জিহাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের আদেশ স্থগিতের আপিল শুনানি পেছাল


প্রকাশিত: ১০:১৬ এএম, ০১ মার্চ ২০১৬

রাজধানীর শাহজাহানপুরে পরিত্যক্ত পাইপে পড়ে নিহত শিশু জিহাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে করা রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি দুই সপ্তাহ পিছিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

মঙ্গলবার আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেন। আদালতে শিশু জিহাদের পক্ষে ছিলেন, ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ও অ্যাডভোকেট হরিদাস পাল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল মোমতাজ উদ্দিন ফকির।

তার আগে গত রোববার ক্ষতিপূরণের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদন আদালতে উপস্থাপন করার পরে সুপ্রিমকোর্টের চেম্বার জজ আদালত শুনানির জন্য আজ মঙ্গলবার দিন ঠিক করেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিক।

শিশু জিহাদের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রুল জারি করেছিলেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই রুল নিষ্পত্তি করে শিশু জিহাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয় একই বেঞ্চ থেকে। তবে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ এবং সরকারি কোন সংস্থা ওই অর্থ প্রদান করবে তা পূর্ণাঙ্গ রায়ে প্রকাশ করার কথা।

একইসঙ্গে শিশু জিহাদের মৃত্যুতে ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা রেলওয়ে ও সিটি কর্পোরেশনের অবহেলা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে সারাদেশে কতোগুলো অরক্ষিত পাইপ, ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল ও পয়ঃনিষ্কাশন পাইপ রয়েছে তার একটি তালিকা তৈরি করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তাও জানতে চান আদালত।

রায়ের পর ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম বলেছিলেন, আদালত রুল মঞ্জুর করেছেন। এ রায়ের মাধ্যমে বোঝা গেল জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় সরকারি কর্তৃপক্ষই দায়ী।

ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার জন্য কারা দায়ী থাকবেন বা কী ধরনের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন দেবেন আদালত। ১৯৮৩ সালে ভারতে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি চালু হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এটাই ছিল ক্ষতিপূরণের প্রথম ঘটনা।

২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিতে কয়েকশ ফুট গভীর একটি পরিত্যক্ত নলকূপের পাইপে পড়ে যায় চার বছরের জিহাদ। প্রায় ২৩ ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অভিযানে ক্যামেরা নামিয়েও ফায়ার সার্ভিস কোনো মানুষের ছবি না পাওয়ায় পাইপে জিহাদের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। এরপর উদ্ধার অভিযান স্থগিতের ঘোষণা দেয় ফায়ার সার্ভিস। এর কয়েক মিনিট পর কয়েকজন তরুণের তত্পরতায় তৈরি করা যন্ত্রে পাইপের নিচ থেকে উঠে আসে অচেতন জিহাদ। হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এফএইচ/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।