একখানা পদ্মপুকুর

খাদিজা আক্তার সায়মা
আমার ছোট্ট একখানা পদ্মপুকুর। সেই পুকুরে শত শত পদ্ম না হলেও কিছু তো ফোঁটে। একদিন বিকেলে পদ্মগুলোর মাঝে দুটি শাপলা উঁকি দিলো। প্রথমে বোঝা যায়নি, সে কি পদ্ম নাকি শাপলা! কলি হয়ে ফুটেছে।
পদ্মগুলোর দিন ভালোই যাচ্ছে। লোকেরা আসে, দেখে চলে যায়। কেউ কোনোদিন ছিঁড়ে নিতে পারেনি। কারণ সেই পুকুরে বাস করতো একটি কচ্ছপ। বিশাল আকৃতির কচ্ছপের ভয়ে কেউ পদ্ম ছেঁড়ার সাহস করতো না।
এদিকে শাপলা দুটিও বড় হয়ে যাচ্ছে। একটি পদ্ম ও শাপলার বন্ধুত্ব হয়। প্রায় বিকেলে তারা গল্প করতো। লোকেরা তাদের একসাথে দেখে বাহবা দিতো।
আরও পড়ুন
এভাবেই দিনগুলো কাটতে থাকে। পুকুরের বাকি পদ্মগুলো এ সুসম্পর্ক মেনে নিতে পারছিল না। পদ্মের রাজা পদ্মটিকে বোঝাচ্ছিলেন, ‘তোমার আর শাপলার গোত্র এক নয়। তুমি তার সাথে ভাব জমিও না।’ পদ্মটি বলে, ‘দিন শেষে তো আমরা ফুল। ফুলের কি কোনো জাত-গোত্র হয়!’
পদ্মরাজ তার কথা শুনতে নারাজ। সে পরিকল্পনা করে, শাপলা দুটিকে পুকুর থেকে উচ্ছেদ করবে। তাই কচ্ছপকে খবর দেয়। তবে একদিন জেলে আসে। দেখে পুকুরে বেজায় পদ্ম ফুটে আছে। সে ভাবে, এগুলো পূজায় কাজে লাগবে। তাছাড়া হাটে নিয়ে বিক্রি করলেও ভালো লাভ হবে।
তাই সে পুকুরের সব পদ্ম তুলে নিয়ে যায়। শুধু একটি পদ্ম বাদে। কারণ পদ্মটিকে দুটি শাপলা তাদের পাতার নিচে লুকিয়ে রেখেছিল। এরপর থেকে ওই পুকুরে একটিই পদ্ম থেকে যায়। আর কখনো পদ্ম ফোঁটেনি। পুরো পুকুরে এখন শাপলায় ভরপুর।
এসইউ/এমএস