ঢাকার আসনগুলোতে ধানের শীষের কান্ডারি হতে চান যারা
মেহনাজ মান্নান, আমানউল্লাহ আমান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, তানভীর আহমেদ রবিন, ইশরাক হোসেন, নবী উল্লাহ নবী, মির্জা আব্বাস, হামিদুর রহমান হামিদ ও আফরোজা আব্বাস (বাম দিক থেকে)
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকায় বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ এখন তুঙ্গে। যদিও এখনো আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন ঘোষণা হয়নি। তবে দলের নীতিনির্ধারক মহলের সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় থেকে ঢাকার প্রতিটি আসনে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
ঢাকার ২০ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দৌড় তুঙ্গে
রাজধানীর বুকে এমপি হতে ঢাকা-১ থেকে শুরু করে ঢাকা-২০ পর্যন্ত মোট ২০টি আসনে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এর মধ্যে কোনো কোনো আসনে একাধিক প্রার্থী দৌড়ঝাঁপ করছেন। কোথাও কোথাও একই পরিবারের সদস্যরা একটি আসনে মনোনয়ন চাইছেন। দু-একটিতে একক প্রার্থী শক্তিশালীও আছেন। মোটকথা বিভিন্ন কৌশলে হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মনোনয়ন বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
নির্বাচনে প্রার্থী হতে যোগ্যতার প্রয়োজন। তারপর বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে তাদের অবদান ছিল কি না, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তাদের কতটা অবদান ছিল, দলের পেছনে কতটা সময় দিয়েছেন- এ বিষয়গুলো বিবেচনায় যারা ফিট হবেন, তাদের প্রার্থী করা হবে।
ঢাকা-১ আসন:
এ আসনটি ঢাকা জেলার দোহার উপজেলা ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে মাঠে রয়েছেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত আব্দুল মান্নানের মেয়ে ব্যারিস্টার মেহনাজ মান্নান।
ঢাকা-২ আসন:
এ আসনটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড, ঢাকা মেট্রোপলিটন কামরাঙ্গীরচর ও হাজারীবাগ থানা, সাভার উপজেলার আমিনবাজার ইউনিয়ন, তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন ও ভাকুর্তা ইউনিয়ন, কেরানীগঞ্জ উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন (হযরতপুর, কলাতিয়া, তারানগর, শাক্তা, রোহিতপুর, বাস্তা, কালিন্দী, এবং আগানগর ইউনিয়ন) নিয়ে গঠিত। এ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সদস্য আমানউল্লাহ আমান, তার ছেলে ঢাকা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইরফান ইবনে আমান এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল করিম পল ধানের শীষ পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন।
ঢাকা-৩ আসন:
এ আসনটি ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার জিনজিরা, আগানগর, তেঘরিয়া, কোন্ডা ও শুভাঢ্যা এই ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও তার পুত্রবধূ ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী ধানের শীষ পেতে চান।
দলের একজন সাধারণ কর্মী হয়ে কোনো ধরনের অন্যায় কাজের সঙ্গে যুক্ত হইনি। রাজনীতি মানে চাঁদাবাজি দখলবাজি নয়, গতানুগতিক ধারার বাইরে মানুষ পরিবর্তন চায়, আমি বিশ্বাস করি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও সেটা চান। সেই কারণে আমি মনোনয়নপ্রত্যাশী রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের স্বার্থে। তবে এখানে দল যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই চূড়ান্ত।
ঢাকা-৪ আসন:
এ আসনটি ঢাকা জেলার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৭, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪ নং ওয়ার্ড এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন শ্যামপুর থানা নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন আলোচনায় আছেন।
ঢাকা-৫ আসন:
এ আসনটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৮, ৪৯, ৫০, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯ ও ৭০ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী ও কেন্দ্রীয় বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ ধানের শীষ পেতে চান।
ঢাকা-৬ আসন:
এ আসনটি ঢাকা জেলার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৪, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫ ও ৪৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। যার অন্তর্ভুক্ত থানা হচ্ছে: ওয়ারী, গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, কোতয়ালির একাংশ ও বংশালের একাংশ। এর পূর্বে গেন্ডারিয়া, পশ্চিমে সিদ্দিকবাজার, উত্তরে ফুলবাড়িয়া ও দক্ষিণে নাজিরাবাজার। সাবেক মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার এ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
বিএনপির হাইকমান্ড এখনো চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ না করলেও প্রত্যাশীদের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে বারবার ধরনা এবং এলাকায় জনসংযোগের মাত্রা থেকেই মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সক্রিয়তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
ঢাকা-৭ আসন:
