ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

ফাইনাল পরীক্ষা শেষ, ছুটিতে রঙিন হোক শৈশব

ফিচার ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৩:১৬ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

 

ফয়সাল হাবিব
ফাইনাল পরীক্ষা শেষ। এখন ছুটি। আর ছুটি মানেই যেন বাঁধনহারা আনন্দ। স্কুল বন্ধ, হোমওয়ার্কের চাপ নেই। শিশুদের কাছে এই সময়টা স্বাধীনতা আর অফুরান মজার। কিন্তু দীর্ঘ ছুটিতে অনেক অভিভাবকের মনেই প্রশ্ন জাগে, এই দীর্ঘ অবসর সময়ে শিশুদের কীভাবে ব্যস্ত ও আনন্দিত রাখা যায়! টিভি বা মোবাইল স্ক্রিনে মাত্রাতিরিক্ত সময় কাটানো কখনোই কাম্য নয়। বরং এই সময়টি ব্যবহার করা উচিত তাদের সৃজনশীলতা, শারীরিক সুস্থতা এবং পারিবারিক বন্ধনকে মজবুত করার জন্য।

ছুটি এই শব্দটি সব বয়সের মানুষের মনেই একরাশ স্বস্তি নিয়ে আসে। তবে আমাদের শিশুদের কাছে, বিশেষ করে গ্রীষ্মের বা শীতের লম্বা ছুটি, আনন্দের সঙ্গে নিয়ে আসে এক চ্যালেঞ্জ: একঘেয়েমি। একদিকে তারা যেমন সকালে দেরিতে ওঠার বা নিয়মভাঙার স্বাধীনতা উপভোগ করে, তেমনি অন্যদিকে অফুরন্ত সময় হাতে থাকায় খুব দ্রুতই তারা বিরক্ত হয়ে ওঠে। এই সময়টাতেই অনেক অভিভাবক চিন্তিত হন যে, কীভাবে সন্তানের এই বাড়তি সময়টুকুকে গঠনমূলকভাবে কাজে লাগাবেন এবং তাদের খুশি ও ব্যস্ত রাখবেন। দীর্ঘ অবকাশকালে একটি শিশুকে মানসিক ও শারীরিকভাবে সক্রিয় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছুটি সবার কাছেই আনন্দের, বিশেষ করে শিশুদের জন্য। স্কুলের রুটিন থেকে মুক্তি পেয়ে তারা যে স্বাধীনতা উপভোগ করে, তার মধ্যে আনন্দের পাশাপাশি কিছুটা একঘেয়েমিও লুকিয়ে থাকে।

childদীর্ঘ সময় ধরে কোনো নির্দিষ্ট কাজ ছাড়াই সময় কাটানো শিশুদের মধ্যে বিরক্তি ও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।অনেক অভিভাবকই এই দীর্ঘ ছুটির সময়গুলোকে কীভাবে অর্থপূর্ণ ও উপভোগ্য করতে পারেন তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন। তারা এমন কিছু কার্যক্রম খুঁজে বেড়ান যা তাদের সন্তানদের শুধু ব্যস্তই রাখবে না, বরং আনন্দও দেবে। প্রকৃতপক্ষে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য ছুটির এই সময়গুলোকে গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই লেখাটিতে আমরা সেইসব কার্যকর টিপস নিয়ে আলোচনা করব, যা আপনার সন্তানকে ছুটির দিনগুলোতে আনন্দময় ও সৃজনশীল কাজে ডুবে থাকতে সাহায্য করবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, দীর্ঘ ছুটির দিনগুলোতে শিশুদের সক্রিয় ও উৎসাহিত রাখার কিছু কার্যকরী উপায়।

সৃজনশীল হাতের কাজ ও শিল্পকলা
শিশুদের ভেতরের শিল্পীকে জাগিয়ে তোলার এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর হয় না। তাদের সহজ উপকরণ দিন কাগজ, রং, আঠা, পুরোনো বাতিল জিনিস। তাদের শেখান অরিগামির মতো সূক্ষ্ম শিল্প, বা সাধারণ ড্রয়িংয়ের মাধ্যমে মন খুলে আঁকা। বাতিল জিনিস দিয়ে নতুন ক্রাফট তৈরি করা তাদের সৃজনশীলতার পাশাপাশি রিসাইক্লিং সম্পর্কেও শেখাবে। এটি তাদের ধৈর্য বাড়াতে এবং একাগ্রতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত রাখুন। শিশুদের সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার জন্য সময় নির্দিষ্ট করুন। ছবি আঁকা, মাটির কাজ, কারুশিল্প, ব্লক বিল্ডিং বা শব্দ তৈরির মতো কার্যকলাপগুলো তাদের সৃজনশীলতা, সূক্ষ্ম মোটর দক্ষতা এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতাকে তীক্ষ্ণ করে তোলে। তাদের কল্পনাকে উৎসাহিত করুন এবং যে কোনো প্রচেষ্টার জন্য প্রশংসা করুন। এই ধরনের কাজগুলো শেখায় যে একটি সমস্যার একাধিক সমাধান থাকতে পারে, যা ভবিষ্যতে তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে।

