ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মাদারীপুর

সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে নীলকুঠি

জেলা প্রতিনিধি | মাদারীপুর | প্রকাশিত: ০৫:১২ পিএম, ০১ মে ২০২৫

মাদারীপুরে আজও দাঁড়িয়ে আছে ইংরেজ শাসনামলের অত্যাচারের নিদর্শন নীলকুঠি। নীল চাষিদের ওপর নির্যাতনের দুঃসহ স্মৃতি বিজড়িত এই কুঠি এখন সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখনই সংস্কার করা না হলে হয়তো একদিন এর আর কোনো চিহ্ন থাকবে না। নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে হারিয়ে যাবে এই নীলকুঠি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার ছিলারচর ইউনিয়নের আউলিয়াপুর বাজারের কাছেই নীলকুঠি। ধারণা করা হয়, ১৮০০ সালের দিকে আউলিয়াপুর গ্রামে নীল তৈরির জন্য এই কুঠি তৈরি করা হয়। ‘ডানলপ’ নামের একজন ইংরেজ কুঠিরের দায়িত্বে ছিলেন। এজন্য জেলায় এটি ‘ডানলপ সাহেবের নীলকুঠি’ নামেই পরিচিত। এটি ১২ একর জমির ওপর তৈরি করা হয়

সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে নীলকুঠি

লম্বা আকৃতির ১২ কক্ষ বিশিষ্ট একটি কাঠামো বানানো হয়। যা ছিল নীল তৈরির কারখানা। আরও ছিল নীল তৈরির জন্য পানি ধরে রাখার কৃত্রিম স্থান। সেখানে পানি দিয়ে নীল ভিজিয়ে রাখা হতো। এর পাশেই তৈরি করা হয়েছিল ৪০ ফিট উঁচু লম্বা একটি চিমনি। নীল তৈরির সময় আগুনে জ্বাল দেওয়া হলে চিমনী দিয়ে ধোঁয়া বের হতো। এই চিমনিকে ঘিরেই ধ্বংসাবশেষ অবকাঠামো দেখা যায়।

চিমনির ঠিক উল্টো পাশে লম্বালম্বিভাবে কক্ষের অবকাঠামোতে তৈরি আছে ১২টি পৃথক স্থান। এই কাঠামোই মূলত নীল তৈরির কারখানা। বিশাল অংশজুড়ে নীলকুঠিরের অবকাঠামো থাকলে আজ সামান্য কিছু অংশ অবশিষ্ট আছে। তাও দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে।

সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে নীলকুঠি

মাদারীপুরের ইতিহাস গবেষক সুবল বিশ্বাস বলেন, ১৮৪৭-৪৮ সালে নীল চাষের ফলে স্থানীয় কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হন। তখন তারা নীলচাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। এতে কৃষকদের ওপর নির্মম অত্যাচার শুরু করেন ইংরেজরা। যা ইতিহাসের একটি কষ্টের অধ্যায়। অথচ নীল চাষিদের ওপর ইংরেজদের নির্যাতনের দুঃসহ স্মৃতি বিজড়িত নীলকুঠি সংস্কারের অভাবে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই নতুন প্রজন্মের কথা চিন্তা করে সরকারের উচিত এটি রক্ষা করা।

স্থানীয় মোয়াজ্জেম হোসেন, আফসাল হোসেন, কামাল মৃধা, আনোয়ার সরদারসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, নীলকুঠির যতটুকু এখনো অবশিষ্ট আছে তা ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষী। অবহেলায় এটি পরে আছে। এখনো এটি দেখতে নিজ জেলার পাশাপাশি অন্য জেলার মানুষ আসে। তাই সরকারের উচিত যতটুকু আছে, তা সংস্কার করে আগামী প্রজন্মের জন্য ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে রেখে দেওয়া।

সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে নীলকুঠি

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। তারপর তাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংস্কারের কাজ করা হবে।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/জেডএইচ/জেআইএম