‘ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি দিলেন, এখন বলছেন সহযোগিতা করছি না?’
করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে উদ্ভাবিত কিট অনুমোদনের ক্ষেত্রে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর সহযোগিতা করছে না বলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অভিযোগের পর তাদেরই ধন্যবাদ জানানো কয়েকটি চিঠি তুলে ধরেছেন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য মিডিয়া সেল আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিটস সংক্রান্ত বিষয়াদি’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ চিঠি তুলে ধরেন। মহাপরিচালকের ভাষ্যে, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের সহযোগিতার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে এ চিঠি দেয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, ওনারা একটা টেস্ট ডেভেলপ করেছেন। আমাদের দিক থেকে, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের দিক থেকে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম এবং এখনও আছি।
তিনি বলেন, আমরা যে সহযোগিতা করেছি এর প্রমাণ আমি বলি। ওনাদেরই চিঠি।
একটি চিঠি তুলে ধরে ডিজি বলেন, এটা গণস্বাস্থ্যের চিঠি। এখানে ওনারা লিখেছেন, ‘দেশে এই অস্বাভাবিক অবস্থা ও সার্বিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আপনারা দ্রুত আমাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে ৭ এপ্রিল ফ্যাক্টরি ভিজিট করা এবং আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দেয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’ এই চিঠি তাদের।
আরও একটি চিঠি তুলে ধরে মহাপরিচালক বলেন, এটাও গণস্বাস্থ্যের চিঠি, আমাদের কাছ থেকে নিতে পারেন। ওখানে ওনারা বলেছেন, ‘কিট তৈরি ও বিপণন অনুমোদনের জন্য আপনারা আমাদের কারখানা সরেজমিনে যৌথভাবে পরিদর্শন করার নিমিত্তে একটি কমিটি গঠন করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন। আপনাদের এই দ্রুত সিদ্ধান্তের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’ এটি কিন্তু তাদের ২২ মার্চের চিঠি।
২১ এপ্রিলের আরেকটি চিঠি তুলে ধরে অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, গণস্বাস্থ্য থেকে বলা হচ্ছে, আমাকে অ্যাড্রেস করে বলা হচ্ছে, ‘জনাব, দেশের এই দুযোগপূর্ণ অবস্থায় আমাদের কোভিড-১৯ নির্ণায়ক কিট তৈরির লক্ষ্যে বর্তমান অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য সার্বিক সহায়তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। দেশের জনগণ ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র আপনাদের এই সহায়তার কথা মনে রাখবে’।
‘ওনারা তাহলে কীভাবে মনে রাখছেন। ওনারা যে বলছেন সহযোগিতা আমরা করছি না। তাহলে ওনারা কীভাবে বলতে পারেন, আমরা সহযোগিতা করছি না।’
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের ডিজি বলেন, আমরা তাদের বলেছি, এটা উদ্ভাবন হয়েছে, সেই উদ্ভাবন আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী যেভাবে এটিকে ভ্যালিডেটেড করতে হয়, সেটি করতে হবে। ওনারা বলছেন ওনারা শতভাগ সফল, শতভাগ হোক, ৯০ শতাংশ হোক, পার্সেন্টেজ যাই হোক, ট্রায়াল করতে হবে। ১০০ বা ২০০ মানুষের মধ্যে দেখতে হবে। একটা প্রোটোকল ডেভেলপ করতে হবে। সেই প্রোটোকল ডিএমআরসি ও আমাদের কমিটির মাধ্যমে অ্যাপ্রুভড করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এটি মনে হচ্ছে একটি লম্বা প্রক্রিয়া, অনেক জায়গায় যাওয়া, সেটি কিন্তু নয়। আমরা অনলাইনেও প্রটোকল অনুমোদন দিচ্ছি।’
এর আগে রোববার (২৬ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ব্যবসায়িক স্বার্থে জাতীয় স্বার্থের বিপক্ষে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর নানা অজুহাত দেখিয়ে গণস্বাস্থ্যের কিট গ্রহণ করেনি। আমরা জনগণের স্বার্থে শুধু সরকারের মাধ্যমে পরীক্ষা করে কিটটি কার্যকর কি না- তা দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকারিভাবে প্রতি পদে পদে পায়ে শিকল দেয়ার চেষ্টা হয়েছে।
আরএমএম/এইচএ/এমকেএইচ