ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

আ’লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা তোলার কথা বলেননি প্রধান উপদেষ্টা

ইসমাইল হোসাইন রাসেল | নিউইয়র্ক থেকে | প্রকাশিত: ০১:২৩ পিএম, ০১ অক্টোবর ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কোনো কথাই বলেননি বলে জানিয়েছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে যে নিষেধাজ্ঞা সেটি তুলে নেওয়ার কোনো চিন্তাভাবনা এই সরকারের নেই। নিষেধাজ্ঞা যেটা আছে, সেটাই থাকবে।

জাগো নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন শফিকুল আলম। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইসমাইল হোসাইন রাসেল

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে সম্প্রতি নিউইয়র্ক সফর করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অধিবেশনের ফাঁকে ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম জিটিওর মেহেদী হাসানকে একটি সাক্ষাৎকার দেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের নির্বাচন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। যেটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন:
আওয়ামী লীগকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য বিশ্বাসঘাতকতার শামিল
ড. ইউনূস কার চাপে এমন বক্তব্য দিচ্ছেন, জাতি জানতে চায়

জাগো নিউজ: প্রধান উপদেষ্টার একটি সাক্ষাৎকারকে উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম বলছে, কার্যক্রম স্থগিত থাকায় আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবে না। তবে তারা একটি বৈধ রাজনৈতিক দল হিসেবেই রয়েছে। যেকোনো সময় এ কার্যক্রম পুনরায় চালু করা সম্ভব। এটি নিয়ে এরইমধ্যে এনসিপি প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে।

শফিকুল আলম: এখানে যেটি হয়েছে যিনি সাক্ষাৎকারটি ট্রান্সলেট করেছেন সেখানে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা কখনই বলেননি যে তাদের যে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আছে সেটি খুলে নেওয়া হচ্ছে। উনি বলেছেন, ওদের স্ট্যাটাসটি কী সেটি জানিয়েছেন। এই নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। আমরা বলবো আপনি যদি ট্রান্সলেশন ঠিকমতো করতে না পারেন, একটা বাক্যের আগে তো উনি অনেক কথা বলেছেন। যেমন আওয়ামী লীগের স্ট্যাটাস কী, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম যে নিষিদ্ধ সেটি তিনি বলেছেন। আউট অব কনটেক্স একটা বক্তব্যকে যদি আপনি আলাদা করে নিয়ে যান তখন অনেক কিছু হয়। সামগ্রিক অর্থে দেখলে বুঝবেন উনি আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা বা তাদের কার্যক্রমের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কোনো কথাই বলেননি। এটার প্রশ্নই উঠে না।

জাগো নিউজ: তাহলে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধই থাকছে?

শফিকুল আলম: এটি একটি ট্রান্সলেশনজনিত সমস্যা। আমার মনে হয় পিআইবির বাংলা ফ্যাক্ট এটার একটা যথাযথ উত্তর দিয়েছে। আমি আপনাদের বাংলা ফ্যাক্ট দেখতে বলবো। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য কিন্তু স্পষ্ট যে আওয়ামী লীগের যে নিষেধাজ্ঞা সেটি উঠিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কোনো ধরনের কথা উনি বলেননি। নিষেধাজ্ঞা যেটা আছে সেটাই থাকবে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে যে নিষেধাজ্ঞা সেটি তুলে নেওয়ার কোনো চিন্তাভাবনা এই সরকারের নেই। সেই অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনও তাদের ওপর একটা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তারা নির্বাচন করতে পারবে না। সেক্ষেত্রে এটি তো স্পষ্ট লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার। কিন্তু অনেক সময় যারা অনুবাদ করেন তারা আসলে একটা বাক্যের আগে দেখেন না। একটা কন্টেক্সে তো কথা বলা হয়, কিন্তু একটা বাক্যকে আউট অব কন্টেক্সে নিলে অনেক সময় এ ধরনের মেসেজ যায়। কিন্তু এ মেসেজটা ভুল মেসেজ।

আরও পড়ুন:
জাতিসংঘ ৮০তম সম্মেলনে যোগদান শেষে ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানালেন রোহিঙ্গা নেতারা
বিশ্ব সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ফেরাতে আর অপেক্ষা করাতে পারে না

জাগো নিউজ: ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়টিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরই জোর দিয়ে আসছেন। তারপরও কোনো কোনো দল সংস্কারের পর নির্বাচনের কথা বলছেন। সার্বিকভাবে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কি কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা রয়েছে?

শফিকুল আলম: কোনো অনিশ্চয়তা নেই। আমরা আশা করছি যে জুলাই সনদ দ্রুত স্বাক্ষর হবে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়বে, সেখানে মনোনিবেশ করবে। আপনি যদি গ্রামগঞ্জে যান দেখবেন নির্বাচনের হাওয়া এসে পড়েছে। দেখবেন সব জায়গায় বড় বড় ব্যানার। যারা যারা সম্ভাব্য প্রার্থী, বারবার তাদের কথাগুলো জানাচ্ছেন। এটা দেখে বোঝা যায় নির্বাচনের জ্বরে সবাইকে পেয়েছে, জ্বরে সবাই আক্রান্ত। আমরা আশা করছি এই জ্বরটা ১০২, ১০৩, ১০৪ ডিগ্রিতে গেলে আরও বাড়বে।

আ. লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা তোলার কথা বলেননি প্রধান উপদেষ্টা

জাগো নিউজ: রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টার সফর বেশ বাহবা কুড়াচ্ছে। সার্বিকভাবে এর মাধ্যমে বিশ্ব কি বার্তা পেলো বলে মনে করেন?

শফিকুল আলম: এটি স্পষ্ট একটা মেসেজ আন্তর্জাতিক কমিউনিটিকে দেওয়া, বাংলাদেশের জনগণকে দেওয়া যে আমরা ডেমোক্রেটিক ট্র্যানজিশনের জন্য প্রস্তুত। এই যে প্রস্তুত সেটার জন্য উনি বাংলাদেশের প্রধানতম দলগুলোর প্রতিনিধিকে এখানে নিয়ে এসেছেন। এর মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে জানিয়েছেন যে আমরা এখন যে জায়গায় আছি, এই যে রাজনৈতিক দলগুলো তারাই যে ক্ষমতায় আসবে আমরা সেটি জানি না। কিন্তু রাজনৈতিক দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত। এই সরকার অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের যে কাজ সেগুলো করেছে। এখন তাদের কাজটা তারা সমাপন করবেন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধের মধ্যে। তারপর রাজনৈতিক দলের হাতে ক্ষমতা তিনি দেবেন। এই ক্ষমতা একটি রাজনৈতিক দল নেবে। এর মাধ্যমে গণতন্ত্রের উত্তরণ হলো। জাতিসংঘে অংশ নেওয়া বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন আলোচনা থাকে। সেখান থকে বিশ্বনেতারাও জেনেছেন বাংলাদেশ দ্রুতই একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন:
জাতিসংঘ মহাসচিব ও ইউএনএইচসিআর প্রধানের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক
এলডিসি উত্তরণে বাংলাদেশের প্রস্তুতি মূল্যায়নে সহায়তা দেবে জাতিসংঘ

জাগো নিউজ: ধন্যবাদ আপনাকে

শফিকুল আলম: আপনাকেও ধন্যবাদ

আইএইচআর/এসএনআর/এমএমএআর/এএসএম