চেনা ঘাট তবুও অচেনা দৃশ্যপট
নেই যাত্রীদের ভিড়। টিকিট কাউন্টারে নেই দীর্ঘলাইন। নেই টিকিট বিক্রেতা। একটি ওয়াটার ট্যাক্সিও নেই। ফলে চিরচেনা, ব্যস্ত গুদারাঘাট রূপ নিয়েছে ভিন্নরকম, ফাঁকা এক দৃশ্যপটে।
হাতিরঝিলে ১৫টি ওয়াটার ট্যাক্সি চলাচল করত, যার ফলে সকাল ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত যাত্রীদের ভিড় থাকত। কিন্তু করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে দেশে চলমান সাধারণ ছুটিতে অন্য সব যানবাহনের পাশাপাশি হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সিও চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে আজ এ ঘাটের দৃশ্যপট বদলে গেছে।
অন্যদিকে প্রায় এক মাস ধরে ওয়াটার ট্যাক্সির চলাচল না থাকায় এবং মানুষের উপস্থিতি না থাকায় স্বচ্ছ হয়ে উঠেছে হাতিরঝিলের পানি। দুর্গন্ধ কমে যাওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিক রূপ ফিরে পেয়েছে হাতিরঝিল এলাকা।
গুদারাঘাট এলাকায় কথা হয় দক্ষিণ বাড্ডার বাসিন্দা মনিরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই গুদারাঘাটে সবসময় কত যাত্রী ভিড় করে থাকত। টিকিট কাউন্টার থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা টিকিট সংগ্রহ করত। সবসময় ঘাটে ভিড়ে থাকত ওয়াটার ট্যাক্সি। এ ছাড়া হকার, দর্শনার্থীও থাকত। কিন্তু আজ কেমন সুনসান নীরবতা। কোনো যাত্রী বা মানুষের পদচিহ্ন এখন নেই।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সাধারণ ছুটির কারণে যেহেতু ওয়াটার ট্যাক্সি চলাচল করছে না, সেই সঙ্গে মানুষের উপস্থিতি নেই। তাই হাতিরঝিলের পানি স্বচ্ছ হয়ে গেছে। পানিতেও আর দুর্গন্ধ নেই। দেখে মনে হচ্ছে, হাতিরঝিল প্রাকৃতির রূপ ফিরে পেয়েছে।
করোনা সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে টানা ৩১ দিনের ছুটি চলছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি নেই। সারাদেশকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জাতীয় কমিটি আরও ৭ দিন ছুটি বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।
এদিকে করোনাভাইরাসের আক্রমণ ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছুটির পর লাখো মানুষ ঢাকা ছেড়ে গ্রামে গেছেন। আর যারা ঢাকাতেই আছেন তারাও খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। ফলে চাপ কমেছে এই রাজধানী শহরের ওপর। যে কারণে অত্যন্ত বিষাক্ত পরিবেশও কিছুটা ভালোর দিকে। এর প্রভাব পড়েছে রাজধানীর জলাশয়ের ওপরও। এ কারণেই স্বচ্ছ হতে শুরু করেছে হাতিরঝিলের পানি। কমছে দুর্গন্ধও।
এএস/জেডএ/জেআইএম