বিটিআরসির সঙ্গে বৈঠকে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা
ন্যাশনাল ইকুপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছেন মোবাইল ফোন আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের সংগঠন মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)।
গত ৭ ডিসেম্বর এমসিবি সদস্যরা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ঘেরাও করেন। তাদের ঘেরাওয়ের মুখে এনইআইআর সংস্কারের আলোচনায় বসতে সম্মত হয় বিটিআরসির কর্মকর্তারা।
সেই প্রতিশ্রুতি মেনে মোবাইল ফোন আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বিটিআরসির কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিটিআরসি ভবনের দশম তলায় এ বৈঠক শুরু হয়।
বিটিআরসি সূত্র ও মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আমিনুল হক মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন।
বৈঠকে মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের (এমবিসিবি) পক্ষে অংশ নিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম ও সেক্রেটারি আবু সায়ীদ পিয়াসের নেতৃত্ব ১৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ বৈঠক চলছে।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, আগামী ১৬ ডিসেম্বর এনইআইআর চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এ প্রক্রিয়া চালু করা হলে দেশে সক্রিয় থাকা সব মোবাইল ফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়ে যাবে। এরপর থেকে অবৈধভাবে আমদানি করা মোবাইল ফোন দেশে বিক্রি বন্ধ হয়ে যাবে। শুধুমাত্র বৈধ উপায়ে আমদানি করা মোবাইল ফোনই নতুন করে সক্রিয় করা যাবে। পাশাপাশি নিয়ম মেনে বিদেশ থেকে আনা ফোন এবং উপহার পাওয়া মোবাইল ফোনও রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
তবে এনইআইআর ব্যবস্থা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। কারণ তারা ভ্যাট-ট্যাক্ট এড়িয়ে ভিন্নপথে দেশে মোবাইল ফোন এনে থাকে। নিয়ম মেনে মোবাইল ফোন আনলে ৫৬ শতাংশ ভ্যাট-ট্যাক্স গুনতে হবে। এতে মোবাইল ফোনের দাম বেড়ে যাবে এবং বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে বলে অভিযোগ তাদের।
মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের মোবাইল ফোন ব্যবসার মার্কেট শেয়ার যাদের ৭০ শতাংশের বেশি, তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে এনইআইআর চালু করতে হবে। কোনোভাবেই তারা এনইআইআরের বিরুদ্ধে না। তবে এ প্রক্রিয়ার কিছু সংস্কার, ন্যায্য করনীতি প্রণয়ন, একচেটিয়া সিন্ডিকেট বিলোপ এবং মুক্ত বাণিজ্যের স্বার্থে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে তাদের কিছু দাবি ও প্রস্তাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা সরকারকে জানাতে চান। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের বিশাল সংখ্যক ব্যবসায়ীর কথা না শুনেই একতরফা এনইআইআর চালু করতে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ী নেতাদের অভিযোগ, কোনো পূর্ব-পরামর্শ ছাড়াই হঠাৎ এনইআইআর বাস্তবায়নের ঘোষণা বাজারে চরম অস্থিরতা তৈরি করেছে। ফলে দেশের প্রায় ২৫ হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং এর সঙ্গে জড়িত ২০ লাখেরও বেশি মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। তারা বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। বর্তমানে তাদের স্টকে কোটি কোটি টাকার হ্যান্ডসেট রয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিপুল পরিমাণ অবিক্রিত হ্যান্ডসেট বিক্রি করা অসম্ভব। দাবি না মেনে গুটিকয়েক ব্যবসায়ীকে একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ করে দিলে তারা পথে বসবেন।
এএএইচ/জেএইচ