যুক্তরাজ্যের মূল্যায়নে বাংলাদেশের বিমানবন্দরের উচ্চ স্কোর অর্জন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০১ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৫
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর/ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্যের পরিবহন বিভাগ (ডিএফটি) পরিচালিত বিমানবন্দর মূল্যায়নে বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলো উচ্চ স্কোর অর্জন করেছে। সামগ্রিক মূল্যায়নে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ৯৩ শতাংশ এবং সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ৯৪ শতাংশ নম্বর পেয়েছে।

রোববার (১২ অক্টোবর) বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ কাউছার মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত আগস্ট মাসে দেশের বিমানবন্দরগুলোর সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে ডিএফটি। এর মধ্যে শাহজালাল সামগ্রিক মূল্যায়নে ৯৩ শতাংশ এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা (কার্গো) মূল্যায়নে ১০০ শতাংশ নম্বর অর্জন করেছে। একইভাবে ওসমানী সামগ্রিকভাবে ৯৪ শতাংশ এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা (কার্গো) মূল্যায়নে ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। ডিএফটি মূল্যায়ন দল বেবিচকের প্রস্তুতি ও কার্যক্রমে গভীরভাবে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডিএফটির বিমানবন্দর মূল্যায়ন হলো যুক্তরাজ্য সরকারের একটি আনুষ্ঠানিক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মূল্যায়ন ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে বিদেশি বিমানবন্দরগুলোতে যাত্রী ও কার্গো নিরাপত্তার মানদণ্ড যাচাই এবং যুক্তরাজ্যের চাওয়া অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলোর বাস্তবায়ন পর্যালোচনা করা হয়। এ পরিদর্শনগুলো পরিচালনা করেন ডিএফটির অনুমোদিত পরিদর্শক ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। যারা সরেজমিনে কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, নীতিমালা পরীক্ষা এবং নিরাপত্তা-সংক্রান্ত ব্যবস্থাগুলো যাচাই করেন। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে বিমানবন্দর মূল্যায়ন কার্যক্রম ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয়। পরবর্তীতে, অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলো যাচাইয়ের জন্য ডিএফটি পরিদর্শক দল নিয়মিতভাবে এ মূল্যায়ন অব্যাহত রাখে।

বেবিচক জানায়, ডিএফটি থেকে প্রাপ্ত ভালো মূল্যায়ন জাতীয় স্বার্থে গভীর তাৎপর্য বহন করে। এটি বাংলাদেশের বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থার দৃঢ়তা ও সক্ষমতার প্রতিফলন, যা সামগ্রিকভাবে জাতীয় নিরাপত্তার উন্নয়নে সহায়তা করে। এ ফলাফল বিদেশি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও এয়ারলাইন্সগুলোকে আশ্বস্ত করে যে যাত্রী ও কার্গো ব্যবস্থাপনায় টেকসই এবং উচ্চমানের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২০১৬ সালে কার্গো স্ক্রিনিং নিয়ে উদ্বেগের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য সরাসরি ঢাকাগামী কার্গো পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। ফলে বাংলাদেশের সব রপ্তানি কার্গোকে তৃতীয় দেশে অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে পাঠাতে হতো, যা রপ্তানিকারকদের জন্য বিলম্ব ও অতিরিক্ত খরচ সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে বেবিচক ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের বিধিনিষেধের সঙ্গে নিজেদের সামঞ্জস্য গড়ে তোলে। ২০১৭ সাল থেকে ইডিএসের মতো আধুনিক নিরাপত্তা সরঞ্জাম যোগ এবং ইডিডি ইউনিটকে রপ্তানি কার্গো স্ক্রিনিং ব্যবস্থায় যুক্ত করা হয়। এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের কার্গো অপারেশনে একটি মাইলফলক অর্জন।

বেবিচক জানায়, তারা ধারাবাহিকভাবে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ এবং প্রক্রিয়াগুলোর উন্নয়ন করে এসেছে, যাতে বাংলাদেশের বিমান নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছেছে। এ ভালো মূল্যায়ন ভবিষ্যতে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঝুঁকি কমাবে এবং অন্য দেশে অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্ক্রিনিং করার প্রয়োজন হ্রাস করবে। এটি বাণিজ্য সহায়ক হবে, বিদেশি এয়ারলাইন ও হ্যান্ডলার অংশীদারিত্বকে আকৃষ্ট করবে এবং বিদেশি বিনিয়োগকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। যা সরাসরি জাতীয় অর্থনীতি ও উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এমএমএ/একিউএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।