গফফার দম্পতিকে ‘স্বপ্ন কুটির’ উপহার
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে লকডাউন পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষ। কর্মহীন দিন কাটছিল ৭০ বছর বয়সী দিনমজুর আব্দুল গফফারেরও। ৬৫ বছর বয়সী স্ত্রী জাহিমাকে নিয়ে তার বাঁচার লড়াই। বাড়ি নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের বাগডোকরা গ্রামে। লকডাউনের শুরুতে পাটশাক খেয়ে পার করেছেন কয়েকটি দিন।
এমন পরিস্থিতিতে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিল ঝড়। গত এপ্রিল মাসের প্রথমে ঝড়ে ভেঙে যায় নিঃসন্তান এই দম্পতির একমাত্র ছনের ঘর। খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছিলেন কয়েক দিন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় এলে স্থানীয়রা বয়স্ক এ দম্পতির এক মাসের খাবারের ব্যবস্থা করেন এবং দুই বান টিন কিনে ঘরটি মেরামত করে দেন।

আব্দুল গফফারের জীবনে ৭০ বছর পেরিয়ে গেলেও তার পক্ষে একটি স্থায়ী ঘর বানানো সম্ভব হয়নি। তাই এই দম্পতির কাছে স্থায়ী ঘর যেন স্বপ্নের মতো হয়েছিল এতো দিন। তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছে ভোক্তা অধিকার সংস্থা ‘কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি’র (সিসিএস) স্বেচ্ছাসেবীরা। ‘স্বপ্ন কুটির’ নামে একটি স্থায়ী ঘর করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে তারা।
আধা পাকা ‘স্বপ্ন কুটির’ নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে সংস্থাটির একজন স্বেচ্ছাসেবক (আর্কিটেকচার) নকশা তৈরি করেছেন। স্থানীয় মিস্ত্রি দিয়ে নকশা অনুযায়ী সম্ভাব্য খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে। মোট খরচ হবে ৯৮ হাজার ৩৫০ টাকা। পরিবারটির জন্য একটি টিউবওয়েল ও একটি বাথরুমও নির্মাণ করে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সিসিএস স্বেচ্ছাসেবীদের।

এ ঘর নির্মাণে অর্থ সংগ্রহের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সিসিএসের অফিসিয়াল পেজে এক পোস্ট দেয়া হয়েছে। পোস্টে ঘরের নকশা ও খরচের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।
বিত্তবানদের কাছে সহায়তা চেয়ে শুক্রবার (১৫ মে) বিকেলে ওই পোস্ট করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অর্ধেক টাকার জোগাড় হয়েছে। পোস্টে অর্থ সংগ্রহের তথ্য ও হিসাবও নিয়মিত আপডেট করা হচ্ছে।

সিসিএসের নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ জানান, যারা সহায়তা করছেন তাদের বেশিরভাগই স্বেচ্ছাসেবী, আবার নিজেরাই ডোনার। সিসিএসের স্বেচ্ছাসেবীরা ছাড়াও অনেকেই অর্থ সহায়তা করছেন। কয়েকজন প্রবাসীও সহায়তা করেছেন। সিসিএসের ওয়েবসাইটে গিয়ে ডোনেট অপশনে অনুদান দেয়া যাবে। অথবা হটলাইন ০১৯৭৭৪৫৩৬৫৩ নম্বরে যোগাযোগ করে বা ওই নম্বরে বিকাশ ও নগদ এবং 2776 নম্বরে রকেট থেকে (সবগুলো মার্চেন্ট) পেমেন্ট করে অনুদান দেয়া যাবে।
এফএইচ/এইচএ/জেআইএম