ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

কাঠফাটা রোদে হলদে পা হরিয়ালের ডাক

মামুনূর রহমান হৃদয় | প্রকাশিত: ১১:২৬ এএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

‘লুটায়ে রয়েছে কোথায় সীমান্তে শরৎ-উষার শ্বাস! ঘুঘু-হরিয়াল-ডাহুক-শালিখ-গাঙচিল-বুনোহাঁস’ কবি জীবনানন্দ দাসের ‘বেদিয়া’ কবিতায় এভাবেই স্থান পেয়েছে গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় পাখি হরিয়ালের নাম। একসময় গ্রাম-বাংলার মানুষের মুখে মুখে উচ্চারিত হতো এই পাখির নাম।

অলস দুপুরে কাঠ ফাটা রোদে কানে ভেসে আসত অদ্ভুত এক পাখির ডাক। নাম তার ‘হলদে পা হরিয়াল’। তাদের কলকাকলিতে মাতিয়ে রাখত সারা দুপুর। তাদের কণ্ঠের জাদুতে মন হয়ে উঠত প্রফুল্ল। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি আমাদের গ্রামীণ পরিবেশ থেকে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশবান্ধব এই পাখি।

আরও পড়ুন: অবহেলিত রেলের লাল পোশাকের শ্রমিকরা

বাংলাদেশে ছয় প্রজাতির হরিয়াল পাখির সন্ধান পাওয়া যায়। হলদে পা হরিয়াল, ঠোঁটমোটা হরিয়াল, ছোট হরিয়াল, কমলাবুক হরিয়াল, ল্যাঞ্জা হরিয়াল ও গেঁজলেজ হরিয়াল। এদের মধ্যে বেশি দেখতে পাওয়া যায় হলদে পা হরিয়াল পাখি। হলদে পা হরিয়ালের ইংরেজি নাম ইয়েলো ফুটেড। বৈজ্ঞানিক নাম ট্রেরন ফিনিকপ্টেরা।

এরা লম্বায় ২৫ থেকে ৩৩ সেন্টিমিটার হয়। হলদে পা হরিয়ালের শরীরের ওপরের অংশের রং হালকা ধূসর, ঘাড়ে লালচে ছোপ ও ডানায় সবুজাভ কালোর ওপর হলদে টান রয়েছে। বুকের নিচের অংশ, পেট ও তলপেট ধূসর। কাঁধে হালকা বেগুনি রং। লেজের ওপরের অংশের গোড়ায় জলপাই-হলদে বলয় থাকে। চোখের আইরিশের ভিতরের অংশ নীল ও বাইরে গোলাপি, ঠোঁটের রং সবুজাভ , পা চকচকে হলুদ।

যেখানে বটগাছ সেখানেই এই পাখি বেশি দেখা যায়। কারণ এই পাখির প্রিয় খাবার বটফল। এরা বটসহ বিভিন্ন গাছের ফল খেয়ে বেঁচে থাকে। বটের সাথে বাদাম আর বীজ থাকে এদের খাদ্য তালিকায় । এই পাখি ভারতের মহারাষ্ট্রের জাতীয় পাখির মর্যাদা পেয়েছে।

আরও পড়ুন: স্বপ্নভূমির অন্ধকার আগামী/ক্ষুধার মৌসুম নেই, শেষ হয়নি শিশুদের দুর্ভোগ

শীতকাল হচ্ছে হরিয়ালের প্রজনন সময়। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে একটি মেয়ে হরিয়াল দুটি ডিম পাড়ে। তারপর ডিম ফুটে বাচ্চা হতে সাধারণত ১৬ থেকে ১৮ দিনের মতো সময় লাগে।

সচেতনমহলের মতে, জলবায়ুর পরিবর্তনে হলদে পা হরিয়াল প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। মানুষ তার প্রয়োজনে বটগাছ, খেজুর গাছ, নাকুড়গাছ ইত্যাদি নির্বিচারে কেটে ফেলায় তাদের আবাসস্থল হারিয়ে যাচ্ছে। গাছ সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা ছাড়া হলদে-পা হরিয়ালের অস্তিত্ব রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

কেএসকে/এএসএম

আরও পড়ুন