করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট: আগের থেকে কতটা ভিন্ন

ডা. রিফাত আল মাজিদ
করোনাভাইরাসের আগের ভ্যারিয়েন্ট যেমন ডেলটা ও ওমিক্রন আমাদের অনেক ভয় দেখিয়েছে। সেগুলোর উপসর্গ ছিল তীব্র-উচ্চ জ্বর, শ্বাসকষ্ট, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া পর্যন্ত অবস্থা। কিন্তু বর্তমানে পাওয়া নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলো (যেমন JN.1 বা FLiRT) আগের চেয়ে কিছুটা আলাদা আচরণ করছে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
প্রথম পার্থক্য হচ্ছে সংক্রমণের গতি। নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলো অনেক দ্রুত ছড়ায়। একজন আক্রান্ত ব্যক্তি সহজেই অনেকজনকে সংক্রমিত করতে পারেন, এমনকি উপসর্গ হালকা থাকলেও। দ্বিতীয় বিষয়টি হলো লক্ষণ। নতুন ভ্যারিয়েন্টে সাধারণত হালকা উপসর্গ দেখা যায়-সর্দি, কাশি, হালকা জ্বর বা গলা ব্যথা। অনেক সময় মনে হয় এটি বুঝি সাধারণ ঠান্ডা, ফলে মানুষ অবহেলা করে বাইরে চলাফেরা করে, যা ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি বাড়ায়।
তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হলো ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা। আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোতে ভ্যাকসিন খুব ভালোভাবে সুরক্ষা দিত, তবে নতুন ভ্যারিয়েন্টে ভাইরাসের গঠন কিছুটা বদলে যাওয়ায় পুরোনো টিকার কার্যকারিতা কিছুটা কমে যেতে পারে। যদিও ভ্যাকসিন এখনো মারাত্মক জটিলতা রোধে সহায়ক, তবু বুস্টার ডোজ নেওয়া বা টিকা হালনাগাদ করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
চতুর্থ পার্থক্যটি সচেতনতার ধরণে। আগের ভ্যারিয়েন্টের সময় মানুষ উপসর্গ বুঝলেই সতর্ক হতো, পরীক্ষা করাতো বা আলাদা থাকতো। কিন্তু এখন হালকা উপসর্গ দেখে অনেকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না, ফলে ভাইরাস চুপিসারে ছড়িয়ে পড়ে। তাই নতুন ভ্যারিয়েন্ট মোকাবেলায় সচেতনতা আরও সূক্ষ্ম ও দায়িত্বশীল হতে হবে।
আগের ভয়াবহতা কমলেও নতুন ভ্যারিয়েন্টের দ্রুত সংক্রমণ ও হালকা উপসর্গের কারণে ঝুঁকি এখনো আছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মানা, উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করা এবং টিকা নেওয়ার মতো অভ্যাসগুলো আমাদের সুরক্ষার প্রধান হাতিয়ার।
বিজ্ঞাপন
লেখক: চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য গবেষক, ফেলো, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী।
কেএসকে/জিকেএস
বিজ্ঞাপন