এ আসনটি ঢাকা মহানগরের বংশালের একাংশ, কোতোয়ালির একাংশ, চকবাজার, লালবাগ, হাজারীবাগ ও ধানমন্ডির একাংশ নিয়ে গঠিত৷ এ আসনের পূর্বে নাজিরাবাজার, পশ্চিমে হাজারীবাগ, উত্তরে পলাশী ও দক্ষিণে কামরাঙ্গীরচর।
এ আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হামিদুর রহমান হামিদ, সহ যুববিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, সাবেক বিএনপি নেতা প্রয়াত নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনা ও যুবদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার মনোনয়নপ্রত্যাশী।
ঢাকা-৮ আসন:
এ আসনটি মতিঝিল, শাহবাগ, রমনা, পল্টন ও শাহজাহানপুর থানা নিয়ে গঠিত। এ আসনকে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র বলা যায়। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গভবন, সচিবালয়সহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এই আসনেই অবস্থিত। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ০৮, ০৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৯, ২০, ২১ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
ঢাকা-৯ আসন:
এ আসনটি ঢাকা মেট্রোপলিটন খিলগাঁও ও সবুজবাগ থানাধীন নাসিরাবাদ ইউনিয়ন, দক্ষিণগাঁও ইউনিয়ন ও মান্ডা সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ০১, ০২, ০৩, ০৪, ০৫, ০৬ ও ০৭ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
ঢাকা-০৮ ও ঢাকা-০৯ দুই আসনেই প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, তার স্ত্রী ও মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। এছাড়া এ দুই আসনের প্রার্থী হিসেবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী সোহেল ও দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবীবের নামও শোনা যাচ্ছে।
ঢাকা-১০ আসন:
এ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ও ২২ নং ওয়ার্ড তথা কলাবাগান, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট থানা নিয়ে গঠিত। এ আসনে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাছির উদ্দীন আহমেদ অসীম, নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল ইসলাম রবি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমানের বোন বিন্দু নির্বাচন করতে পারেন বলেও জানা গেছে।
ঢাকা-১১ আসন:
এ আসনটি ঢাকা মেট্রোপলিটন এর বাড্ডা থানা, ভাটারা থানা, রামপুরা থানা, হাতিরঝিল থানার একাংশ এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২১, ২২ , ২৩,৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১,ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সভাপতি কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক এম এ কাইউম এবং তার স্ত্রী সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায়।
- আরও পড়ুন
- ১৮ বছর পর ফেরা তুহিনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত
- লাখের বেশি হিন্দু ভোটারের মন জয়ে তৎপর বিএনপি-জামায়াত
ঢাকা-১২ আসন:
এ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ৩৫ ও ৩৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সভাপতি নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, কেন্দ্রীয় সহ অর্থবিষয়ক সম্পাদক থেকে পদত্যাগ করা মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ মনোনয়নপ্রত্যাশী।
ঢাকা-১৩ আসন:
এ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৪ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী এবং সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মনোনয়নের প্রত্যাশায় আছেন।
হাবিবুন নবী সোহেল, হাবিবুর রশীদ হাবীব, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাছির উদ্দীন আহমেদ অসীম, এস এ সিদ্দিক সাজু, কামাল জামান মোল্লা, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. হানিফ ও সুলতানা আহমেদ (বাম দিক থেকে)
ঢাকা-১৪ আসন:
এ আসনটি ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করেোরেশনের ০৭, ০৮, ০৯, ১০, ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে দারুস সালাম থানা বিএনপির আহ্বায়ক এস এ সিদ্দিক সাজু, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন ও যুবদলের ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জগলুল পাশা পাপেল মনোনয়ন পেতে তৎপরতা চালাচ্ছেন।
ঢাকা-১৫ আসন:
এ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ০৪, ১৩, ১৪ ও ১৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম মিল্টন ও যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মামুন হাসান মনোনয়ন পেতে আশাবাদী।
- আরও পড়ুন
- প্রার্থী নিয়ে কোন্দল মিটেছে বিএনপির, সুযোগ খুঁজছে জামায়াত
- নিজামীর ছেলে দাঁড়িপাল্লার প্রার্থী, ধানের শীষ চান অনেকেই
ঢাকা-১৬ আসন:
এ আসনটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২, ৩, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক এ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন বলে জানা গেছে। ফ্যাসিবাদী শাসনামলে তার ত্যাগ ও দৃঢ়তার কথা বিবেচনায় এ আসনটিতে তিনিই যে মনোনয়ন পেতে পারেন তা অনেকটাই নিশ্চিত।
ঢাকা-১৭ আসন:
এ আসনটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৫, ১৮, ১৯ ও ২০ ওয়ার্ড এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানার ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গঠিত। মূলত গুলশান, বনানী, নিকেতন, মহাখালী, বারিধারা, শাহজাদপুর এবং ঢাকা সেনানিবাসের একাংশ নিয়ে এই আসনটি। এ আসনে ‘জিয়া পরিবার’ থেকে কেউ প্রার্থী হবেন বলে আলোচনা চাউর হয়েছে। সেইসঙ্গে বিএনপি নেতা কামাল জামাল মোল্লা ও মেজর (অব.) কামরুল ইসলাম এর নামও আলোচনায় আছে।
ঢাকা-১৮ আসন:
এ আসনটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড নং ১, ১৭, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৮, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, কফিলউদ্দিন আহমেদ ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তফা জামান মাঠে রয়েছেন।
ঢাকা-১৯ আসন:
এ আসনটি ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার শিমুলিয়া, ধামসোনা, পাথালিয়া, ইয়ারপুর, আশুলিয়া, বিরুলিয়া, বনগাঁও ইউনিয়ন এবং সাভার ইউনিয়ন ও সাভার পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু, ব্যবসায়ী হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ এবং কফিলউদ্দিন প্রচারণায় আছেন।
- আরও পড়ুন
- জামায়াতের এমপি প্রার্থী হতে চান যেসব আইনজীবী
- কাকে ভোট দেবেন প্রশ্নে সিদ্ধান্তহীনতায় ৪৮.৫০ শতাংশ ভোটার
ঢাকা-২০ আসন:
এ আসনটি ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুবদলের তমিজ উদ্দিন ও তরুণ নেতা ইয়াসিন ফেরদৌস মোরাদ দৌড়ঝাঁপ করছেন।
বিএনপির একজন আদর্শ প্রার্থীর কী গুণ থাকা উচিত জানতে চাইলে ঢাকা-১৮ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমি মনে করি যিনি জনগণ নিয়ে চিন্তা করবেন, দেশের জন্য কাজ করবেন। লোক দেখানো দেশপ্রেম নয়, প্রকৃত অর্থে দেশপ্রেম মানবিকতা যার মধ্যে রয়েছে তিনি আদর্শ প্রার্থী বলে আমি মনে করি।
ঢাকা-২ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী রেজাউল করিম পল বলেন, বিএনপির মতো একটি বড় দলে একাধিক প্রার্থী থাকবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এটাই স্বাভাবিক। আমি দলের একজন সাধারণ কর্মী। দলের জন্য কাজ করেছি, পিছপা হইনি। এছাড়া সামাজিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। সেই সুবাদে এলাকার সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীরা আমাকে চায় তাই আমি মনোনয়নপ্রত্যাশী। দলের একজন সাধারণ কর্মী হয়ে কোনো ধরনের অন্যায় কাজের সঙ্গে যুক্ত হইনি। রাজনীতি মানে চাঁদাবাজি দখলবাজি নয়, গতানুগতিক ধারার বাইরে মানুষ পরিবর্তন চায়, আমি বিশ্বাস করি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও সেটা চান। সে কারণে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের স্বার্থে আমি মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে এখানে দল যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই চূড়ান্ত। মনোনয়ন আমার কাছে মুখ্য বিষয় নয়। দলের জন্য কাজ করছি কাজ করবো।
ঢাকা-৬ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী কাজী আবুল বাশার বলেন, এ এলাকায় ৩০-৩৫ বছর বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছি। অবিভক্ত ঢাকা মহানগরীর সহ-সভাপতি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র, প্যানেল মেয়রসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সাংগঠনিক সামাজিক মানবিক দিক বিবেচনা করে আমি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। দল আমাকে ২০১৮ সালে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছিল। এছাড়া মনোনয়নের ক্ষেত্রে যে ক্লিন ইমেজের কথা বলা হয় আমি দাবি করি আমি ক্লিন ইমেজের। সংগত কারণে আমি এই আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপির হাইকমান্ড এখনো চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ না করলেও প্রত্যাশীদের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে বারবার ধরনা এবং এলাকায় জনসংযোগের মাত্রা থেকেই মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সক্রিয়তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
অভ্যন্তরীণ সমন্বয় ও জোটের হিসাব-নিকাশের ওপর ভিত্তি করেই দল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, এমনটাই জানিয়েছে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র।
আগামী নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মূল্যায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘নির্বাচনে প্রার্থী হতে যোগ্যতার প্রয়োজন। তারপর বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে তাদের অবদান ছিল কি না, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তাদের কতটা অবদান ছিল, দলের পেছনে কতটা সময় দিয়েছেন এ বিষয়গুলো বিবেচনায় যারা ফিট হবেন, তাদের প্রার্থী করা হবে।’
প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা বিবেচনার বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘শিক্ষাগত যোগ্যতাই সবকিছু নয়। পিএইচডি করেছে বলে আমরা কাউকে এমপি বানিয়ে দেব, এটা যেমন ঠিক নয়; তেমনি কম লেখাপড়া করেছে কিন্তু অনেক গুণ আছে, রাজনীতিতে অবদান আছে, এলাকায় মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক আছে (বলেই) আমি তাকে এমপি বানাবো না, সেটা হতে পারে না। রাজনীতিতে যোগ্যতা, মেধা ও গ্রহণযোগ্যতা এগিয়ে নিয়ে আসবে। দেশ গড়তে হলে মেধাবী রাজনীতিবিদ লাগবে।’
কেএইচ/এসএইচএস/এমএফএ/জিকেএস