childসবুজের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও রান্নাঘর
প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা মনকে শান্ত করে। আপনার সন্তানকে বাগান পরিচর্যার কাজে যুক্ত করুন। তারা ছোট চারা রোপণ করতে পারে, গাছের পানি দেওয়ার দায়িত্ব নিতে পারে, বা একটি ছোট হার্ব গার্ডেন (ভেষজ বাগান) তৈরি করতে পারে। নিজের হাতে লাগানো বীজ থেকে চারা গজাতে দেখলে তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ এবং প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা তৈরি হবে। রান্না একটি অত্যাবশ্যকীয় জীবন দক্ষতা। ছুটির এই সময়টা ব্যবহার করে তাদের রান্নাঘরের সহজ কাজে যুক্ত করুন। স্যান্ডউইচ, ফ্রুট সালাদ বা কুকিজ বানানোর মতো সহজ রেসিপি শেখান। এটি তাদের গণিত (মাপজোখ করার সময়), বিজ্ঞান (উপকরণ মিশ্রণের প্রক্রিয়া) এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে ধারণা দেবে। নিরাপদ এবং মজাদার রান্নার মাধ্যমে তারা আত্মবিশ্বাস লাভ করবে।

বই পড়ার চ্যালেঞ্জ
বই হলো শ্রেষ্ঠ সঙ্গী। ছুটির সময় তাদের জন্য একটি ‘বই পড়া চ্যালেঞ্জ’ সেট করুন। নির্দিষ্ট সংখ্যক বই পড়ার লক্ষ্য দিন এবং সফল হলে ছোট কোনো উপহার বা পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখুন। এটি তাদের পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়াবে এবং ভবিষ্যতে ভালো পাঠক হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে। বই পড়া শিশুদের কল্পনাশক্তি, ভাষা দক্ষতা এবং জ্ঞান বিকাশের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। আপনি কর্মজীবনে যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, প্রতিদিনের রুটিনে ‘একসঙ্গে পড়ার সময়’ বরাদ্দ করুন। এটি ছোটদের জন্য রঙিন ছবির বই হোক বা বড়দের উপযোগী গল্প পারিবারিকভাবে পাঠাভ্যাস জরুরি। গল্পের বিষয়বস্তু নিয়ে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন এবং আলোচনা করুন। এই আলোচনা শিশুদের সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা তৈরি করতে এবং তাদের অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে সাহায্য করে। এই অভ্যাস তাদের ভবিষ্যতের জন্যও ভিত তৈরি করে।

শারীরিক কার্যক্রম, সামাজিক কাজ ও বিনোদন
শরীরকে সচল রাখা খুব জরুরি। ছুটির দিনে তাদের সাইকেল চালানো, ব্যাডমিন্টন বা ক্রিকেট খেলার জন্য বাইরে নিয়ে যান। যদি বাইরে যাওয়া সম্ভব না হয়, তবে বাড়িতেই একটি নাচের কম্পিটিশন বা ইনডোর স্পোর্টসের আয়োজন করুন। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ তাদের অতিরিক্ত শক্তিকে সঠিক পথে চালিত করবে এবং তারা সুস্থ থাকবে। ছুটির দিনে শুধু নিজের গণ্ডিতে আটকে না থেকে বাচ্চাদের সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। বন্ধু বা আত্মীয়দের বাড়িতে যাওয়া, তাদের সঙ্গে ছোট একটি পিকনিকের আয়োজন করা, বা কোনো ছোট পারিবারিক প্রজেক্টে (যেমন পুরোনো খেলনা গুছিয়ে দান করা) তাদের অংশগ্রহণ করানো দরকার। এটি তাদের সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং মানুষের সঙ্গে মিশতে শেখায়।শিশুদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য তাদের মুক্ত পরিবেশে সময় কাটানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ছুটিতে শিশুদের বাড়ির চার দেওয়ালের বাইরে নিয়ে যান পার্ক বা খেলার মাঠে। সাইকেল চালানো, সাঁতার শেখা, অথবা প্রকৃতির কাছাকাছি হেঁটে বেড়ানো শুধু সময় কাটানোর উপায় নয়, বরং এটি তাদের মানসিক বিকাশে সহায়ক। আউটডোর খেলাধুলা শারীরিক সুস্থতা বাড়ায়, অতিরিক্ত শক্তিকে সঠিক পথে চালিত করে এবং অবসাদ দূর করে মনকে সতেজ করে তোলে।

