চিকিৎসকই ভুল চিকিৎসার শিকার স্কয়ারে : তদন্তের নির্দেশ
রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. এএসএম জাকারিয়া স্বপন ‘ভুল চিকিৎসা’র শিকার হওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া ভুল চিকিৎসার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত চিকিৎসক জাকারিয়া স্বপনসহ অন্যান্য রোগীদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ কেন দেয়া হবে তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহপরিচালক, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক, ফার্মেসি ইনচার্জ, স্কয়ার হাসপাতাল, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন।
তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে আগামী দুই মাসের মধ্যে এই বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতেও নির্দেশ দিয়েছেন বেঞ্চ।
হাইকোর্টের আদেশে স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক, ফার্মেসি ইনচার্জ, স্কয়ার হাসপাতাল, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলকে রিটের বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে আদালতে রিট আবেদন করেন ভুক্তভোগী চিকিত্সক জাকারিয়া স্বপন এবং বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড ট্রাস্ট সার্ভিসেস (ব্লাস্ট)।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি একটি দৈনিকে প্রকাশিত ‘ভেজাল ওষুধে ক্ষতিগ্রস্ত রোগীরা অসহায়’ শিরোনামে প্রতিবেদন রিটে সংযুক্ত করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. জাকারিয়া স্বপন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে কেমোথেরাপির আওতায় ছিলেন। থেরাপির এক ধাপে তিনি দেখেন, ‘তার কাঙ্ক্ষিত শারীরিক উন্নতি হয়নি। তিনি নিজেই বিষয়টি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখতে পান, তার শরীরে যে ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে, সেটি আসল ছিল না। তাই তার ক্যানসারের মাত্রা বেড়ে গেছে। ফলে ঢাকার একটি বড় হাসপাতালে কেমোথেরাপি নিতে গিয়ে বিদেশি ব্র্যান্ডের ওই ভেজাল বা নকল ওষুধ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পরে তিনি লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন সরকারের ওষুধ অধিদফতর, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে।’
এ বিষয়ে অধ্যাপক ডা. জাকারিয়া স্বপন বলেন, ‘যে নামকরা হাসপাতালে আমার কেমোথেরাপি চলছিল, সেখানে গত ১০ ও ১৭ ডিসেম্বর যে ওষুধের দুটি ডোজ আমাকে দেওয়া হয়, তা আসল ছিল না। ফ্রান্সের একটি কম্পানির ওষুধ নকল করে দেওয়া হয়েছিল। ওই ওষুধে যে সাইটোটক্সিন উপাদান থাকার কথা ছিল তা না থেকে অন্য কিছু দেওয়া ছিল। অথচ এ ওষুধের প্রতিটি ডোজের দাম রাখা হয় প্রায় ১৮ হাজার টাকা করে।
এফএইচ/একে/এমএস