ইন্টার্নশিপ না করে বেতনও তুলে নিয়েছেন সেই ছাত্রলীগ নেতা
শুধু এমবিবিএসের সনদ নয় ইন্টার্নশিপ না করেই নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার রহমান সিয়াম তুলে নিয়েছেন বেতনের আড়াই লাখ টাকা। যদিও এর আগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতার ওপর হামলার দায়ে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
সিয়াম রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল অনুষদের ২৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি রামেক শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ শেষ না করেও কীভাবে সিয়াম সনদ পেয়েছেন তা নিয়ে মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আজিজুল হক আজাদকে প্রধানকে একটি তদন্তে কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্র জানা গছে, শাহরিয়ার রহমান প্রকৃতপক্ষে ইন্টার্নশিপ না করেই সরকারি বরাদ্দকৃত পুরো এক বছরের বেতনের দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। ইতোপূর্বে নানা অনিয়ম ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শাহরিয়ার সিয়ামকে ছয় মাসের শাস্তি প্রদান করা হয়েছিল। সেই অবস্থায়ও তিনি হাসপাতাল অফিস থেকে ইন্টার্নশিপের চূড়ান্ত সনদ (ফাইনাল সার্টিফিকেট) সংগ্রহ করেছেন যা নিয়ে তদন্ত চলছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি শুধু সার্টিফিকেটই নেননি। ফাইনাল সার্টিফিকেটের সঙ্গে সঙ্গে ইন্টার্নশিপের ১২ মাসের বেতনও তুলেছেন। যা একজন সাধারণ চিকিৎসকের জন্য কঠিন ও দীর্ঘ প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়।
সাধারণ ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে বেতন উত্তোলনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ওয়ার্ডের ক্লিনিক্যাল অ্যাটেনডেন্ট ও বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর ও সিল বাধ্যতামূলক। এসব পদক্ষেপ ছাড়া কোনো বেতন উত্তোলন সম্ভব নয়। সেই জায়গায় ছয় মাসের শাস্তিপ্রাপ্ত একজন ব্যক্তি কীভাবে চুপিসারে সার্টিফিকেট এবং পুরো বেতন তুলেছেন সেটি রহস্যজনক।ৎ
এ বিষয়ে মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আজিজুল হক আজাদ বলেন, আমরা তদন্ত করছি। এটি শেষ হলে প্রতিবেদন দিবো। আইন অনুযায়ী সুপারিশ করবো শাস্তির। আমারা তার বেতন তোলার বিষয়টিও খোঁজ নিচ্ছি।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এফ এম শামীম আহমদ বলেন, সিয়াম সব কিছু খুব চালাকি করে সই নকল করে হাতিয়ে নিয়েছে। তবে এটি খুবই বিরল ঘটনা। আমরা তদন্ত করে দেখছি। সে টাকাও নিয়ে গেছে। এসব নিয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
তিনি আরও বলেন, পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে এমন কিছু না ঘটে এজন্য আমার আমাদের সিস্টেমে কিছু আপডেটও করেছি। বিএডিসির কাছেও বিষয়টি জানিয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাখাওয়াত হোসেন/আরএইচ/এএসএম