যে কারণে আমজনতার দলের ‘খোলা দরজা’ দিয়ে বেরিয়ে গেলেন সাধনা
আমজনতার দলের মো. তারেক রহমান ও সাধনা মহল, ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জন্য যারা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ছাড়ছেন, তাদের জন্য ‘দরজা খোলা’ রেখেছিলেন আমজনতার দলের সদস্য সচিব মো. তারেক রহমান। কিন্তু সেই ‘খোলা দরজা’ দিয়েই দল থেকে বেরিয়ে গেলেন তার নিজের দলের সহসভাপতি সাধনা মহল।
রোববার রাতে (২৮ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে দল ছাড়ার ঘোষণা দেন সাধনা।
ফেসবুক পোস্টে দল ছাড়ার সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করেননি তিনি। তবে মন্তব্যের ঘরে কিছু ইঙ্গিত দিয়েছেন।
আরও পড়ুন
তারেকের ‘আমজনতা’র দলে যোগ দিলেন হিরো আলম
এনসিপির নির্বাচনকালীন কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালেন নুসরাত
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন এনসিপি নেত্রী মনিরা শারমিন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত ব্যক্তি আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম রোববার সন্ধ্যার পরে সদ্য নিবন্ধন পাওয়া আমজনতার দলে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন। এর পরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন দলের সহসভাপতি সাধনা মহল।
সাধনা মহল তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমি আমজনতার দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারেক ভাই এবং আমজনতার দলের জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইলো। আশাকরি বড় ক্ষতি হয়ে যাবার আগেই ওনারা এই রাজনৈতিক ভুল পদক্ষেপ শোধরানোর সুযোগ পাবেন।’
এই পোস্টে মন্তব্যের ঘরে আজহারুল হক নামের একজন লেখেন, আপা তারেক যখন আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের কথা বলছিল আশা করেছিলাম তখন আপনি বেরিয়ে আসবেন কিন্তু সেই তুলনায় হিরো আলমের যোগ দেয়ার কারণ দেখিয়ে বেরিয়ে যাওয়া দুঃখজনক। হিরো আলম বরং আমাদের অনেকের থেকে অনেক বেশি রাজনৈতিক ভাবে সক্রিয় ও সংগ্রামী।
জবাবে সাধনা মহল লেখেন, বিষয়টা এক ব্যক্তি কেন্দ্রীয় নয়। তোমাকে বোঝাতে হবে না আশা করি।
রাজিব শেখ নামের একজন মন্তব্য করেন, হিরো আলম থার্ড ক্লাস অশ্লীল নর্তক আইনপ্রণেতা হতে চান। আপা আপনি মেনে নেন।
জবাবে সাধনা মহল লেখেন, ‘সম্ভব না ভাই।’
আরও পড়ুন
এবার এনসিপি ছাড়ার ঘোষণা দিলেন মওলানা ভাসানীর নাতি
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন এনসিপি নেত্রী ঝুমা
এনসিপিত্যাগীদের জন্য আমজনতার দলের দরজা খোলা: তারেক রহমান
আবু তৈয়ব হাবিলদার নামের একজন লেখেন, বোকার মতো কাজ করলেন। দল শুধু এলিটেরা করবে? খেটে খাওয়া মানুষ দল করলে অনেকেই নাক সিটকায়। এই নাক সিটকানি এলিটিজম দূর করতে হিরোদের দল করা উচিত। যে দলই হোক না কেন?’
জবাবে সাধনা মহল লেখেন, সরি ভাই, হিরো আলমের অর্জন, কর্ম জগত বা জনপ্রিয়তার সাথে আমার রাজনৈতিক বোঝাপড়ার কোন আদর্শিক সমন্বয় নেই। উনি মজলুমের রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের জন্য উপকারি কোনো ব্যক্তিত্ব নয়।
আবু তৈয়ব হাবিলদার আবার প্রশ্ন করেন, রাজনৈতিক দল করতে শুধু মজলুম হতে হয়, সেটা আপনাকে কে বলছে? নাগরিক মাত্রই রাজনৈতিক দল করার অধিকার রাখে। আপনি নাগরিক অধিকার হরণ করে কি রাজনীতি করবেন?
জবাবে সাধনা মহল বলেন, ‘ভাই আপনারা হিরো আলমকে সংসদে পাঠানোর চেষ্টা করেন; করে দেখেন। পারবেন না।’
এর আগে আমজনতার দলের সদস্য সচিব মো. তারেক রহমান রোববার তার ফেসবুকে লেখেন, জামায়াতের জন্য যারা এনসিপি ছাড়ছেন, তাদের জন্য আমজনতার দলের দরজা খোলা আছে। আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে, যুক্তি-তর্কের বিবাদ আছে, কোনো অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি আমাদের নেই। দরকার হলে জনতার কাছে ভিক্ষা চেয়েছি দলের জন্য, কারো গলায় পাড়া দিয়ে অর্থ সংগ্রহ করি নাই। নির্বাচনের জন্য সহযোগিতা করব। আপনারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আপনাদের জন্য এই ছাড় আমরা দেব।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করেছে এনসিপি। এই সিদ্ধান্তে এরই মধ্যে ভাঙন শুরু হয়েছে তারুণ্যনির্ভর দলটিতে। দলটির বেশ কয়েকজন নেতানেত্রী পদত্যাগের ঘোষণা দিলে দরজা খোলার রাখার কথা জানান তারেক রহমান।
এমএমএআর/জেআইএম