ভারতে আটকেপড়াদের আপাতত দেশে ফেরার সুযোগ নেই
ভারতে লকডাউনের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করায় এই মুহূর্তে দেশটিতে আটকেপড়াদের বিমানপথে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ায় কোনো সুযোগ বর্তমানে নেই বলে জানিয়েছে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ভারত সরকার লকডাউনের ওপর কড়াকড়ি আরোপ সত্ত্বেও হাইকমিশন বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রত্যাবর্তনের অনুমোদনের জন্য নিরন্তর যোগাযোগ ও নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ভারত সরকার আগামী ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন বর্ধিত করেছে। যা ভারতে অবস্থানরত দেশি/বিদেশি সকলের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। ভারত সরকার অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিমান/গণ পরিবহন/ব্যক্তিগত পরিবহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধের নির্দেশনা আরও কঠোরভাবে প্রয়োগ করছেন।
বিদেশ থেকে প্রবাসী ভারতীয়দের দেশে প্রত্যাবর্তনেও নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে মেনে চলা হচ্ছে। হাইকমিশন সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের সমস্যাদি অবহিত করে তা সমাধানের জন্য দেশ থেকে প্রদত্ত নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। আপনারা অনেকেই দেশে ফেরার সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আটকেপড়াদের খাদ্য, আবাস ও চিকিৎসার বিষয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। উক্ত বিষয়ে আপনাদের কারও কোনো সমস্যা হলে আপনার অবস্থান, প্রয়োজনীয়তা ও পূর্ণ ঠিকানাসহ যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বেঙ্গালোরতে চিকিৎসা গ্রহণ করতে এসে আটকেপড়া বাংলাদেশী রোগী ও পরিবারের সদস্যদের জন্য নারায়ণ হাসপাতালের আন্তর্জাতিক শাখা থেকে বিনামূল্যে দুপুর ও রাতের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। সকল আবাসিক মালিকদের আটকেপড়া বাংলাদেশিদের কাছ থেকে লকডাউন চলাকালীন হোটেল ভাড়া প্রদানে তাগিদ না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো ব্যতিক্রম হলে নারায়ন হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে জানানো যেতে পারে।
তামিল নাড়ুর চেন্নাই ও ভেলোরে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের আবাসন ও খাদ্য সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ভারতের অন্যান্য বিমানবন্দরের ন্যায় চেন্নাই বিমানবন্দর থেকেও সকল নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিত হওয়ায় চেন্নাই-ঢাকার মধ্যে যাতায়াতকারী ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স তাদের নিয়মিত ফ্লাইট বাতিল করেছে। তবে যারা এই এয়ারলাইন্স ইতিমধ্যে টিকেট ক্রয় করেছিলেন তাদেরকে বিশেষ ব্যবস্থায় দেশে ফেরানো প্রচেষ্টা চলছে।
প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাওয়া গেলে কয়েক দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে অবগত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । সংশ্লিষ্ট যাত্রীদের বিমান সংস্থাটির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক যাত্রী থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে চেন্নাই থেকে আরও ফ্লাইট পরিচালনার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
সেখানে আরও বলা হয়েছে, এ সকল ক্ষেত্রে দেশে ফেরার পর আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী স্বাস্থ্য সনদ প্রদান ও ২ সপ্তাহের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন পালনসহ বিবিধ বিধান অনুসরণের প্রয়োজনীয়তা থাকবে। চেন্নাই ছাড়া ভারতের অন্য শহর, রাজ্য (দিল্লীসহ) থেকে বর্তমান পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমান , রেল বা অন্য কোনো পরিবহনের মাধ্যমে পূর্ববর্তী স্থানে ভিন্ন রাজ্যে যাতায়াতের সুযোগ নেই। তবে এ বিষয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে। সিদ্ধান্ত আসা মাত্রই আপনাদের অবহিত না হবে। যেসব ছাত্র-ছাত্রীরা ভারতে শিক্ষারত আছেন তাদের সকলের প্রাতিষ্ঠানিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আপনাদের আবাসনের সমস্যা হলে যা খাবারের অপ্রতুলতা দেখা দিলে যোগাযোগ করুন।
এইচএস/এফআর/এমকেএইচ