Childখাদ্যাভ্যাস ও পারিবারিক বন্ধন
একটি পরিবার হিসেবে একসঙ্গে খাবার গ্রহণ শুধু স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার জন্যই নয়, এটি পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় করার এক সোনালি সুযোগ। প্রতিদিন কমপক্ষে একবেলা খাবার সবাই একসঙ্গে খাওয়ার চেষ্টা করুন। এই সময়টুকুকে সারাদিনের গল্প, ভালো-মন্দ অভিজ্ঞতা বা সমসাময়িক কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য ব্যবহার করুন। শিশুদের মতামত জানতে চান। এই অভ্যাসটি তাদের জীবনে সুন্দর স্মৃতি হয়ে থাকবে এবং সম্পর্কের গভীরতা বাড়াবে। ঘরে বসেই নিরাপদ ও সহজ কিছু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করুন। যেমন-বেকিং সোডা ও ভিনিগার ব্যবহার করে আগ্নেয়গিরির মডেল তৈরি, বা আগুন ছাড়া পপকর্ন ফোটানোর (যদি নিরাপদ পদ্ধতি জানা থাকে) মতো ছোটখাটো কার্যকলাপ। এই পরীক্ষাগুলো তাদের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ জন্মাবে এবং ‘কেন’ ও ‘কীভাবে’ জাতীয় প্রশ্ন করার প্রবণতা বাড়াবে।

শিক্ষামূলক কার্যক্রম, কাজ ও দায়িত্ব দিন
কাজে মনোযোগ দিন। ধাঁধা সমাধান করা, শিক্ষামূলক বোর্ড গেম খেলা, ঘরে সহজ বিজ্ঞান পরীক্ষা করা বা গাণিতিক দক্ষতা অনুশীলন এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। এই কাজগুলো অবশ্যই শিশুর বয়স এবং আগ্রহ অনুসারে তৈরি করা উচিত। মূল লক্ষ্য হলো শেখাকে একটি আনন্দদায়ক প্রক্রিয়া হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা, যাতে তারা পড়াশোনাকে কখনই বোঝা মনে না করে। সময় কাটানোর একটি চমৎকার এবং গঠনমূলক উপায় হলো আপনার সন্তানদের বয়স-উপযোগী বাড়ির ছোটখাটো কাজে নিযুক্ত করা। এতে তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ এবং প্রয়োজনীয় জীবন দক্ষতা শেখার সুযোগ তৈরি হবে। ঘর গোছানো, কাপড় ভাঁজ করা, ডাইনিং টেবিল সেট করা বা সহজভাবে লন্ড্রিতে সাহায্য করার মতো কাজগুলোর দায়িত্ব দিন। তাদের এই প্রচেষ্টার প্রশংসা করুন এতে তারা সংগঠন, দলবদ্ধ কাজ এবং ব্যক্তিগত জবাবদিহিতা সম্পর্কে সচেতন হতে শিখবে।

নৈতিক শিক্ষা
স্কুল, কোচিং এবং টিউটরের ভিড়ে আজকাল শিশুদের নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। ছুটির সময়টা এই ঘাটতি পূরণের জন্য ব্যবহার করুন। তাদের ধর্মীয় জ্ঞান, বিধি-বিধান এবং নৈতিক মূল্যবোধ সম্পর্কে সচেতন করুন। ভালো-মন্দ বুঝতে শেখান। মানুষকে সহযোগিতা করা, অন্য প্রাণীর প্রতি দয়া দেখানো এবং সবার সঙ্গে ভালো আচরণ করার যে শিক্ষা, তা তাদের অন্তরে গেঁথে দিন। ছুটির সময়টি কেবল বিশ্রাম বা বিনোদনের জন্য নয়, এটি নৈতিক শিক্ষার ভিত্তি আরও দৃঢ় করার এক চমৎকার সুযোগ। বিদ্যালয়ের কাঠামোগত পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এসে বাস্তব জীবনে নৈতিক মূল্যবোধগুলি অনুশীলন করার মাধ্যমে এই সময়ে নৈতিক শিক্ষা অর্জন করা সম্ভব।

