সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে মামলায় এমএসএফের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৭ পিএম, ০৬ মে ২০২০

চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এবং তা মোকাবিলায় সরকারের নেয়া পদক্ষেপ নিয়ে পত্র-পত্রিকায় ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা ও অপহরণের অভিযোগ ওঠার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) ।

বুধবার (৬ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমএসএফের চেয়ারপার্সন সুলতানা কামাল গ্রেফতার সাংবাদিকদের দ্রুত মুক্তিসহ তাদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন মরে করে, বিদ্যমান সংকটাবস্থায় সাংবাদিকরা দেশের জনগণকে ও সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে তথ্য সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জনগণের বক্তব্য ও প্রয়োজনীয়তাগুলো এবং সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কার্যকারিতা সম্পর্কে নীতিনির্ধারকদের অবহিত করছে। এমএসএফ আরও মনে করে, ডিজিটাল আইনের মধ্য দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের হয়রানি, গ্রেফতার ও কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না, যা শুধুমাত্র দুঃখজনকই নয়, বরং সংবাদপত্র ও সাংবাদিকের স্বাধীনতারও পরিপন্থী।’

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও অন্যান্য সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, ৫ মে সুনামগঞ্জে এক সংসদ সদস্যকে নিয়ে ফেসবুকে মিথ্যাচার করার অভিযোগে সাংবাদিক মাহতাব উদ্দিন তালুকদারকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়। ১৮ এপ্রিল রাতে ঠাকুরগাঁওয়ের বারিয়াডাঙ্গি থানায় বালিয়াডাঙ্গি উপজেলা স্বেচ্ছাসেক লীগের সভাপতি মোমিনুল ইসলাম ভাসানী ত্রাণ বণ্টনে দুর্নীতি সংক্রান্ত সংবদ প্রকাশ করায় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।

৩০ এপ্রিল নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে স্থানীয় দৈনিক গ্রামীণ দর্পণ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক রমজান আলী প্রামাণিক ও একই প্রত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত বনিক এবং অনলাইন পোর্টাল নরসিংদী প্রতিদিনের প্রকাশক ও সম্পাদক খন্দকার শাহীনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত ৯ মার্চ রাতে মাগুরা-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর মানহানির অভিযোগ করে নিজে বাদী হয়ে শেরেবাংলা থানায় দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছিলেন, যে মামলায় নিজের ফেসবুক আইডিতে প্রকাশিত একই খবর শেয়ার করায় সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকেও আসামি করা হয়। শফিকুল ইসলাম কাজল ৫৪ দিন নিখোঁজ থাকার পর উদ্ধার হয়েছেন এবং ৫৪ ধারায় মামলা দেখিয়ে যশোর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে ৫ মে সন্ধ্যায় ঢাকা বাড্ডা এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ নামক একটি সংগঠনের সদস্য দিদারুলকে র‌্যাব পরিচয়ে কিছু ব্যক্তি তুলে নিয়ে যায় বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। দিদারুল ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ পরিচালিত করোনাভাইরাস ত্রাণ মনিটরিং কমিটির সদস্য হিসেবে সরকারি ত্রাণ কার্যক্রম পর্যালোচনা করছিলেন এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন বলে তার পরিবার থেকে বলা হয়েছে।”

পিডি/এমএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।