সিল নিতে লাইন ধরলেও নেই সামাজিক দূরত্ব, অর্থাৎ কোনো ধরনের দূরত্ব বজায় না রেখে হুড়োহুড়ি করতে দেখা গেছে আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারীদের। এ অবস্থায় শঙ্কায় রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের কর্মচারী ও আইনজীবীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে কোর্টের সেকশনের এক কর্মচারী জাগো নিউজকে বলেন, আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোর্টে এসেছি জনগণকে সেবা দেয়ার জন্য। কিন্তু দেখুন (সেকশন) শাখায় কী অবস্থা! এর মধ্যে আমরা কাজ করবো কীভাবে?
এর আগে প্রধান বিচারপতির নির্দেশনায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুসারে হাইকোর্টের ১৮টি বেঞ্চে শারীরিক উপস্থিতিতে এবং ভার্চুয়াল মাধ্যমে ৩৫টিতে বিচারকার্য শুরু হয়।
এদিকে করোনা পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে গত ২৬ মার্চ থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ছুটিসহ বিভিন্ন ছুটিতে দেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ শারীরিক উপস্থিতিতে বিচারকার্য থেমে যায়। এরপর গত ৯ মে আদালতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ- ২০২০ এর গেজেট প্রকাশ করে সরকার। পরে এটিকে আইনে রূপান্তর করা হয়। ফলে মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত বা আপিল শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ বা রায় প্রদানকালে পক্ষগণের ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে আদালতকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষমতা প্রদান করা হয়।
পরে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকার্য পরিচালনার প্রয়োজন অনুসারে বেঞ্চ গঠন করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এরই আলোকে দীর্ঘদিন ধরে ভার্চুয়াল আদালতে বিচারকার্য পরিচালিত হয়ে আসছে। আইনজীবীদের দাবির প্রেক্ষিতে ভার্চুয়াল ৩৫টি বেঞ্চের পাশাপাশি শারীরিক উপস্থিতিতে হাইকোর্টের ১৮টি বেঞ্চে বিচারকার্য পরিচালনায় নতুন করে উদ্যোগী হয়ে ওঠে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
এফএইচ/এমএসএইচ/এমএস