ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সাহিত্য

দিবাকর রায়ের তিনটি কবিতা

প্রকাশিত: ০৮:১৮ এএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বহুকালের চেনা গন্ধে

পায়ে পায়ে দোল খেলে যায়-কোমলতায় ভরা
কোন এক শিশু সূর্যের টোলপড়া মুখে
দোয়েল-শ্যামা-শালিকের ভোরের মাদলে
হলুদ প্রান্তর বিষাদ ভুলেছে বিমুগ্ধতায়!
রাখালী বাঁশির টলটল ময়ূরাক্ষী জলে
মাটির কলসি ভরেছে এক কালো মেয়ে।
ধূসরতা ডেকে আনে বসন্ত বাতাস
নিঃশব্দে বলে যায়- ফোটো শিমুল;
কচি শাখে ভ্রমর এসেছে আজ
মালা গাঁথো কৃষ্ণচূড়ার রঙে।
আলোকসজ্জা রূপে জোনাকির ক্লান্তি ঘোচাতে
এসেছে কমলা জ্যোৎস্না রাত ঐ দূরের হিজল-কদম বনে!
নিশাচর সাক্ষী থাকে নীরবতার;
মানিক শিয়রে ঘুম নিয়ে আয় গানে!

সমবেদনা সর্বজনীন নই

একবার এক রোদমাখা দুপুরে
মনের খেয়ালে ঢিল ছুঁড়েছিলাম উঠানের জবাঝোপে।
খসে পড়ল কিছু সবুজপাতা একটা অর্ধফোটা ফুল
আর একটা ছোট্ট চড়ুইপাখি।
তড়িঘড়ি পাখিটিকে হাতে তুলে নিয়ে ঠোঁটে
দু’ফোঁটা জল দেওয়ার আগেই নিস্তেজ হয়ে
পড়ে রইলো মুঠোর কোল ঘেঁষে।

রঙিন জীবনের নিষ্পাপ চঞ্চলতায়
মুখরিত জীবনানন্দ নিমিষে মর্মভেদী বেদনা!
তাই; সেদিন বাল্যকালের জমাট দুঃখ ঘিরে ছিল আমাকে।
প্রতীক্ষারত ছিলাম দুপুর থেকে গোধূলি পর্যন্ত;
হয়তো অন্য পাখিগুলো দেখতে আসবে হতভাগ্য পাখিটিকে,
সমবেদনা জানাবে সজল চোখে!

হ্যাঁ, এলো শেষমেষ পাখিকে দেখতে! তবে
একটি বিড়াল, মুখে তুলে নিল নিথর পাখিটিকে।
সমবেদনা জানালো না, জল এলো না চোখে!
ক্ষুধা নিবারণের আনন্দে লুটেপুটে খেয়ে নিল,
পড়ে রইলো দেহাবশেষ।।

অনুপ্রেরণার অক্সিজেন

বেশি কিছু চাওয়ার নেই
দেওয়ার নেই তেমন কিছুই
নষ্ট-ভ্রষ্ট এই সমাজের বিষাক্ত থাবাগুলো
উপচেপড়া ভালোবাসার কতইবা মূল্য দেবে?
চারিদিকে ধূসর দেয়াল আর আমার
চিরমুক্তির হাহাকার প্রতিধ্বনিত হয়ে
ফিরে আসে রাত-দিন বারবার।
দীর্ঘশ্বাসে ভারি কার্বন-ডাই-অক্সাইড
বিস্ফোরিত হবে বলে আজও
প্রহর গুনে চলে সেই কবে থেকেই
আজও নিঃশ্বাসে বুক ভরি তোমার দেওয়া
অনুপ্রেরণাসিক্ত একমুঠো বিশুদ্ধ অক্সিজেনে।
তুমি দেখে নিও, মিলিয়ে নিও
কোন একদিন জ্বলে উঠবই
জ্বলতে জ্বলতে ফোঁটায় ফোঁটায়
গলে পড়বে কাঁটাতারের দূষিত শাসন
চলার পথে ঘাস গজাবে, ফুল ফুটবে
সবুজ পাতা আরো সজীব হবে, বাদামি রঙে
গা ভাসাবে না প্রথাগত বিশ্বাসী ঝড়ে
সেদিন আমি হব শুধুই আগুন
তুমি হবে ঝাঁঝালো মুক্তির অগ্নিগর্ভা।।

এসইউ/পিআর