এ মাসেই চীনের সাথে কর্ণফুলী ট্যানেল নির্মাণের চুক্তি

‘এমাসেই চুক্তি হচ্ছে কর্ণফুলী ট্যানেল নির্মাণের। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে চীনের সাথে এ চুক্তি সম্পাদন হবে। এ লক্ষ্যে পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের খুব শিগগির চীন সফরে যাবেন। এ বছর চীনের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসলে এ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এ চুক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরেকটি সফলতা।’
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সিএনজি অটোরিকশা চালক, মালিক ও শ্রমিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ক্ষেত্রে এটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। একসময় দেশের এক শ্রেণির মানুষ পদ্মা সেতু নিয়ে উপহাস করতো। বলতো এটি কাল্পনিক স্বপ্ন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটিকে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন নয় এটি এখন দৃশ্যমান স্বপ্ন। নির্ধারিত সময়েই পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হবে বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পরিবহন সেক্টরে কোন বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবেনা। পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরে আসলেই নগরীতে পরিচ্ছন্নতা ফিরে আসবে। চট্টগ্রামে সিএনজি অটোরিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, মিটারবিহীন সিএনজি চালানো এবং অবৈধ রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজি চলাচলসহ যাত্রী হয়রানি বন্ধে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নব নির্বাচিত মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন, সিএমপি পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার বাবুল, চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সেতুমন্ত্রী সিএনজি অটোরিকশার নৈরাজ্য বন্ধে সিএনজি চালক মালিকদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে সিটি মেয়রকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন ও পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল।
মন্ত্রী বলেন, সিএনজি অটোরিকশাতে মানসম্মত মিটার স্থাপন করা হবে এবং ভাড়া পুনঃনির্ধারণ, নতুন সিএনজির রেজিস্ট্রেশন এবং পুরাতন সিএনজির মেয়াদ বৃদ্ধির ব্যাপারেও কমিটির সুপারিশ মতে কাজ করা হবে।
সেতুমন্ত্রী এসময় সিএনজি অটোরিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিদের বিভিন্ন অভিযোগের কথা শুনেন। মালিক শ্রমিক নেতারা এসময় বলেন, চট্টগ্রামে বর্তমানে অন্তত বিশ হাজারেরও বেশি সিএনজি রেজিস্ট্রেশন বিহীন চলছে। প্রশাসনের সাথে আঁতাত করেই বিশেষ টোকেনের মধ্যে চলছে এসব সিএনজি।
তারা আরো বলেন, সিএনজি অটোরিকশার লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রেও করা হয় বৈষম্য। মতবিনিময় সভায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বন্ধের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া আরটিএ কমিটিতে জেলা থেকে এবং মেট্রো থেকে একজন করে দুইজন প্রতিনিধি রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, দেশের স্বার্থে যাত্রীদের সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে। কারো কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবেনা। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এটি আদালতের বিষয়। তবে কারো পেটে লাথি দিয়ে রাতারাতি এসব অটোরিকশা বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। এসব অটোরিকশা চালকদেরকে বিকল্প পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করতে হবে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন স্পট এবং জেলার বিভিন্ন রাস্তায় পরিবহন থেকে শ্রমিক সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি মেনে নেওয়া হবেনা।
মতবিনিময় সভায় চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীকে সুন্দর এবং সমৃদ্ধ নগরী হিসেবে গড়ে তোলা সকলের দায়িত্ব। এজন্য সিএনজি অটোরিকশার সকল সমস্যা সমধানের বিষয়ে তিনি সব সময় আন্তরিক। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান করতে হবে।
এসময় সিএনজি মালিক সমিতির সেক্রেটারি এসকে সিকদার, মহানগর সিএনজি সমিতির সভাপতি হায়দার আজম চৌধুরী, শ্রমিক নেতা অলি আহমদ, হারুনুর রশিদ, যাত্রী কল্যাণ সমিতির মোজাম্মেল হক তাদের স্ব স্ব সংগঠনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন।
এসএইচএস/আরআই