কন্যাশিশু লালন-পালনে বাবা-মায়ের যা মানা জরুরি

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪৮ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০২২

মেয়ে হোক বা ছেলে সন্তান লালন-পালন করা সব বাবা-মায়ের ক্ষেত্রেই চ্যালেঞ্জিং! তবে কন্যাশিশু লালন-পালনের ক্ষেত্রে প্রতিটি বাবা-মায়েরই মুন্সিয়ানা দেখানো উচিত। না হলে ওই শিশু কখনো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারবে না।

বর্তমানে ছেলেদের মতো এগিয়ে যাচ্ছে মেয়েরাও। এ বিষয় মাথায় রেখে কন্যাশিশুকে সামাজিক প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করতে হবে বাবা-মাকেই।

দেশের বেশিরভাগ পরিবারেই মেয়ে ও ছেলে সন্তানের মধ্যে বিভেদ করা হয়। ফলে অনেক মেয়েদের মধ্যেই ছোটবেলা থেকে আত্মবিশ্বাসের অভাব ও বিষণ্ণতা দেখা দেয়।

এ কারণে কোনো বাবা-মায়েরই উচিত নয় ছেলে কিংবা মেয়ে সন্তানের মধ্যে পার্থক্য করা। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক কন্যাশিশু লালন-পালনে বাবা-মায়ের আর কী কী করা উচিত আর কী কী নয়-

সব আবদার পূরণ করবেন না

ছেলে হোক আর মেয়ে কোনো সন্তানেরই অতিরিক্ত আবদার পূরণ করবেন না। এতে তাদের মধ্যে আরও চাহিদার সৃষ্টি হবে।

এক সময় চাহিদা বেশি হওয়ায় তা পূরণে আপনি হিমশিম খেতে পারেন। তাই শিশুর সব আবদার পূরণ করবেন না, বরং শাসন করুন।

অতিরিক্ত যত্ন করবেন না

অনেক বাবা-মা শিশুকে নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তিত হয়ে পড়েন। শিশুর খাওয়া, গোসল, বাইরে না নেওয়া কিংবা শিশুকে নিয়ে এটা-সেটা করা যাবে না, একা রাখা যাবে না, কারও কোলে দেওয়া যাবে না, মাটিতে নামানো যাবে না ইত্যাদি বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত প্যাম্পার করেন বাবা-মা। আর এসব কর্মকাণ্ডে শিশুর বিকাশ বাঁধাপ্রাপ্ত হয়।

সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিকাশ করুন

ছোট থেকেই কন্যাশিশুর উপর কিছু চাপিয়ে দেবেন না, বরং তার সিদ্ধান্ত জানার চেষ্টা করুন। যেমন-কোনো খাবার খেতে না চাইলে জোর করবেন না কিংবা খেলতে চাইলে জোর করে তা থেকে বিরত রাখা ইত্যাদি কাজ কখনো করবেন না।

এতে ছোট্ট মনে খারাপ প্রভাব পড়ে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিশুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। তাকে পছন্দের জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যান, খাবার খাওয়ান কিংবা পছন্দের পোশাক বা খেলনা কিনে দিন।

সব কাজে উত্সাহিত করুন

কন্যাশিশু যা করতে পছন্দ করে তাকে তা করতে উৎসাহিত করুন। ধরুন- কোনো শিশু খুব ভালো নাচে কিংবা গান গায়, ছবি আঁকে, গল্প করে কিংবা কবিতা পড়তে ভালোবাসে, মোট কথা যে শিশু যে কাজটি আগ্রহ সহকারে করতে পছন্দ করে তাকে সেটি করতে উৎসাহিত করুন। এতে শিশুর মানসিক বিকাশ ঘটবে ভালোভাবে।

ভালো গুণাবলী শেখান

শিশুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কিন্তু তার পরিবার। বাবা-মাকে দেখেই সবকিছু শেখে শিশুরা। এ কারণে সব বাবা-মায়েরই উচিত সন্তানের সামনে একে অন্যের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা।

এর পাশাপাশি ছোট থাকতেই শিশুকে শেখান ভালো ও খারাপ বিষয়ের বিভেদ। একজন মানুষের মধ্যে ঠিক কী কী গুণাবলী থাকা দরকার তা শিশুকে শেখানো উচিত।

শিশুকে শক্তিশালী করুন

শিশুর মানসিকতার বিকাশ ঘটাতে তাকে বাস্তবতার সঙ্গে পরিচয় করান। জীবনে কখনো সুখ আবার কখনো দুঃখ আসবে, এটাই স্বাভাবিক। দুঃখের সময় শিশু যেন নিজেকে শক্ত রাখতে পারে সে শিক্ষা তাকে ছোট থেকেই দিতে হবে।

সর্বোত্তম শিক্ষা প্রদান করুন

আপনার কন্যাশিশুকে সর্বোত্তম শিক্ষা প্রদান করুন। এমনকি যদি সে অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রে আগ্রহ না দেখায়, তাকে তার দক্ষতা বিকাশ করতে ও সে যা করতে আগ্রহী সেদিকে সর্বোত্তম সুযোগ পেতে সাহায্য করুন।

ডায়েটে মনোযোগ দিন

কন্যাশিশুর খাদ্যতালিকার দিকে নজর রাখুন। তাকে পুষ্টির গুরুত্ব বোঝান ও ভালো-খারাপ খাবারের পার্থক্য বোঝান। ফাস্টফুড ও জাঙ্কফুড থেকে শিশুকে দূরে থাকতে সাহায্য করুন।

শারীরিকভাবে সক্রিয় রাখুন

কন্যাশিশুকে যে কোনো ধরনের শারীরিক কার্যকলাপে জড়িত হতে কিংবা তার পছন্দের গেম খেলতে সাহায্য করুন। সুস্বাস্থ্য সম্পর্কে তাকে জ্ঞান দিন।

অতিরিক্ত সুরক্ষামূলক হবেন না

সন্তানকে অবশ্যই শাসনে রাখা উচিত, তবে অতিরিক্ত শাসন করবেন না। এতে শিশুরা বিরক্ত হয়ে পড়ে বাবা-মায়ের প্রতি।

আর এ কারণেই তারা বাবা-মায়ের কাছ থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যায়। তাই কন্যাশিশুকে স্বাধীনতা দিন।

আপনি যদি এই নির্দেশিকা অনুসরণ করেন তাহলে দেখবেন আপনার মেয়েকে স্মার্ট ও আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে পারবেন।

ঐতিহ্যগত ও আধুনিক মূল্যবোধের মিশ্রণ কন্যাশিশুকে তার প্রতিভা বিকাশে সহায়তা করবে। তাকে রক্ষণশীল ও সংকীর্ণ মনের মানুষ করবেন না।

জেএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।