করোনা : বিকল্প উপায়ে পরীক্ষা চান হবু চিকিৎসকরা
করোনা মহামারিতে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো মেডিকেল কলেজ বন্ধ থাকলেও এই দুঃসময়ে চিকিৎসক তৈরির জন্য বিকল্প উপায়ে পরীক্ষা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন হবু চিকিৎসকরা।
এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তারা এ দাবির কথা জানান।
দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মো. দেলোয়ার হোসেন কাজল বলেন, ‘মে ২০২০ এর পেশাগত পরীক্ষাটি মূলত গত নভেম্বররে হওয়া ফাইনালের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা। অন্য উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থার তুলনায় কম ছুটি, বেশি ক্লাস এবং ৬ মাস অন্তর নিয়মিত পরীক্ষার মাধ্যমে কৃতকার্যদের চিকিৎসক হওয়ার এ ধারা গত কয়েক বছর ধরে মেডিকেল শিক্ষাব্যবস্থাকে রেখেছে সেশনজটবিহীন এবং হাসপাতালে রোগীদের সেবা প্রদানকে রেখেছে নিরবচ্ছিন্ন। এখন ঠিক সময়ে পরীক্ষা না হলে রোগীদের সবচেয়ে দুঃসময়ে চিকিৎসক তৈরির এ ধারা ব্যাহত হবে। হাসপাতালগুলোতে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের সংকট হতে পারে।'
কিন্তু ঝুঁকি নিয়ে পরীক্ষা নেয়ার উপায় কী? সরকার যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে চাচ্ছে সেখানে পরীক্ষার কারণে কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তার দায় কে নেবে? এমন প্রশ্নে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান বলেন, সব হাসপাতালই খোলা আছে রোগীদের সেবায়। আমাদের শিক্ষকরাই সেখানে গিয়ে নিয়মিত রোগী দেখছেন। তাহলে বিকল্প উপায়ে আমাদের পরীক্ষা কেন নয়?
তিনি আরও বলেন, পিছিয়ে পড়া ঠেকাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেজ-এ ব্লক পরীক্ষায় মৌখিক বাতিল করে বিশেষ ব্যবস্থায় শুধু লিখিত নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেশনজট ঠেকাতে সেমিস্টার পরীক্ষা বাতিল করে শুধু গত পারফরম্যান্সের সমন্বয় করে উত্তীর্ণ করার ব্যবস্থা করেছে। শর্তসাপেক্ষে স্কুলগুলো খুলে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাহলে আমাদের জন্য কেন বিকল্প উপায়ে পরীক্ষা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে না?
খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী অনিক দত্তের মতে, ফাইনাল সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার ওপর নির্ভর করে বিসিএস, পোস্ট গ্রাজুয়েশনসহ বেশ কয়েকটি পরীক্ষা। এখন আমাদের সেই পরীক্ষা নেয়ায় এতো বিলম্ব হলে পরবর্তী ব্যাচের সাথে দূরত্ব রাখা দূরূহ হয়ে পড়বে। নষ্ট হবে মেডিকেলের স্বাভাবিক ধারা। ওদিকে বিগত বছরগুলোর ফাইনাল সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার যোগদানের তারিখ অনুসারে তাদের ট্রেনিং সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় সামনেই ইন্টার্ন সংকট দেখা দেবে প্রকট।
অচলাবস্থা নিরসনে তিন দফা প্রস্তাবনা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সাকিল সালমান সাইফুল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের ঐকমত্য তথা বিএমডিসির (বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল) সার্বিক সহায়তায় অনতিবিলম্বে এমবিবিএস ফাইনাল প্রফ অনুষ্ঠিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ, চলমান করোনা সংকটে পরীক্ষার্থীদের ঝুঁকিমুক্ত রাখতে প্রয়োজনে পরীক্ষা পদ্ধতি সংস্করণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদন সংক্রান্ত জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতা সমাধানে আপাতত মেডিকেলের কলেজের তত্ত্বাবধায়নে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কেএইচ/জেডএ/এমকেএইচ