ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সাহিত্য

মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামের কবিতা: নিভৃতহারা

সাহিত্য ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৬:৫২ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০২৫

স্বপ্ন ছিল এক প্রকার দিব্যলোক,
যেখানে নিজস্বতা ছিলো ছায়ার মতো
চুপচাপ, কিন্তু আমার, নিভৃত।
তখন হৃদয়ের ঘূর্ণিতে জন্মাতো জ্যোৎস্না,
প্রতিটি একাকিত্ব ছিল আত্মগত
উৎসব, নেশাও বটে।
আমি ছিলাম এক জোড়া খালি চোখ,
যা ভবিষ্যতের আলো খুঁজতো,
যেখানে প্রতিটি প্রতিশ্রুতি ছিল
আকাশে ভাসমান কুয়াশার প্রান্তে লেখা আশ্বাস।

তারপর একদিন—
একটি সামাজিক সিদ্ধান্ত নেমে এলো
ঘুমের ভেতর অজান্তে
নিবৃত্তির ওপর।

তার নাম ছিল—ঘর;
একখান সাধের ঘর।
তার রূপ—এক অবিরাম সম্পর্কের
প্রহর গণনা। সে আমাকে আচ্ছন্ন করলো
আকাঙ্ক্ষার অতিরিক্ত রূপে,
একটি নারী, যার হৃদয় নয়,
ছিল কেবল চাহিদা ও চেতনার সংঘাত,
যার প্রতিটি হাসি ছিল জিজ্ঞাসা,
প্রতিটি নীরবতা ছিল অভিযোগ।

আমার নিভৃত নদী
জমে গেলো শব্দদূষণের বরফে।
আমি আর আমি নই—
আমি এখন একজন পুরুষ,
যার পরিচয় মাত্র: উত্তরদায়ী, উপার্জনশীল, অপরাধী।

আমি বিসর্জন করলাম নিজস্বতা,
উপাসনালয়ের মাটি দিয়ে গড়া সংসারে।
যেখানে নিজের বলতে কেউ নেই,
আছে কেবল কর্তব্যের নিরবচ্ছিন্ন স্বর।
আজ আমি ‘ভালো’—
এই শব্দটি আমার ঠোঁটের গহীনে প্রতিদিন পচে যায়,
যেমন পচে যায় নদীর জল পাথরের মুখে।

নশ্বর ধরিত্রীর অট্টহাসি
পচা গাত্রে আগুন ধরায়,
পচন আর পুড়ে যাওয়া অতি সাধারণ।
তবু আমি হাসি,
কারণ আমার কান্না পুরুষোচিত নয়।

তবু আমি বাঁচি,
কারণ মৃত্যুও এই যন্ত্রণার তুলনায় অনুচিত।

আমি নিভৃতহারা—
সেই পুরুষ, যে আর নিজের ভেতর নেই।
মহাকালের যাত্রায়
নিরুদ্দেশ পানে।

কবি: সহকারী অধ্যাপক- বাংলা, বিঘা আহমদিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা, লক্ষ্মীপুর।

এসইউ/জিকেএস

আরও পড়ুন