আসন ৬০০-তে উন্নীত করাসহ সরাসরি ভোট চান নারীরা
আসন ৩০০ থেকে ৬০০-তে উন্নীত করার পাশাপাশি সংরক্ষিত আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন নারীরা। সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৫০টা থেকে বাড়ানোর প্রস্তাব তুলেছেন তারা।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংলাপে এ দাবি জানান তারা। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নারী নেত্রীদের সঙ্গে এ সংলাপের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে সংলাপে অন্য চার নির্বাচন কমিশনারসহ সংস্থাটির কর্মকর্তা ও নারী নেত্রীরা অংশ নেন।
সংলাপে ‘নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী মানবাধিকারকর্মী খুশী কবীর বলেন, আপনারা অবাধ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দিতে চাচ্ছেন। নির্বাচনে আমরা যেটাতে বেশি আগ্রহী সেটা নারী প্রতিনিধিত্ব অংশগ্রহণ। সেখানে রাজনৈতিক দল থেকে যে ধরনের উৎসাহ চাচ্ছিলাম সেটা পাচ্ছি না। এ কারণ আমরা মনে করি সংরক্ষিত আসন থাকা দরকার এবং এটা সরাসরি নির্বাচন। যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হোক সেখানে নারীদের জন্য সরাসরি নির্বাচন চাচ্ছি এবং সংরক্ষিত আসনও চাচ্ছি। নারীরা সরাসরি নির্বাচনে যাতে আসতে পারে। যাতে ভোটের মাধ্যমে তারা নির্বাচিত হয়ে সংসদে ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া নারী ভোটারের নিরাপত্তাও আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে।
খুশী কবীর বলেন, যে পদ্ধতিই হোক না কেন নারীদের সরাসরি নির্বাচন অবশ্যই চাচ্ছি। আবার ফ্রি, ফেয়ার ও ক্রেডিবল ইলেকশন যেন হয়। এ নির্বাচনে নারীরা সরাসরি নির্বাচিত হলে তারা সংসদে ভূমিকা রাখতে পারবেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, শুধু সিইসি জেন্ডার ফ্রেন্ডলি নির্বাচন আশা প্রকাশ করলে তা হবে না। নির্বাচন জেন্ডার ফ্রেন্ডলি করতে হলে যে স্টেক হোল্ডার আছেন তাদের মানসিকতাকে জেন্ডার ফ্রেন্ডলি করতে হবে। আমরা পুরো করতে পারবো না হয়তো কিন্তু বেশি যারা নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত আছেন তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। জেন্ডার ফ্রেন্ডলি নির্বাচন করার ক্ষেত্রে প্রথমে আমার যে কথা মনে আসে তা হলো- আমরা যখন ভোট দিতে যায়, তখন আমরা প্রার্থী দেখি।
ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ে ক্ষেত্রে নারী বিদ্বেষী, সাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এ তিনটি বিষয়ে নজর রাখতে হবে। প্রার্থীদের মানবিক গুন থাকতে হবে। নির্বাচনের আগে ও পরে মব ভায়োলেন্স ও নারী নির্যাতন হয়-এমন এলাকার দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখলে নারীরা নিরাপদ বোধ করবেন।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক বলেন, দেশের জনসংখ্যা বাড়লেও সংসদে আসন বাড়ানো হয়নি। সেখানে আমরা বলেছি ৩০০ আসনের পরিবর্তে ৬০০ আসন করতে হবে। একটি নির্বাচনের আসনে দুটি আসন থাকবে। যেখানে একটিতে শুধু নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। আরেকটিতে নারী-পুরুষ যে কেউ করতে পারবে। পিআর পদ্ধতি সমর্থন করি।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুর বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা মুক্ত নির্বাচন যাতে হয় সেটা আমরা চাই। নারী প্রার্থীরা নানা ধরনের সহিংসতার শিকার হয়। তাদের বিরুদ্ধে এমনভাবে প্রচার প্রচারণা করা হয়, নারী বিদ্বেষী প্রচার-প্রচারণা করা হয়। এবারও আমরা এমন শঙ্কা করছি এবং নারী যারা ভোটার তারা অনেক ধরনের হুমকির মুখে থাকেন। এ জায়গায়গুলো কীভাবে বন্ধ করা যায় তা ইসির কাছে বড় ধরনের প্রত্যাশা থাকবে।
উইমেন ডেভেলমমেন্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মিষ্টি আশরাফুন নাহার বলনে, প্রতিবন্ধী মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের সময়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতীবন্ধীদের বাড়িবাড়ি গিয়ে ভোটার কার্যক্রম করতে হবে। যাতে দেশের একজন প্রতিবন্ধী ভোটার তালিকা থেকে বাদ না পড়েন।
এমওএস/এমএএইচ/জেআইএম