সরিষা ফুলের স্বাস্থ্য উপকারিতা
ছবি: সংগৃহীত
শীত এলেই মাঠ-ঘাট ভরে ওঠে হলুদ রঙের সরিষা ফুলে। মানুষ ছবি তোলে, কবিতা লেখে, মন ভিজিয়ে নেয়। কিন্তু বেশিরভাগই জানে না, এই সৌন্দর্যের আড়ালেই লুকিয়ে আছে বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা। সরিষা ফুল শুধু চোখের আরাম নয়, শরীরের জন্যও নীরবে কাজ করে যাচ্ছে। অবহেলা করার মতো জিনিস না, একেবারেই না।
সরিষা ফুলে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে শীতকালে সর্দি-কাশি, জ্বরের প্রবণতা কমাতে সরিষা ফুলের ভূমিকা বেশ কার্যকর।

- সরিষা ফুলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় সরিষা ফুল থাকলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে এবং শরীর তুলনামূলকভাবে বেশি সুরক্ষিত থাকে। শীতের সময় যখন সবাই অসুখে ভোগে, তখন এটা বেশ কাজে আসে।

- সরিষা ফুল হজমের জন্য উপকারী। এতে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান পাকস্থলীর কার্যকারিতা বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। গ্রামবাংলায় সরিষা ফুল ভাজি বা ভর্তা খাওয়ার চল আছে, সেটা হঠাৎ করে তৈরি হয়নি।
- সরিষা ফুলে থাকা উপকারী চর্বি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদ্যন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়ক, ফলে হৃদ্রোগের ঝুঁকিও কিছুটা কমে।

- ভিটামিন এ ও সি ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরিষা ফুল ত্বকের শুষ্কতা কমাতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি চুলের গোড়া মজবুত করতেও এর ভূমিকা রয়েছে। আলাদা করে দামি কিছু না খেলেও প্রকৃতি নিজেই অনেক কিছু দিয়ে দিয়েছে। এছাড়া ক্যালসিয়াম ও আয়রনের ভালো উৎস হওয়ায় সরিষা ফুল হাড় ও দাঁত শক্ত রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে নারীদের জন্য এটি বেশ উপকারী, কারণ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড় দুর্বল হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

কীভাবে খাওয়া ভালো
সরিষা ফুল ভাজি, ভর্তা, ভাপে বা অন্যান্য শাকসবজির সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায়। তবে অতিরিক্ত তেল বা মসলা ব্যবহার না করাই ভালো, না হলে উপকারিতা অনেকটাই কমে যায়।
সব মিলিয়ে সরিষা ফুল কেবল প্রকৃতির সাজ নয়, এটি এক ধরনের মৌসুমি সুপারফুড। একটু সচেতন হলে এই হলুদ ফুলই শীতের দিনে শরীর ভালো রাখার কাজে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। সুন্দর জিনিস শুধু দেখার জন্য নয়, খাওয়ার জন্যও হয় এই কথাটা সরিষা ফুল বারবার মনে করিয়ে দেয়।
তথ্যসূত্র: ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউট্রিশন, ইন্ডিয়া
জেএস/