নরসিংদীতে মাইক্রো-ট্রাক সংঘর্ষ
পরিবারের উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বাবা-মা
পরিবারের উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে মায়ের আহাজারি, ইনসেটে নিহত আলআমিন।
নরসিংদীতে মাইক্রোবাসের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষে নিহত ঝালকাঠির রাজাপুরের আল-আমিনের (২৯) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা। শোকে বিহ্বল স্বজনরাও।
রাজাপুর উপজেলার পাড়গোপালপুর গ্রামের আব্দুল গনির সাত ছেলে-মেয়ের মধ্যে বড় আল-আমিন। সাভার ইপিজেড এলাকার একটি পোশাক কারখানায় রং ডিজাইনের কাজ নেন তিনি। তার পাঠানো টাকায় চলতো সংসার।
আরও পড়ুন: নিহতরা ছিলেন সহকর্মী, যাচ্ছিলেন আনন্দ ভ্রমণে
নিহত আল-আমিনের মা শাহিনা মাশপিয়ারা পারছু বলেন, ছেলে অফিসের সবার সঙ্গে সিলেট যাওয়ার বিষয়টি আমাকে জানায়। কিন্তু না করিনি। ভাববে টাকা খরচ করে এজন্য বারণ করিনি। কিন্তু এমন হবে জানলে যেতে দিতাম না। বারণ করলে আমার ছেলেও যেত না।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ফোন দিয়ে আমাকে শরীরের যত্ন নিতে বলে এবং বাবার ওষুধ ও ভাগনির জামা কিনেছি কি না খবর নেয়। শেষ রাতে খবর পাই ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে।
বুধবার ছেলের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে জানিয়ে বাবা আব্দুল গনি বলেন, শরীর ভালো না, পেটে গ্যাসের সমস্যার বিষয়টি জানালে আল-আমিন দুই হাজার টাকা পাঠায়। বৃহস্পতিবার সেই টাকা দিয়ে ওষুধও কিনেছি। কিন্তু শেষ রাতে শুনি ছেলে আর নেই। কিছুতেই মনটাকে বুঝাতে পারি না, মানাতে পারছি না।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ৭
‘সংসারের খরচ চালাতে পোশাক কারখানায় ডিজাইনারের চাকরি নেয় ছেলে। কিন্তু এখন কী হলো, সংসার চলবে কীভাবে।’ বিলাপ করতে করতে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা আব্দুল গনি।
প্রতিবেশীরা জানান, নম্রভদ্র যুবক আল-আমিনের মৃত্যু মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে তাদের। বাড়িতে কোরবানির ঈদে আসার পর এখন ফিরবে তার মরদেহ এটা কোনোভাবে মানতে পারছেন না তারা। শনিবার নিজ বাড়িতে তার জানাজা ও দাফনের কথা আছে।
সাভার ইপিজেড এলাকার পোশাক শ্রমিকরা মাইক্রোবাসে সিলেটে ঘুরতে যাওয়ার পথে মধ্যরাতে নরসিংদীর শিবপুরে পাথারবাহী একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। নিহত হন চালকসহ ৭ জন।
মো. আতিকুর রহমান/এসজে/এএসএম