ছুটির সময় শিক্ষার্থীরা পরিবারকে বেশি সময় দিতে পারে। এই সময়টিতে তাদের পারিবারিক দায়িত্ব পালনের অভ্যাস করা উচিত। যেমন-বাবা-মা বা বয়স্কদের কাজে সাহায্য করা, ছোট ভাই-বোনদের দেখভাল করা, অথবা ঘর গোছানোর মতো ছোটখাটো কাজে অংশ নেওয়া। এই দায়িত্ববোধের অনুশীলন তাদের মধ্যে সেবাপরায়ণতা, সহানুভূতি এবং কর্তব্যনিষ্ঠার মতো নৈতিক গুণাবলি জাগিয়ে তোলে। পারিবারিক সহযোগিতা শেখায় যে জীবনে কেবল নিজের সুবিধা দেখাই আসল কথা নয়, বরং যৌথভাবে ভালো থাকাটা জরুরি। নৈতিক শিক্ষা অর্জনের এক অন্যতম সেরা উপায় হলো স্বেচ্ছাসেবী কাজে অংশগ্রহণ। স্থানীয় কোনো দাতব্য সংস্থা, বৃদ্ধাশ্রম, অনাথ আশ্রম, বা পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে যুক্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা সরাসরি সমাজের জন্য কিছু করার সুযোগ পায়। এর মাধ্যমে তারা ত্যাগ, নিঃস্বার্থতা, এবং অন্যের প্রতি সংবেদনশীলতা অর্জন করে। অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এই অভিজ্ঞতা তাদের মনে মানবিক মূল্যবোধকে গভীরভাবে প্রোথিত করে।

childগুণগত সময় কাটান
সবশেষে ছুটির এই মূল্যবান দিনগুলোতে আপনার সন্তানদের সঙ্গে গুণগত মানসম্পন্ন সময় কাটানো নিশ্চিত করুন। নিছক উপস্থিতি নয়, বরং পুরোপুরি মনোযোগ সহকারে তাদের পাশে থাকুন। এটি হতে পারে একসঙ্গে একটি প্রিয় বোর্ড গেম খেলা, পারিবারিক ভ্রমণ বা তাদের পছন্দের শখের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করে সমর্থন জানানো। কর্মজীবী বাবা-মায়েরা সারা বছরই কর্মব্যস্ত থাকেন। তাই বাৎসরিক ছুটিগুলো যদি শিশুর স্কুলের ছুটির সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে একত্রে নেওয়া যায়, তবে অল্প দিনের জন্য হলেও পরিবারের সবাই একসঙ্গে থাকার সুযোগ পায়।

এই ছুটিতে শিশুকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে সময় কাটাতে যাওয়া এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিতে পারে। প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে নতুন গাছপালা চেনা এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ তৈরি হয়। যদি গ্রামে যাওয়া সম্ভব না হয়, তবে ঢাকার বাইরে কাছাকাছি কোনো রিসোর্ট বা ঐতিহাসিক স্থানে যেতে পারেন। এছাড়াও ঢাকার ভেতরেও রয়েছে শিক্ষার সুযোগ। আপনার সন্তান যদি এখনও লালবাগ কেল্লা, জাদুঘর, আহসান মঞ্জিল, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, চিড়িয়াখানা বা বোটানিক্যাল গার্ডেন না দেখে থাকে, তবে এই ছুটিতে ঐতিহাসিক বা বিখ্যাত জায়গাগুলো পরিদর্শনের সুযোগ করে দিন।

সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করতে মামা, খালা, ফুফু, চাচার বাসায় শিশুদের থাকার ব্যবস্থা করতে পারেন। এতে তারা অন্যদের সঙ্গে মিশতে এবং সামাজিক সম্পর্ক মজবুত করতে শিখবে। অথবা নিকটাত্মীয়দের ছোট বাচ্চাদের আপনার বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। এই সামাজিক মেলামেশা শিশুদের সময়কে আরও আনন্দময় করে তুলবে এবং তাদের চমৎকার সব স্মৃতি তৈরি হবে।শিক্ষা শুধু ক্লাসরুমের চার দেওয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই ছুটিতে তাদের নিয়ে যান বিভিন্ন শিক্ষণীয় স্থানে। একটি জাদুঘরে গিয়ে ইতিহাস বা বিজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, লাইব্রেরিতে গিয়ে নতুন বইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, অথবা চিড়িয়াখানায় গিয়ে বন্যপ্রাণীদের সম্পর্কে জানা এই ভ্রমণগুলো তাদের কৌতূহল বাড়াতে এবং বাস্তব জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য।

আরও পড়ুন
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা
নারী জাগরণের অগ্নিশিখা বেগম রোকেয়া

লেখক: প্রভাষক, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বাঞ্ছারামপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ

কেএসকে/

আরও পড়ুন